কীভাবে আল্লাহ একে আবার জীবিত করবেন, যেখানে কিনা তা মৃত? — আল-বাক্বারাহ ২৫৯-২৬০

অথবা তাকে দেখেছ, যে ধ্বসে যাওয়া এক জনবসতির পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় বলেছিল,  “কীভাবে আল্লাহ একে আবার জীবিত করবেন, যেখানে কিনা তা মৃত?” তখন আল্লাহ তাকে একশ বছর মৃত রাখলেন, তারপর তাকে আবার বাঁচিয়ে তুলে বললেন, “তুমি কতদিন এভাবে ছিলে?” সে উত্তর দিলো, “একদিন বা এক দিনের কিছু অংশ।” আল্লাহ বললেন, “না, বরং তুমি এভাবে একশ বছর ছিলে। তোমার খাবার এবং পানীয়ের দিকে তাকাও। সেগুলো পচেনি। এবার তোমার গাধার দিকে তাকাও —আমি তোমাকে মানুষের জন্য এক নিদর্শন করে দেব — হাড্ডিগুলোর দিকে তাকাও, দেখো কীভাবে আমি সেগুলোকে একসাথে করি, মাংস দিয়ে আবৃত করি।” তারপর যখন তাকে পরিষ্কার করে দেখানো হলো, সে বলল, “আমি জানি আল্লাহ সবকিছুর উপরে সব ক্ষমতা রাখেন।” [আল-বাক্বারাহ ২৫৯]

প্রেক্ষাপট

একবার একজন নবী, যার সাথে আল্লাহ تعالى যোগাযোগ করেছিলেন, তিনি এক মৃত জনবসতির ধ্বংসস্তূপ দেখে ভাবছিলেন যে, কীভাবে আল্লাহ تعالى এই সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে যাওয়া জনবসতিকে আবার প্রাণ দেবেন? তখন আল্লাহ تعالى তাকে একশ বছর মৃত রেখে, আবার জীবিত করে দেখিয়ে দিলেন। একই সাথে তার যেন কোনো সন্দেহ না থাকে, সেজন্য তিনি تعالى তার চোখের সামনে তার সাথের গাধার (বা তার) মৃত পচে যাওয়া দেহকে আবার জীবিত করে দেখিয়ে দিলেন।[১২][১৪]

এই আয়াত থেকে এবং এর পরের আয়াত থেকে আমরা দেখবো, নবীরা, যারা কিনা আল্লাহর تعالى প্রতি সবচেয়ে দৃঢ় বিশ্বাস রাখেন, তারাও মাঝে মধ্যে গায়েবে বিশ্বাস নিয়ে কৌতূহল প্রকাশ করেন। তাদেরও জানতে ইচ্ছে করে আল্লাহ تعالى কীভাবে অলৌকিক ঘটনা ঘটান, কীভাবে তিনি تعالى মৃতকে জীবিত করেন। সুতরাং এথেকে আমরা শিক্ষা পাই যে, আল্লাহর تعالى ক্ষমতা বা আল্লাহ تعالى কীভাবে আমাদের দৃষ্টিতে অলৌকিক ঘটনা ঘটাবেন, সেটা জানতে চাওয়াটা দোষের না। মানুষের কৌতূহল থাকবেই। আল্লাহ تعالى মানুষকে কৌতূহল দিয়ে সৃষ্টি করেছেন। এই কৌতূহলই মানুষকে জ্ঞান অর্জন করতে, প্রযুক্তি তৈরি করতে তাড়না দেয়। কৌতূহল না থাকলে মানুষ বুদ্ধিমান প্রাণী হতে পারত না। সুতরাং কৌতূহল সমস্যা না। তবে সমস্যা হচ্ছে অহেতুক কৌতূহল এবং কৌতূহল মেটাতে না পারলে আল্লাহর تعال ক্ষমতায় অবিশ্বাস করা।  (আর্টিকেলের বাকিটুকু পড়ুন)

একসময় তোমরা ছিলে নিষ্প্রাণ, তারপর তিনি তোমাদের প্রাণ দিয়েছিলেন — বাকারাহ ২৮

2_28

কেমন করে তোমরা আল্লাহকে অস্বীকার/অবিশ্বাস করো [অকৃতজ্ঞ হও]? অথচ একসময় তোমরা ছিলে নিষ্প্রাণ, তারপর তিনি তোমাদের প্রাণ দিয়েছিলেন। এরপর তিনি তোমাদের মৃত্যু ঘটাবেন, তারপর আবার তিনি তোমাদের প্রাণ দিবেন এবং সবশেষে তাঁর কাছেই তোমাদের ফিরে যেতে হবে। [বাকারাহ ২৮]

আল্লাহ تعالى এখানে ঠিক দুইবার নিষ্প্রাণ এবং দুইবার প্রাণ পাবার কথা বলেছেন। প্রথমে আমরা ছিলাম أَمْوَٰتًا —যার অর্থ হয় দুটি—মৃত বা প্রাণহীন।[৫] প্রথমবার নিষ্প্রাণ বলতে আল্লাহ تعالى মানুষের দেহ তৈরির জন্য যা কাঁচামাল দরকার, তার কথা বলেছেন। কারণ চিন্তা করলে দেখা যায়: পৃথিবীতে যত মানুষ এসেছে এবং আসবে তাদের সবার জন্য যে কাঁচামাল দরকার, তা পৃথিবীতেই ছড়িয়ে আছে নিষ্প্রাণ অবস্থায়। আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম নিষ্প্রাণ কাঁচামাল অবস্থায় এখনই মহাবিশ্বে ছড়িয়ে আছে।[৪] মানুষের দেহ তৈরির জন্য দরকার ৬০% অক্সিজেন, ১৮% কার্বন, ১০% হাইড্রোজেন, ৩% নাইট্রোজেন, ১.৫% ক্যালশিয়াম, ১.০%ফসফরাস, আর অল্প কিছু অন্যান্য মৌলিক পদার্থ। ভবিষ্যতে যত মানুষ জন্মাবে, তাদের জন্য এই সমস্ত মৌলিক পদার্থ মহাবিশ্বে এখনই ছড়িয়ে আছে, আল্লাহর تعالى নির্দেশের অপেক্ষায়। আল্লাহর تعالى নির্দেশ পেলেই এই নিষ্প্রাণ কাঁচামালগুলো একসাথে হয়ে একটি মানব শিশুর দেহ তৈরি করা শুরু করে দেবে এবং একসময় আল্লাহ تعالى তার মধ্যে প্রাণ দিয়ে দেবেন।  (আর্টিকেলের বাকিটুকু পড়ুন)