তোমার রবের পক্ষ থেকে পুরস্কার, এক যথার্থ উপহার —আন-নাবা

নিঃসন্দেহে আল্লাহর প্রতি সদাসতর্কদের জন্যই রয়েছে চূড়ান্ত সফলতা— বাগানের পর বাগান, আঙ্গুরের সমাহার, আকর্ষণীয় মানানসই জুটি, উপচে পড়া পানপাত্র। সেখানে তারা কোনো ধরনের ফালতু কথা বা মিথ্যা কথা শুনবে না —তোমার রবের পক্ষ থেকে পুরস্কার, এক যথার্থ উপহার। —আন-নাবা ৩১-৩৬

নিঃসন্দেহে আল্লাহর প্রতি সদাসতর্কদের জন্যই রয়েছে চূড়ান্ত সফলতা

আল্লাহ تعالى আছেন এবং তিনি আমাদের সব কাজ দেখছেন, সব কথা শুনছেন এবং সব চিন্তা বুঝতে পারছেন —এই ব্যাপারে যারা সদা-সতর্ক থাকে এবং তাঁর ভয়ে নিজের কথা-কাজ-চিন্তা নিয়ন্ত্রণ করে, তারাই হচ্ছেন মুত্তাকী অর্থাৎ তাকওয়াবান। শুধুমাত্র তাকওয়াবানদেরকে আল্লাহ تعالى নিশ্চয়তা দিয়েছেন চূড়ান্ত সফলতার।

কেন তাকওয়া এত গুরুত্বপূর্ণ? শুধু নামাজ, রোজা, হাজ্জ করলেই কি যথেষ্ট নয়?

তাকওয়া নেই এমন পাঁচ-ওয়াক্ত-নামাজী বাসায় এসে পরিবারের সাথে, কাজের লোকের সাথে, এমনকি নিজের সন্তানের সাথে দানবের মত আচরণ করে। তাকওয়া নেই এমন হাজ্জি ঘুষ খেয়ে হজ্জে যায় এবং হজ্জ থেকে ফিরে এসে আবার ঘুষ খায়। তাকওয়া নেই এমন দাড়িওয়ালা পণ্যে ভেজাল দেয়, কমদামী মাল বেশী দামে চালিয়ে দেয়, কাগজপত্রে মিথ্যা কথা লিখে অন্যায় সুবিধা নেয়, অফিসে লুকিয়ে ব্যক্তিগত কাজ করে, নামাজ পড়তে বের হয়ে আর সহজে কাজে ফেরত আসে না ইত্যাদি। —ধর্মীয় বেশভূষাধারী এই মানুষগুলোর স্বভাব এবং কাজের জন্য ইসলামের ব্যাপক ক্ষতি হয়ে যায়, কারণ এদেরকে দেখে অন্যেরা মনে করে যে, এটাই হচ্ছে ইসলাম ধর্মের শিক্ষা। ইসলামের সবচেয়ে বড় ক্ষতি তখন এরাই করে।

  (আর্টিকেলের বাকিটুকু পড়ুন)

আকাশকে খুলে দেওয়া হবে — আন-নাবা ১৭-৩০

চৌধুরী সাহেব স্বপরিবারে সমুদ্রের পাড়ে বেড়াতে এসেছেন। পাড়ে বসে তারা সমুদ্র উপভোগ করছিলেন, কিন্তু তার শিশু বাচ্চাটি এখন ক্ষুধায় কান্না শুরু করেছে। স্ত্রীকে নিয়ে উঠলেন নিরিবিলি একটা জায়গা খুঁজে বের করতে। তারা হেঁটে যাচ্ছিলেন, আর তখন এক ভীষণ শব্দে কানে তালা লেগে গেলো। তারপর পায়ের নিচে মাটি ভীষণ জোরে ঝাঁকুনি দিলো। তিনি দূরে ছিটকে পড়ে গেলেন। 

