সেদিন কেউ কারও জন্য এগিয়ে আসবে না—বাকারাহ ৪৭-৪৮

এই আয়াতে আল্লাহ تعالى আমাদেরকে ‘ক্রিমিনাল সাইকোলজি’ সম্পর্কে শিখিয়েছেন। একজন অপরাধী চারভাবে তার অপরাধের শাস্তি থেকে বাঁচার চেষ্টা করে, যেগুলো কিয়ামাতের দিন কোনোই কাজে আসবে না—

2_48

সাবধান সেই দিনের ব্যাপারে: যেদিন কেউ অন্য কারও জন্য একটুও এগিয়ে আসবে না, কারও সুপারিশ গ্রহণ করা হবে না, কোনো বিনিময় নেওয়া হবে না—সেদিন কেউ কারও সাহায্য পাবে না। [বাকারাহ ৪৮]

Drowning victim

প্রথমে সে চেষ্টা করে তার দোষকে অন্য কারও ঘাড়ে চাপানোর। সে প্রমাণ করে দেখানোর চেষ্টা করে যে, আসলে অপরাধটা সে করেনি, অন্য কেউ করেছে। যেমন, “আমি তো ইচ্ছা করে ঘুষ খাইনি! ওরা আমাকে সেধে একটা ফ্লাট দিয়েছিল দেখেই তো আমি ওদেরকে প্রজেক্টের কন্ট্রাক্টটা দিয়েছিলাম। ওরা আমাকে ফ্লাট দিলো কেন? এটা ওদের দোষ!” যদি এতে কাজ না হয়, তখন সে যুক্তি দেখানোর চেষ্টা করে যে, আসলে সে অপরাধ করতে বাধ্য হয়েছিল অন্য কারও জন্য: “আমি তো ইচ্ছা করে হাতাকাটা ব্লাউজ, আর ফিনফিনে পাতলা শাড়ি পরে বিয়েতে যাইনি। আমি যদি হিজাব করে বিয়েতে যেতাম, তাহলে আমার স্বামীকে সবাই ‘মোল্লা-তালেবান-ব্যাকডেটেড’ বলত। ওর জন্যই তো আমি স্মার্টভাবে সেজে বিয়েতে যেতে বাধ্য হয়েছি। এতে আমার তো কোনো দোষ নেই? দোষ হচ্ছে সমাজের!” এধরনের চেষ্টা করে কোনো লাভ নেই, কারণ: “সেদিন কেউ অন্য কারও জন্য একটুও এগিয়ে আসবে না।”  (আর্টিকেলের বাকিটুকু পড়ুন)

একদিন তাদের প্রভুর সাথে দেখা হবেই — বাকারাহ ৪৫-৪৬

বাকারাহ-এর এই আয়াত দুটিতে আল্লাহ تعالى আমাদেরকে জীবনের সকল বিপদ-আপদ, দুঃখ, হতাশাকে হাসিমুখে পার করার জন্য এক বিরাট মন্ত্র শিখিয়ে দিয়েছেন—

2_45-46

ধৈর্য-নিষ্ঠার সাথে চেষ্টা করে নামাযে সাহায্য চাও, যদিও এটা করা খুবই কঠিন, তবে তাদের জন্য কঠিন নয়, যাদের অন্তরে স্থিরতা-নম্রতা রয়েছে—যারা মনে প্রাণে বিশ্বাস করে যে, একদিন তাদের প্রভুর সাথে দেখা হবেই। [বাকারাহ ৪৫-৪৬]

আমাদের জীবনে যখন কোনো বড় বিপদ আসে, কষ্টে চারিদিকে অন্ধকার দেখতে থাকি, তখন মুরব্বিদেরকে বলতে শোনা যায়, “সবর করো, সব ঠিক হয়ে যাবে।” দেশে-বিদেশে মুসলিমদেরকে মেরে শেষ করে ফেলা হচ্ছে, কু’রআন পোড়ানো হচ্ছে, রাস্তাঘাটে টুপি-দাঁড়িওলা কাউকে দেখলে পেটানো হচ্ছে, আর মসজিদের ইমামদেরকে জুম্মার খুতবায় বলতে শোনা যাচ্ছে, “সবর করেন ভাই সাহেবরা। সব ঠিক হয়ে যাবে। ইসলামের বিজয় নিকটেই—ইন শাআ আল্লাহ।” ব্যাপারটা এমন যে, আমরা ধৈর্য নিয়ে চুপচাপ বসে থেকে শুধু নামায পড়লেই আল্লাহ تعالى আমাদের হয়ে আমাদের সব সমস্যার সমাধান করে দিবেন। এই অত্যন্ত প্রচলিত ভুল ধারণাগুলোর মূল কারণ হচ্ছে ‘সবর’ শব্দের অর্থ ঠিকমত না জানা এবং কু’রআনের এই আয়াতে ব্যবহৃত বিশেষ কিছু শব্দের অর্থগুলো ঠিকমত না বোঝা।

