আমরা কি আবার আগের অবস্থায় ফিরে যাবো? – আন-নাযিয়াত পর্ব ১

শপথ তাদের যারা নির্মমভাবে ছিনিয়ে নেয়, যারা আলতোভাবে বাঁধন ছেড়ে দেয়, যারা তীব্র গতিতে ছুটে চলে, যারা সবার সামনে চলে গিয়ে ফয়সালা করে ফেলে।

আরবরা কান খাড়া করে এক রোমহর্ষক ঘটনা শুনছে। তারা কল্পনা করছে: একদল যুদ্ধের ঘোড়া ছুটে যাওয়ার জন্য অস্থির হয়ে মাটিতে পা ঠুকছে। তাদের বাঁধন ছেড়ে দেয়া হল, আর অমনি তারা তীব্র বেগে ছুটে যাওয়া শুরু করল। ছুটতে ছুটতে সবাইকে পেছনে ফেলে সামনে এগিয়ে গেল। শত্রুপক্ষকে শেষ করে যুদ্ধের ফয়সালা করে ফেলতে যাচ্ছে। তারপর…

সেদিন এক ভীষণ কম্পন প্রকম্পিত করবে। তারপর আসবে আরেকটা। অনেক অন্তর সেদিন ভয়ে কাঁপতে থাকবে। তাদের দৃষ্টি হবে ভয়ে নত।

মানে? কোথা থেকে কী আসলো? সেই ঘোড়ার উপর সওয়ারী যোদ্ধাদের কী হলো? কে জিতলো শেষ পর্যন্ত?

  (আর্টিকেলের বাকিটুকু পড়ুন)

যখন আমি তোমাদের জন্য সমুদ্রকে দুই ভাগ করেছিলাম—বাকারাহ ৫০-৫২

বনি ইসরাইলের এক বিশাল কাফেলা নিয়ে নবী মুসা عليه السلام হেঁটে যাচ্ছেন—তাদেরকে এক নতুন দেশে পৌঁছে দিতে। শেষ পর্যন্ত তাদেরকে যেতে দিতে রাজি হয়েছে ফিরাউন। কিন্তু এদিকে হঠাৎ ফিরাউন তার মত পাল্টাল: মুসা عليه السلام এর কারণে সে তার রাজত্ব হারিয়ে ফেলেছে—সেই যন্ত্রণায় পুড়ছে সে। শেষ পর্যন্ত আর থাকতে না পেরে ফিরাউন ঠিক করল মুসা عليه السلام সহ বনি ইসরাইলদের সবাইকে মেরে ফেলবে। সে তার বাহিনীকে একসাথে জড়ো করে ছুটে গেল তাদেরকে হত্যা করার জন্য।

ওদিকে মুসা عليه السلام তার কাফেলাকে নিয়ে নিশ্চিন্ত মনে এগিয়ে যাচ্ছেন। যেতে যেতে আটকে গেলেন—সামনে এক বিশাল সমুদ্র, এগোবার উপায় নেই আর। পিছনে ফিরে দেখলেন: ফিরাউন তার বাহিনী নিয়ে ছুটে আসছে তাদেরকে হত্যা করার জন্য। বাঁচার কোনো আশা নেই বনি ইসরাইলিদের: সামনে এগোলে সমুদ্রে ডুবে মারা যাবে, আর পেছনে ফিরে গেলে ফিরাউনের বাহিনী তাদেরকে নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করবে। দুই দিকেই ভয়ঙ্কর মৃত্যু দেখে বনি ইসরাইলিরা ভয়ে-আতঙ্কে-হতবিহবল হয়ে মুসা عليه السلام এর কাছে ছুটে গেল—কীভাবে বাঁচবে তারা এখন?  (আর্টিকেলের বাকিটুকু পড়ুন)

এটা ছিল এক ভীষণ কঠিন পরীক্ষা—বাকারাহ ৪৯

চারিদিকে মুসলিমদের এত দুঃখ, কষ্ট। মুসলিম দেশগুলোতে এত অভাব, রক্তারক্তি, মা-বোনদের সম্ভ্রমহানি— এসব দেখে অনেকের মনে প্রশ্ন জাগে: কেন শুধু মুসলিমদেরই এত কষ্ট? ইসলাম মেনে আমরা কি ভুল করছি? কেন আজকে মুসলিম দেশগুলোতে মুসলিমদেরকে এভাবে মেরে শেষ করে ফেলা হচ্ছে? এত অভাব, অপমান, মারামারি দেখে আর থাকতে না পেরে অনেকেই ধৈর্য হারিয়ে ফেলেন। তাদের অন্তরে ঈমানের প্রদীপ নিভু নিভু হয়ে যেতে থাকে। এমনকি অনেকে শেষ পর্যন্ত ধর্ম ছেড়ে দেন। —তাদের জন্য বাকারাহ-এর এই আয়াতটি চিন্তার খোরাক দিবে, কারণ ইতিহাসের সবচেয়ে জঘন্যতম অপমান এবং অত্যাচারের শিকার সিরিয়া, গাজা, ফিলিস্তিন, মায়ানমারের মুসলিমরা নয়, বরং তারা ছিল বনু ইসরাইল—

2_49

মনে পড়ে, আমি তোমাদেরকে ফিরাউনের লোকদের কবল থেকে বার বার বাঁচিয়েছিলাম, যারা তোমাদেরকে জঘন্য রকমের কষ্ট দিত: তোমাদের ছেলে সন্তানদেরকে নৃশংসভাবে হত্যা করত, আর তোমাদের নারীদেরকে ইচ্ছা করে বাঁচিয়ে রাখত—এটা ছিল তোমাদের প্রভুর পক্ষ থেকে এক ভীষণ কঠিন পরীক্ষা। [বাকারাহ ৪৯]

syria

এই আয়াতে আল্লাহ تعالى মুসলিমদেরকে মানসিকভাবে তৈরি করছেন যে, মুসলিমরা যদি মনে করে থাকে যে তারাই সবচেয়ে কষ্ট ও অপমানের জীবন পার করছে, তাদের আর কোনো আশা নেই, তাহলে তারা বনু ইসরাইলিদের ভয়াবহ ইতিহাসের কথা আরেকবার ভেবে দেখুক। কী অসম্ভব অবস্থার মধ্য থেকে তাদেরকে তিনি একসময় বের করে এনেছিলেন। কী ভয়ঙ্কর দুঃখ কষ্টের মধ্যেও সেই জাতিটি শেষ পর্যন্ত টিকে থেকেছিল এবং একসময় পৃথিবীতে অন্যতম সন্মানিত জাতি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। বনু ইসরাইলিদের ইতিহাস থেকে মুসলিমদের জন্য আর কিছু না হোক, অন্তত কিছুটা হলেও শান্তি এবং মনোবল পাওয়া যায়: তাদেরকে যদি আল্লাহ تعالى সেই ভয়ঙ্কর জীবন থেকে মুক্তি দিয়ে থাকেন, তাহলে আমাদেরকেও নিশ্চয়ই একদিন মুক্তি দেবেন।  (আর্টিকেলের বাকিটুকু পড়ুন)