উপরে তাকিয়ে দেখলেন আকাশটা যেন গোলাপের মত লাল হয়ে আছে। মনে হচ্ছে, আকাশটাকে পৃথিবীর উপর থেকে ছিঁড়ে তুলে ফেলা হয়েছে। মহাকাশ খালি চোখে দেখা যাচ্ছে। আর পুরো মহাকাশে অজস্র ফাটল তৈরি হচ্ছে। তারাগুলো একে একে ঝরে যাচ্ছে। সূর্যকে কালো একটা কী যেন ঘিরে ফেলছে। দিনের বেলাতেও রাতের মত অন্ধকার হয়ে যাচ্ছে। চাঁদের শেষ আলোটুকুও একসময় নিভে গেলো। 

  (আর্টিকেলের বাকিটুকু পড়ুন)

আমি কি আকাশ থেকে অঢেল পানি বর্ষণ করিনি — আন-নাবা ১৪-১৬

আর আমি কি আকাশ থেকে অঢেল পানি বর্ষণ করিনি, যা দিয়ে শস্য এবং উদ্ভিদ উৎপন্ন করি, আর ঘন বাগান? —আন-নাবা ১৪-১৬

আমি কি আকাশ থেকে প্রচুর পানি বর্ষণ করিনি?

পানি এক মহামূল্যবান প্রাকৃতিক সম্পদ। পরিষ্কার পানির উৎসকে ঘিরে জনবসতি গড়ে ওঠে, শহর-কারখানা তৈরি হয়। পরিস্কার পানির ব্যবসা আজকে পৃথিবীতে অন্যতম লাভজনক বিনিয়োগ, যার স্টক মার্কেটে ইনডেক্স-এর বৃদ্ধির হার গত কয়েক বছরে তেল এবং সোনাকে ছাড়িয়ে গেছে। আজকের অর্থনীতিতে নিরাপদ পানি হচ্ছে ‘তরল সোনা’, যার মোট বাজার দর ২০২৫ সালের মধ্যে ২০ ট্রিলিয়ন ডলার হতে যাচ্ছে, যা পুরো যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতির মূল্য থেকেও বেশি![৪৯০] 

আগামী ২৫ বছরের মধ্যে দেশগুলো তাদের সমুদ্র বন্দর, রেল ও সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা এবং বিদ্যুৎ উৎপাদনের পিছনে মোট যত অর্থ খরচ করবে, তার থেকে বেশি অর্থ খরচ করতে হবে পরিষ্কার পানির জন্য[৪৯০] সারা পৃথিবীতে ব্যবহারযোগ্য পানির অভাব এত ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করেছে যে, বিশেষজ্ঞদের মতে আগামী বড় যুদ্ধ আর তেল নিয়ে হবে না, হবে পানি নিয়ে। ইতিমধ্যেই বিশটি দেশ নদী নিয়ে নিজেদের মধ্যে বিরোধে জড়িত।[৪৯১]

  (আর্টিকেলের বাকিটুকু পড়ুন)

আমি কি তোমাদের উপরে সাতটি সুদৃঢ় সৃষ্টি করিনি —আন-নাবা ১২-১৭

আমি কি তোমাদের উপরে সাতটি সুদৃঢ় সৃষ্টি বানাইনি? একটি উজ্জ্বল প্রদীপ তৈরি করিনি? —আন-নাবা ১২-১৩

আমি কি তোমাদের উপরে কি সাতটি সুদৃঢ় সৃষ্টি বানাইনি?

মহাকাশে এমন সব সৃষ্টি আল্লাহ تعالى তৈরি করে রেখেছেন, যাদের বিশালত্ব আমাদের কল্পনার সীমার বাইরে। আমাদের সূর্য এত বড় যে, এর ভেতরে তের লক্ষ পৃথিবী ঢুকিয়ে দেওয়া যাবে। সূর্য থেকে মাঝে মাঝে আগুনের ফুলকি ছিটকে বের হয়, যেগুলোর একেকটার আকৃতি কয়েক’শ পৃথিবীর সমান। আর সূর্য তেমন কোনো বড় নক্ষত্রও নয়। এমন সব দানবাকৃতির নক্ষত্র মহাবিশ্বে ছড়িয়ে আছে, যাদের ভেতরে দশ কোটি সূর্য এঁটে যাবে। এখন পর্যন্ত জানা সবচেয়ে বড় নক্ষত্রটি পঞ্চাশ কোটি সূর্যের সমান![৪৩৮]