  (আর্টিকেলের বাকিটুকু পড়ুন)

কীভাবে তোমরা অন্যদেরকে ভালো কাজ করতে বলো, যখন তোমরা নিজেরাই সেটা করো না? — বাকারাহ ৪৩-৪৪

বাকারাহতে এই কয়েকটি আয়াতে আল্লাহ تعالى আমাদের বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ উপদেশ দেবেন—

2_43

দৃঢ়ভাবে নামায প্রতিষ্ঠা করো, যাকাত আদায় করো, আর যারা নামাযে নত হয় (রুকু), তাদের সাথে নত হও। [বাকারাহ ৪৩]

Screen Shot 2013-09-26 at 21.53.43দেখুন, আল্লাহ تعالى কিন্তু এখানে বলেননি, “নামায পড়ো”, বরং তিনি বলেছেন, “নামায প্রতিষ্ঠা করো।” أَقِيمُوا۟ এসেছে قوم (কু’মু) থেকে যার অর্থ দাঁড়ানো, প্রতিষ্ঠা করা।

প্রাচীন আরবরা যখন কোনো শক্ত পিলার স্থাপন করত, বা শক্ত দেয়াল তৈরি করত, তার জন্য তারা কু’মু শব্দটি ব্যবহার করত। এখানে কু’মু ব্যবহার করে আল্লাহ تعالى আমাদেরকে বলছেন যে, আমাদের প্রতিদিনের রুটিনের মধ্যে পাঁচটি শক্ত পিলার দাঁড় করাতে হবে। এবং সেই পিলারগুলো কোনোভাবেই নাড়ানো যাবে না। আমাদের পড়ালেখা, কাজ, খাওয়া, বিনোদন, ঘুম—সবকিছু এই পিলারগুলোর আশপাশ দিয়ে যাবে। আমাদের দৈনন্দিন রুটিনে নামায তার জায়গায় ঠিক ভাবে দাঁড়িয়ে থাকবে, কোনোভাবেই তাদেরকে নড়ানো যাবে না।[১]  (আর্টিকেলের বাকিটুকু পড়ুন)

আমার বাণীকে সামান্য কিছুর জন্য বেচে দিবে না —বাকারাহ ৪১, ৪২, ২১৯

2_41

তোমাদের কাছে যা ইতিমধ্যে আছে, তাকে সমর্থন করে আমি এখন যা অবতীর্ণ করেছি, তাতে তোমরা বিশ্বাস করো। আর যারা একে অবিশ্বাস করে, তাদের মধ্যে তোমরা সবার প্রথম হয়ো না। আমার বাণীকে সামান্য কিছুর জন্য বেচে দিবে না। আর আমাকে নিয়ে, শুধুই আমাকে নিয়ে সবসময় সাবধান থাকো। [বাকারাহ ৪১]

