যারা জ্বিন এবং মানুষ — আন-নাস

বলো, আমি আশ্রয় নেই মানুষের প্রতিপালক, মানুষের মালিক, মানুষের উপাস্যের কাছে। আত্মগোপনকারি প্ররোচকের প্ররোচনার অনিষ্ট থেকে। যে মানুষের ভেতরে প্রতিনিয়ত প্ররোচনা দেয়। যারা জ্বিন এবং মানুষ। [আন-নাস]

বলো, আমি আশ্রয় নেই মানুষের প্রতিপালক, মানুষের মালিক, মানুষের প্রভুর কাছে।

কেন বার বার ‘মানুষের’ বলা হলো?

এলাকার চেয়ারম্যান দাঁড়িয়ে যখন ভাষণ দেন, “ভাইসব, আমি আপনাদের শুভাকাঙ্ক্ষী। আমি আপনাদেরই প্রতিনিধি। আমি আপনাদেরই মনোনীত নেতা। …” —এই কাজটা তিনি করেন এলাকাবাসীকে বোঝানোর জন্য যে, এলাকাবাসীর প্রতি তার বিশেষ টান রয়েছে। তিনি সত্যিই চান এলাকার মানুষের জন্য ভালো কিছু করতে।

আল্লাহ تعالى যেন বার বার আমাদেরকে জানাচ্ছেন যে, মানুষের অবস্থার প্রতি তিনি উদ্বিগ্ন। তিনি تعالى মানুষকে আশ্রয় দেওয়ার জন্য সবসময় রয়েছেন। তিনি تعالى মানুষকে সযত্নে পালন করেন, কারণ তিনি মানুষের রব। তাঁর ক্ষমতা দিয়ে প্রতিরক্ষা দেন, কারণ তিনি মানুষের মালিক। তিনি আমাদেরকে কোনোদিন ফিরিয়ে দেবেন না, কারণ তিনি تعالى যে আমাদের ইলাহ, আমাদের উপাস্য, আমাদের প্রভু, যাকে আমরা সবচেয়ে বেশি চাই।[১]  (আর্টিকেলের বাকিটুকু পড়ুন)

সে শুধুই তোমাদেরকে জঘন্য এবং অনৈতিক কাজ করতে বলে — আল-বাক্বারাহ ১৬৯ পর্ব ২

2_160_part2_title

আল্লাহ যখন শয়তানকে তার সান্নিধ্য থেকে বের করে দিচ্ছিলেন, তখন শয়তান একটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ শপথ করেছিল, যা থেকে তার মানুষকে ধ্বংস করার অন্যতম একটি প্রধান পদ্ধতি সম্পর্কে জানা যায়—

(শয়তান বলল) “আমি মানুষের কাছে আসব ওদের সামনে থেকে, ওদের পেছন থেকে, ওদের ডান দিক থেকে এবং ওদের বাম দিক থেকে। আপনি দেখবেন ওরা বেশিরভাগই কৃতজ্ঞ না। [আল-আ’রাফ ৭:১৭]

কু’রআনে আল্লাহ প্রায় ৬০টি আয়াতে কৃতজ্ঞতার গুরুত্ব সম্পর্কে বলেছেন। এর মধ্যে একটি বিখ্যাত আয়াত হল—

মনে করে দেখো, তোমাদের প্রভু কথা দিয়েছিলেন, “যদি তোমরা কৃতজ্ঞ হও, তাহলে আমি অবশ্যই তোমাদেরকে আরও দিতেই থাকবো। কিন্তু যদি তোমরা অকৃতজ্ঞ হও…, আমার শাস্তি বড়ই কঠিন। [ইব্রাহিম ১৪:৭]

এখানে আল্লাহ تعالى আমাদেরকে কথা দিয়েছেন যে, যদি আমরা কৃতজ্ঞ হই, তাহলে আল্লাহ আমাদেরকে দিতেই থাকবেন। তিনি আরবিতে তিনবার জোর দিয়ে একথা বলেছেন, “যদি তোমরা কৃতজ্ঞ হও, তাহলে আমি তোমাদেরকে আরও দিতেই থাকবো, দিতেই থাকবো, দিতেই থাকবো।”[১]

নিশ্চয়ই শয়তান চাইবে না আপনি জীবনে আরও বেশি পান, আরও ভালো থাকেন। একারণে শয়তানের সবসময় চেষ্টা থাকে: কীভাবে আপনাকে অসুস্থ বিনোদনে বুঁদ করে রাখা যায়, যেই বিনোদন আপনাকে কখনই পরিতৃপ্তি দেয় না। কীভাবে আপনাকে ভুলিয়ে দেওয়া যায় যে, আল্লাহর تعالى অনুগ্রহে আপনি জীবনে কত কিছুই না পেয়েছেন।