সূর্যের তুলনায় পৃথিবীর আকৃতি
  (আর্টিকেলের বাকিটুকু পড়ুন)

আমি কি তোমাদের ঘুমকে একধরনের বিরতি করে দিইনি? —আন-নাবা ৯

আমি কি তোমাদের ঘুমকে একধরনের বিরতি, রাতকে একরকম আবরণ এবং জীবিকা অন্বেষণের জন্য দিন তৈরি করে দিইনি? —আন-নাবা ৯-১১

ঘুম আল্লাহর تعالى পক্ষ থেকে এক বিরাট উপহার। ধনী, গরিব, জ্ঞানী, মূর্খ সবাইকে সমানভাবে এই উপহার ভোগ করার সুযোগ দিয়েছেন। বরং এই উপহারটি তিনি গরিবদেরকে বেশি দিয়েছেন ধনীদের থেকে। অনেক ধনীরা আছেন, যারা তাদের আলিশান বাড়িতে, শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ঘরে, নরম বিছানায়, দু-তিনটা বালিশ দিয়েও  আরামে ঘুমাতে পারেন না। ঠিকমতো ঘুমের জন্য তাদেরকে নিয়মিত ঘুমের ওষুধ খেতে হয়। অন্যদিকে গরিবরা তাদের কুঁড়ে ঘরের মাটিতে মাদুর বিছিয়ে শক্ত বালিশে আরাম করে সারারাত ঘুমায়। কিছু মানুষের জীবনে প্রাচুর্যের শেষ নেই, কিন্তু এক রাত ঘুমের জন্য তারা এমন কোনো চেষ্টা নেই যে তারা করছে না। মাসের পর মাস ঘুমের পিল খেয়ে যাচ্ছে রাতে কয়েক ঘণ্টা ঘুমের জন্য। একসময় গিয়ে পিল কাজ করা বন্ধ করে দিচ্ছে। —ঘুম যে কত বড় একটি উপহার, সেটা তারাই বোঝে, যারা রাতের ঘুম হারিয়ে ফেলে।  

ঘুমকে আল্লাহ تعالى বলেছেন سبات সুবাত, অর্থাৎ বিরতি, থামা, বন্ধ করা। ক্লান্ত দেহ, মনকে পুনরায় সতেজ করার জন্য ঘুমের বিকল্প নেই। চা, কফি, এনার্জি ড্রিঙ্ক ইত্যাদি যা কিছুই মানুষ পান করুক না কেন, ঘুম মানুষকে যতটা সতেজ করে, ততটা আর কোনো কিছুই পারে না। দুপুর বেলা দশ-বিশ মিনিট ঘুমিয়ে নিলে বাকি দিন এবং সন্ধ্যায় দেহ-মন যতটা সতেজ, চাঙ্গা থাকে; মাথা যতটা ঠাণ্ডা থাকে; চিন্তাভাবনা যতটা পরিষ্কার হয়— তা অন্য কোনো বিকল্প পানীয় বা ওষুধ থেকে পাওয়া যায় না। 

একইভাবে ঘুম মানুষকে মানসিক শান্তি দেয়। সারাদিনের মানসিক চাপ, অশান্তির পর রাতের বেলা যখন ঘুমিয়ে পরে, পরেরদিন জেগে উঠে সেই চাপ এবং অশান্তি অনেকখানি দূর হয়ে মন শান্ত হয়ে যায়। আজকে পৃথিবীতে লক্ষ মানুষকে নানা ধরনের ওষুধ এবং পানীয় পান করে মন শান্ত করতে হয়, অস্থিরতা কমাতে হয়। অথচ আল্লাহ تعالى মানুষকে ঘুম দিয়েছেন প্রতিদিন নানা ব্যস্ততার মাঝে শান্তি, স্থিরতা খুঁজে পাওয়ার জন্য। 