corruption13ইসলাম কোনো নতুন ধর্ম নয়। অনেকে মনে করেন, ইসলাম হচ্ছে শেষ নবী মুহাম্মাদ عليه السلام প্রচারিত নতুন একটি ধর্ম। এটি একটি ভুল ধারণা। ইব্রাহিম, ইয়াকুব, মুসা, ঈসা, মুহাম্মাদ (আল্লাহ تعالى তাদের সবার উপরে শান্তি দিন) — সবাই একই ধর্ম প্রচার করে গেছেন–ইসলাম।[৬] ইসলাম শব্দের অর্থ: আল্লাহর تعالى ইচ্ছার কাছে নিজেকে পুরোপুরি আত্মসমর্পণ করা। যার মানে হচ্ছে: আমার একটা নতুন গাড়ি কিনে পাড়া প্রতিবেশীদেরকে দেখানোর জন্য জান বের হয়ে যাচ্ছে, কিন্তু এর জন্য ব্যাংকের হারাম লোণ নিতে হবে—আমি নিবো না। কারণ আমি ইসলাম ধর্ম মানি, আমি একজন মুসলিম। আমার এখন একটা জরুরি মিটিং চলছে, কিন্তু এদিকে যুহরের সময় পার হয়ে যাচ্ছে। আমি মিটিং থেকে বের হয়ে নামায পড়ে নিবো, কে কী মনে করল তাতে কিছু যায় আসে না, কারণ আমি মুসলিম—আমি অন্যের ইচ্ছা থেকে আল্লাহর تعالى ইচ্ছাকে বড় মনে করি। আমার সন্তানের বিয়েতে ব্যান্ড এনে গান বাজনা করে, ছেলেমেয়ে সব একসাথে মাখামাখি করে, গাঁয়ে-হলুদ, বউভাত, মেয়ে পক্ষের রিসিপ্সন, ছেলের পক্ষের  রিসিপ্সন—এরকম সাত দিন অনুষ্ঠান করে বিয়ে দেওয়ার জন্য আত্মীয়স্বজন থেকে শুরু করে এমনকি নিজের পরিবারের অনেক সদস্য পর্যন্ত হুমকি দিচ্ছে—কিন্তু না, আমি সেভাবে বিয়ে দিবো না। আমার সন্তানের বিয়ে হবে একজন মুসলমানের মতো ইসলামের সুন্দর রীতি অনুসারে একটি মসজিদে গিয়ে, একটি হালাল অনুষ্ঠান করে—হিন্দু-খ্রিস্টানদের বিয়ের আপত্তিকর রীতিনীতির ছিটেফোঁটাও অনুসরণ না করে। আমি কখনই অল্প কিছু লোককে দেখানোর জন্য আল্লাহর تعالى বাণীকে বেচে দিবো না।  (আর্টিকেলের বাকিটুকু পড়ুন)

মনে পড়ে আমার অনুগ্রহের কথা? —বাকারাহ ৪০

আল্লাহ تعالى এর আগের আয়াতে একদল অকৃতজ্ঞ মানুষের কথা বলছিলেন, আর এই আয়াতেই শুরু হলো– ‘ইয়া বনী ইসরাইল! …’:

2_40

ইসরাইলের বংশধরেরা, আমি তোমাদেরকে যে অনুগ্রহ করেছিলাম, সেগুলো মনে করো, আর আমার প্রতি যে অঙ্গীকার করেছিলে, সেগুলো পূরণ করো। তাহলে আমি তোমাদের প্রতি আমার অঙ্গীকার পূরণ করব। আর আমাকে–শুধুই আমাকে ভয় করো। [বাকারাহ ৪০]

pyramid

কু’রআন পড়ার সময় আমরা যখন বনী ইসরাইল বা ইসরাইলের বংশধরদের কথা পড়ি, তখন ভাবি, “আরে, ওই ইহুদিরা কি খারাপটাই না ছিল। আল্লাহ কতবার ওদেরকে বাঁচিয়েছিলেন, তারপরেও ওরা কত খারাপ কাজ করতো। মুসা عليه السلام নবীকে কী কষ্টটাই না দিয়েছিল। ওদের থেকে আমরা কত ভালো জাতি।”

আসলেই কি তাই?  (আর্টিকেলের বাকিটুকু পড়ুন)

এই গাছের ধারে কাছেও যাবে না — বাকারাহ ৩৫-৩৯

মানুষ তার জীবনের প্রথম এবং সবচেয়ে বড় ভুলটা করতে যাচ্ছে। ক্ষমতা এবং অনন্ত সুখের লোভ সামলাতে না পেরে, সে মহান আল্লাহর تعالى নিষেধকে ভুলে গিয়ে প্রমাণ করতে যাচ্ছে যে, সে আসলে কত দুর্বল এবং কত সহজে সে শয়তানের ফাঁদে পা দিয়ে নিজের এবং অন্যের সর্বনাশ ডেকে আনে—