কেন আল্লাহ تعالى আমাদেরকে কৃতজ্ঞ হতে বলেন? তাঁর তো আমাদের কাছ থেকে কিছুই পাওয়ার নেই। আমরা কৃতজ্ঞ হই আর না হই, তাতে তো তাঁর কোনো লাভ নেই। তাহলে কৃতজ্ঞ হয়ে কী লাভ?  (আর্টিকেলের বাকিটুকু পড়ুন)

এই গাছের ধারে কাছেও যাবে না — বাকারাহ ৩৫-৩৯

মানুষ তার জীবনের প্রথম এবং সবচেয়ে বড় ভুলটা করতে যাচ্ছে। ক্ষমতা এবং অনন্ত সুখের লোভ সামলাতে না পেরে, সে মহান আল্লাহর تعالى নিষেধকে ভুলে গিয়ে প্রমাণ করতে যাচ্ছে যে, সে আসলে কত দুর্বল এবং কত সহজে সে শয়তানের ফাঁদে পা দিয়ে নিজের এবং অন্যের সর্বনাশ ডেকে আনে—

2_35

‘আমি’ বলেছিলাম, “আদম, তুমি এবং তোমার সঙ্গিনী/স্ত্রী বাগানে শান্তিতে বসবাস করো এবং তোমরা দুজনে এখান থেকে নিঃসংকোচে খাও, যেখান থেকে তোমরা চাও। কিন্তু কখনও এই গাছের কাছেও যাবে না, যাতে করে তোমরা অবাধ্য/সীমালঙ্ঘনকারী হয়ে না যাও।” [বাকারাহ ৩৫]

riverside_garden

আল্লাহ تعالى এখানে আদমকে عليه السلام  বলেননি, “এই গাছের ফল খাবে না।” তিনি বলেছেন, “এই গাছের কাছেও যাবে না।” কেন তিনি গাছটার কাছেই যেতে মানা করেছিলেন?  (আর্টিকেলের বাকিটুকু পড়ুন)

সে অস্বীকার করেছিল, অহংকার করেছিল — বাকারাহ ৩৪

ইতিহাসের সবচেয়ে রহস্যজনক ঘটনাগুলোর একটি ঘটতে যাচ্ছে। কিছুক্ষণের মধ্যেই আমাদের সবচেয়ে বড় শত্রু আত্মপ্রকাশ করবে। সে এমন এক শত্রু, যে আমাদের জীবনে প্রতি মুহূর্তের সঙ্গী হয়ে, আমাদেরকে দিয়ে এমন কোনো খারাপ কাজ নেই, যা করাবে না। আদম (আ) কিছুক্ষণ আগে তার ক্ষমতার প্রদর্শনী করে প্রমাণ করে দিলেন: মানুষ ফেরেশতাদের থেকে কিছু ব্যাপারে বেশি ক্ষমতাবান, যার কারণে মহান আল্লাহ تعالى মানুষকেই পৃথিবীতে খালিফা হিসেবে পাঠাবেন, ফেরেশতাদেরকে নয়। ফেরেশতারা আদম (আ)-এর ক্ষমতায় অভিভূত হয়ে মেনে নিয়েছে যে, আল্লাহ تعالى নিঃসন্দেহে একজন যোগ্য প্রার্থীকে এই গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দিতে যাচ্ছেন। তখন তারা আল্লাহর تعالى নির্দেশ পাওয়া মাত্র আদম (আ) এর সামনে সমর্পণ করল, একজন বাদে—  (আর্টিকেলের বাকিটুকু পড়ুন)

আমি পৃথিবীতে একজন প্রতিনিধি নিযুক্ত করতে যাচ্ছি — বাকারাহ ৩০-৩৩

সন্মানিত ফেরেশতারা অপেক্ষা করছেন এক বিরাট ঘোষণার জন্য। সম্ভবত সৃষ্টিজগতের ইতিহাসের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাটি ঘটতে যাচ্ছে। আল্লাহ تعالى তাঁর এক নতুন সৃষ্টির ব্যাপারে তাদেরকে জানাতে যাচ্ছেন, যে কিনা সৃষ্টি জগতের সর্বশ্রেষ্ঠ সৃষ্টি হতে যাচ্ছে! তিনি ফেরেশতাদের সমাবেশকে উদ্দেশ্য করে বললেন—

2_30

যখন তোমার প্রভু ফেরেশতাদেরকে বলেছিলেন, “আমি পৃথিবীতে একজন প্রতিনিধি নিযুক্ত করতে যাচ্ছি।” ফেরেশতারা জিজ্ঞেস করেছিল, “আপনি কি এর মধ্যে (পৃথিবীতে) এমন একজনকে নিযুক্ত করবেন, যে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করবে এবং রক্তপাত ঘটাবে, যেখানে কিনা আমরা আপনার পবিত্রতাকে প্রশংসা ভরে বর্ণনা করছি এবং আপনার নিষ্কলুষতাকে ঘোষণা করছি?” তিনি বলেছিলেন, “আমি যা জানি, তোমরা তা জানো না।” [বাকারাহ ৩০]

  (আর্টিকেলের বাকিটুকু পড়ুন)