  (আর্টিকেলের বাকিটুকু পড়ুন)

আমি কি তোমাদেরকে জোড়ায়-জোড়ায় সৃষ্টি করিনি? — আন-নাবা

আমি কি তোমাদেরকে জোড়ায়-জোড়ায় সৃষ্টি করিনি? — আন-নাবা ৮

অনেকে প্রশ্ন করেন, পৃথিবীতে যদি শুধুই নারী থাকতো, কোনো পুরুষ না থাকতো, তাহলে কি পৃথিবীটা অনেক শান্তির হতো না? অথবা, আল্লাহ تعالى যদি মানুষকে লিঙ্গবিহীন প্রাণী হিসেবে তৈরি করতেন, যেখানে সবাই নিজে থেকেই বাচ্চা জন্ম দিতে পারত, যেরকম কিনা অন্য কিছু প্রাণী পারে, তাহলে কী সমস্যা হতো? তখন নারী-পুরুষের দ্বন্দ্ব, সংসারে ঝামেলা, অশান্তি, অশ্লীলতা, ব্যাভিচার, ধর্ষণ ইত্যাদি মানবজাতির অর্ধেকের বেশি অপরাধ কখনো হতো না? আবার কিছু বিশেষ ব্যক্তিবর্গ এই প্রশ্নও করেন যে, এখানে জোড়ায়-জোড়ায় বলতে কি সমকামী জোড়া হতে পারে না? 

নারী-পুরুষের বিবাহিত সম্পর্কের বাইরে অন্য যত ধরনের সম্পর্ক আছে, সেগুলো কোনো দিক থেকে বেশি ভালো কিনা এবং সমকামিতার পরিণাম নিয়ে নিয়ে বেশ কিছু গবেষণা হয়েছে। তার কিছু এখানে তুলে ধরা হলো। 

  (আর্টিকেলের বাকিটুকু পড়ুন)

কী ব্যাপারে তারা একে অন্যকে জিজ্ঞেস করছে? — আন-নাবা পর্ব ১

কী ব্যাপারে তারা একে অন্যকে জিজ্ঞেস করছে? সেই বিরাট ঘটনার ব্যাপারে? যা নিয়ে তাদের নিজেদের ভেতরেই নানা মতবিরোধ? সাবধান! শীঘ্রই তারা জানতে পারবে। শেষ পর্যন্ত গিয়ে তারা জানতে পারবেই! — আন-নাবা ১-৫

একদিন সবকিছু ধ্বংস হয়ে যাবে; তারপর কোটি কোটি মানুষকে আবার সৃষ্টি করে ওঠানো হবে এবং তাদের সমস্ত স্মৃতি ফিরিয়ে দেওয়া হবে; তারপর তাদের পুরো জীবনটাকে দেখানো হবে —এটা কোনোভাবে সম্ভব, সেটা অনেকেই বিশ্বাস করত না। আবার অনেকে মনে করত যে, এরকম কিছু যদি সত্যিই ঘটে, তাহলে সেই দিন তাদের পীর-ফকির-দরবেশ-আউলিয়া-ওস্তাদ-দেবতাদের কাছে তারা ফিরে যাবে। তখন তাদের আর কোনো দুশ্চিন্তা থাকবে না। কত টাকা-পয়সা, ফুল-মিষ্টি-নারিকেল খরচ করেছে এদের পেছনে। সেগুলোর বিনিময়ে কিছুই পাবে না, তা কী করে হয়? —আবার অনেকে মনে করত যে, একদিন যদি সবার বিচার হয়ও, এক সৃষ্টিকর্তার পক্ষে কি আর হাজার কোটি মানুষের সব কাজের খবর রাখা সম্ভব? এত মানুষের খুঁটিনাটি বিচার করার সময় কোথায়? নিশ্চয়ই তিনি শুধু ঘাঘু অপরাধীদের ধরে শাস্তি দেবেন? বাকিরা সবাই আরামে পার পেয়ে যাবে। আবার অনেকে মনে করত যে, এই দুনিয়াতে তারা কত সম্মান-সম্পদ নিয়ে আনন্দে আছে। তার মানে সৃষ্টিকর্তা নিশ্চয়ই তাদের উপর মহা খুশি। মৃত্যুর পরে নিশ্চয়ই তাদের জন্য আরও বেশি সম্মান-সম্পদ অপেক্ষা করছে।[৭] 