2_35

‘আমি’ বলেছিলাম, “আদম, তুমি এবং তোমার সঙ্গিনী/স্ত্রী বাগানে শান্তিতে বসবাস করো এবং তোমরা দুজনে এখান থেকে নিঃসংকোচে খাও, যেখান থেকে তোমরা চাও। কিন্তু কখনও এই গাছের কাছেও যাবে না, যাতে করে তোমরা অবাধ্য/সীমালঙ্ঘনকারী হয়ে না যাও।” [বাকারাহ ৩৫]

riverside_garden

আল্লাহ تعالى এখানে আদমকে عليه السلام  বলেননি, “এই গাছের ফল খাবে না।” তিনি বলেছেন, “এই গাছের কাছেও যাবে না।” কেন তিনি গাছটার কাছেই যেতে মানা করেছিলেন?  (আর্টিকেলের বাকিটুকু পড়ুন)

সে অস্বীকার করেছিল, অহংকার করেছিল — বাকারাহ ৩৪

ইতিহাসের সবচেয়ে রহস্যজনক ঘটনাগুলোর একটি ঘটতে যাচ্ছে। কিছুক্ষণের মধ্যেই আমাদের সবচেয়ে বড় শত্রু আত্মপ্রকাশ করবে। সে এমন এক শত্রু, যে আমাদের জীবনে প্রতি মুহূর্তের সঙ্গী হয়ে, আমাদেরকে দিয়ে এমন কোনো খারাপ কাজ নেই, যা করাবে না। আদম (আ) কিছুক্ষণ আগে তার ক্ষমতার প্রদর্শনী করে প্রমাণ করে দিলেন: মানুষ ফেরেশতাদের থেকে কিছু ব্যাপারে বেশি ক্ষমতাবান, যার কারণে মহান আল্লাহ تعالى মানুষকেই পৃথিবীতে খালিফা হিসেবে পাঠাবেন, ফেরেশতাদেরকে নয়। ফেরেশতারা আদম (আ)-এর ক্ষমতায় অভিভূত হয়ে মেনে নিয়েছে যে, আল্লাহ تعالى নিঃসন্দেহে একজন যোগ্য প্রার্থীকে এই গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দিতে যাচ্ছেন। তখন তারা আল্লাহর تعالى নির্দেশ পাওয়া মাত্র আদম (আ) এর সামনে সমর্পণ করল, একজন বাদে—  (আর্টিকেলের বাকিটুকু পড়ুন)

আমি পৃথিবীতে একজন প্রতিনিধি নিযুক্ত করতে যাচ্ছি — বাকারাহ ৩০-৩৩

সন্মানিত ফেরেশতারা অপেক্ষা করছেন এক বিরাট ঘোষণার জন্য। সম্ভবত সৃষ্টিজগতের ইতিহাসের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাটি ঘটতে যাচ্ছে। আল্লাহ تعالى তাঁর এক নতুন সৃষ্টির ব্যাপারে তাদেরকে জানাতে যাচ্ছেন, যে কিনা সৃষ্টি জগতের সর্বশ্রেষ্ঠ সৃষ্টি হতে যাচ্ছে! তিনি ফেরেশতাদের সমাবেশকে উদ্দেশ্য করে বললেন—

2_30

যখন তোমার প্রভু ফেরেশতাদেরকে বলেছিলেন, “আমি পৃথিবীতে একজন প্রতিনিধি নিযুক্ত করতে যাচ্ছি।” ফেরেশতারা জিজ্ঞেস করেছিল, “আপনি কি এর মধ্যে (পৃথিবীতে) এমন একজনকে নিযুক্ত করবেন, যে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করবে এবং রক্তপাত ঘটাবে, যেখানে কিনা আমরা আপনার পবিত্রতাকে প্রশংসা ভরে বর্ণনা করছি এবং আপনার নিষ্কলুষতাকে ঘোষণা করছি?” তিনি বলেছিলেন, “আমি যা জানি, তোমরা তা জানো না।” [বাকারাহ ৩০]

  (আর্টিকেলের বাকিটুকু পড়ুন)