—শেষ বিচার দিন কোনো ঠাট্টা তামাশার বিষয় নয়। এটি সৃষ্টিজগতের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি ঘটনা। এই দিন অসহায় অত্যাচারিত মানুষের ন্যায্য বিচার পাওয়ার দিন। জোর খাটিয়ে দুনিয়ায় পার পেয়ে যাওয়া সব অত্যাচারীর পাকড়াওয়ের দিন। এই দিন সর্বোচ্চ আদালতে হাজিরা দেওয়ার দিন। হাজার কোটি মামলার শুনানি এবং ফয়সালার দিন। একইসাথে এই দিন সকল ন্যায়পরায়ন, যোগ্য মানুষের ভালো কাজ এবং ত্যাগের প্রতিদান পাওয়ার দিন। পরম-করুণাময়ের অসীম দয়া উপভোগের দিন। তাহলে, কোন সাহসে মানুষ এরকম এক বিরাট ঘটনাকে নিয়ে একে অন্যর সাথে ঠাট্টা করে?

  (আর্টিকেলের বাকিটুকু পড়ুন)

কোনটা সৃষ্টি করা বেশি কঠিন: তোমরা, নাকি যে আকাশ তিনি বানিয়েছেন, সেটা? — আন-নাযিয়াত পর্ব ২

কোনটা সৃষ্টি করা বেশি কঠিন: তোমরা, নাকি যে আকাশ তিনি বানিয়েছেন, সেটা? তিনি সেটার ছাদকে উঁচু করেছেন, সুবিন্যস্ত করেছেন। এর রাতে আধার দিয়েছেন এবং এর দিনের উজ্জ্বলতা প্রকাশ করেছেন। আর ভূমিকে তারপরে বিস্তৃত করেছেন। তা থেকে পানি এবং তৃণভূমি বের করেছেন। দৃঢ়ভাবে পর্বতমালাকে গেঁথে দিয়েছেন। এসবই তোমাদের এবং তোমাদের গবাদির জীবিকার জন্য। —আন-নাযিয়াত ২৭-৩৩

  (আর্টিকেলের বাকিটুকু পড়ুন)

আমরা কি আবার আগের অবস্থায় ফিরে যাবো? – আন-নাযিয়াত পর্ব ১

শপথ তাদের যারা নির্মমভাবে ছিনিয়ে নেয়, যারা আলতোভাবে বাঁধন ছেড়ে দেয়, যারা তীব্র গতিতে ছুটে চলে, যারা সবার সামনে চলে গিয়ে ফয়সালা করে ফেলে।

আরবরা কান খাড়া করে এক রোমহর্ষক ঘটনা শুনছে। তারা কল্পনা করছে: একদল যুদ্ধের ঘোড়া ছুটে যাওয়ার জন্য অস্থির হয়ে মাটিতে পা ঠুকছে। তাদের বাঁধন ছেড়ে দেয়া হল, আর অমনি তারা তীব্র বেগে ছুটে যাওয়া শুরু করল। ছুটতে ছুটতে সবাইকে পেছনে ফেলে সামনে এগিয়ে গেল। শত্রুপক্ষকে শেষ করে যুদ্ধের ফয়সালা করে ফেলতে যাচ্ছে। তারপর…

সেদিন এক ভীষণ কম্পন প্রকম্পিত করবে। তারপর আসবে আরেকটা। অনেক অন্তর সেদিন ভয়ে কাঁপতে থাকবে। তাদের দৃষ্টি হবে ভয়ে নত।

মানে? কোথা থেকে কী আসলো? সেই ঘোড়ার উপর সওয়ারী যোদ্ধাদের কী হলো? কে জিতলো শেষ পর্যন্ত?

  (আর্টিকেলের বাকিটুকু পড়ুন)

সে ভ্রু কুচকালো এবং মুখ ফিরিয়ে নিলো —সূরা আবাসা

সে ভ্রু কুচকালো এবং মুখ ফিরিয়ে নিলো। কারণ তার কাছে অন্ধ লোকটি এসে পড়েছিল। তুমি জানলে কীভাবে, হয়ত সে পরিশুদ্ধ হতো? অথবা হয়ত সে উপদেশ গ্রহণ করতো এবং সেই উপদেশ তার উপকারে আসতো? আর যে কিনা নিজেকে প্রয়োজনমুক্ত মনে করে, তার জন্য তুমি কত চেষ্টা করছিলে। অথচ সে নিজেকে না শোধরালে তোমার কোনোই দায় নেই। আর যে কিনা তোমার কাছে ছুটে আসলো আল্লাহর ভয়ে, তুমি তার ব্যাপারে অনীহা প্রকাশ করলে? —আবাসা ১-১০

আমরা বড় হই কিছু ধারণা নিয়ে— সমাজের ধনী মানুষদেরকে, গরিব মানুষদের থেকে বেশি  সুযোগ, সম্মান দিতে হবে। যাদের ডিগ্রি আছে তাদেরকে অশিক্ষিত মানুষদের থেকে বেশি সুযোগ সম্মান দিতে হবে। কেউ যদি উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তা হয়, মন্ত্রী-আমলা হয়, তাহলে তো কথাই নেই। উঠতে বসতে ‘স্যার, স্যার’ করতে হবে। —ছোটবেলা থেকে আমাদেরকে এই ধারণাগুলো দিয়ে বড় করা হয়। আমরা অনেক সময় ভুলে যাই যে— সম্পদ, খ্যাতি, উপাধি, পদ, বংশ ইত্যাদি যেই ব্যাপারগুলো আমরা এত গুরুত্ব দেই, আল্লাহর কাছে এগুলোর সাথে কারো প্রাপ্য-সম্মানের কোনোই সম্পর্ক নেই। তাঁর কাছে কারো সম্মান নির্ভর করে শুধুমাত্র তার তাকওয়ার উপর।

উপরের এই আয়াতগুলো দিয়ে আল্লাহ تعالى আমাদেরকে এমন এক মূল্যবোধ শেখাতে চান, যার নজির ইতিহাসে আর একটিও নেই। একবার, রাসুলল্লাহ عليه السلام আরবদের উচ্চপদস্থ কিছু মানুষকে ইসলামের দাওয়াত দেওয়ার চেষ্টা করছিলেন। অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে তিনি সেই লোকগুলোর সাথে আলোচনা করার সুযোগ পেয়েছিলেন। তিনি আশা করছিলেন এই লোকগুলোকে ইসলামের পথে আনতে পারলে, মক্কাতে ইসলাম প্রচারে যে ব্যাপক বাধার সম্মুখীন তিনি হচ্ছিলেন, তা অনেকাংশে কমে যাবে। যখন তিনি সেই লোকগুলোর সাথে ইসলামের ব্যাপারে আলোচনা করছিলেন, তখন একজন অন্ধ সাহাবি এসে বার বার কুরআনের নতুন কোনো বাণী এসেছে কিনা, সে ব্যাপারে জানতে চেয়ে তার আলোচনায় বাধা তৈরি করতে থাকে। তখন রাসুল কিছুটা বিরক্ত হয়ে ভ্রু কুঁচকে সাহাবিকে উপেক্ষা করে ওই লোকগুলোর দিকে মনোযোগ দেন। —এই ব্যাপারটি আল্লাহর تعالى কাছে গ্রহণযোগ্য ছিল না। আল্লাহ تعالى তখন দশ-দশটি আয়াত নাজিল করে রাসুলকে সংশোধন করে দেন।  

  (আর্টিকেলের বাকিটুকু পড়ুন)