পৃথিবীতে সবকিছু আমাদের জন্য বানানো হয়েছে — বাকারাহ ২৯

2_29

তিনি পৃথিবীতে যা আছে, তার সব কিছু সৃষ্টি করেছেন তোমাদের জন্যই। তারপর তিনি নির্দেশ করেছিলেন আকাশের প্রতি এবং তাদেরকে সাতটি/অনেক আকাশে গঠন করেছেন। আর একমাত্র তিনিই সবকিছুর ব্যাপারে সব জানেন। [বাকারাহ ২৯]

নাস্তিকরা প্রশ্ন করে: পৃথিবী যদি সত্যিই মানুষের জন্য বানানো হতো, তাহলে পৃথিবীতে তেলাপোকা, মশা-মাছি, সাপ, বাঘ, কুমির এতো সব ভয়ংকর প্রাণী কেন? পৃথিবীর ৭০% ভাগ জায়গা সমুদ্রের পানি, তাও আবার পান করা যায় না এমন নোনা পানি কেন? পৃথিবীতে অল্প যা ভুমি আছে, তার আবার ২৭% বসবাসের অযোগ্য পাহাড়-পর্বত কেন? আমাদের থাকার জন্য পুরো পৃথিবী সমতল ভুমি হলো না কেন? সত্যিই যদি কোনো করুণাময় সৃষ্টিকর্তা থাকে, তাহলে প্রতি বছর ভুমিকম্প হয় কেন? পৃথিবী দেখে তো মনে হয় না এটা আসলে মানুষের জন্য বানানো হয়েছে। বরং মনে হয় মানুষ কোনোভাবে সংগ্রাম করে পৃথিবীতে টিকে আছে।  (আর্টিকেলের বাকিটুকু পড়ুন)

একসময় তোমরা ছিলে নিষ্প্রাণ, তারপর তিনি তোমাদের প্রাণ দিয়েছিলেন — বাকারাহ ২৮

2_28

কেমন করে তোমরা আল্লাহকে অস্বীকার/অবিশ্বাস করো [অকৃতজ্ঞ হও]? অথচ একসময় তোমরা ছিলে নিষ্প্রাণ, তারপর তিনি তোমাদের প্রাণ দিয়েছিলেন। এরপর তিনি তোমাদের মৃত্যু ঘটাবেন, তারপর আবার তিনি তোমাদের প্রাণ দিবেন এবং সবশেষে তাঁর কাছেই তোমাদের ফিরে যেতে হবে। [বাকারাহ ২৮]

আল্লাহ تعالى এখানে ঠিক দুইবার নিষ্প্রাণ এবং দুইবার প্রাণ পাবার কথা বলেছেন। প্রথমে আমরা ছিলাম أَمْوَٰتًا —যার অর্থ হয় দুটি—মৃত বা প্রাণহীন।[৫] প্রথমবার নিষ্প্রাণ বলতে আল্লাহ تعالى মানুষের দেহ তৈরির জন্য যা কাঁচামাল দরকার, তার কথা বলেছেন। কারণ চিন্তা করলে দেখা যায়: পৃথিবীতে যত মানুষ এসেছে এবং আসবে তাদের সবার জন্য যে কাঁচামাল দরকার, তা পৃথিবীতেই ছড়িয়ে আছে নিষ্প্রাণ অবস্থায়। আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম নিষ্প্রাণ কাঁচামাল অবস্থায় এখনই মহাবিশ্বে ছড়িয়ে আছে।[৪] মানুষের দেহ তৈরির জন্য দরকার ৬০% অক্সিজেন, ১৮% কার্বন, ১০% হাইড্রোজেন, ৩% নাইট্রোজেন, ১.৫% ক্যালশিয়াম, ১.০%ফসফরাস, আর অল্প কিছু অন্যান্য মৌলিক পদার্থ। ভবিষ্যতে যত মানুষ জন্মাবে, তাদের জন্য এই সমস্ত মৌলিক পদার্থ মহাবিশ্বে এখনই ছড়িয়ে আছে, আল্লাহর تعالى নির্দেশের অপেক্ষায়। আল্লাহর تعالى নির্দেশ পেলেই এই নিষ্প্রাণ কাঁচামালগুলো একসাথে হয়ে একটি মানব শিশুর দেহ তৈরি করা শুরু করে দেবে এবং একসময় আল্লাহ تعالى তার মধ্যে প্রাণ দিয়ে দেবেন।  (আর্টিকেলের বাকিটুকু পড়ুন)