আমি কি তোমাদের উপরে সাতটি সুদৃঢ় সৃষ্টি করিনি —আন-নাবা ১২-১৭

আমি কি তোমাদের উপরে সাতটি সুদৃঢ় সৃষ্টি বানাইনি? একটি উজ্জ্বল প্রদীপ তৈরি করিনি? —আন-নাবা ১২-১৩

আমি কি তোমাদের উপরে কি সাতটি সুদৃঢ় সৃষ্টি বানাইনি?

মহাকাশে এমন সব সৃষ্টি আল্লাহ تعالى তৈরি করে রেখেছেন, যাদের বিশালত্ব আমাদের কল্পনার সীমার বাইরে। আমাদের সূর্য এত বড় যে, এর ভেতরে তের লক্ষ পৃথিবী ঢুকিয়ে দেওয়া যাবে। সূর্য থেকে মাঝে মাঝে আগুনের ফুলকি ছিটকে বের হয়, যেগুলোর একেকটার আকৃতি কয়েক’শ পৃথিবীর সমান। আর সূর্য তেমন কোনো বড় নক্ষত্রও নয়। এমন সব দানবাকৃতির নক্ষত্র মহাবিশ্বে ছড়িয়ে আছে, যাদের ভেতরে দশ কোটি সূর্য এঁটে যাবে। এখন পর্যন্ত জানা সবচেয়ে বড় নক্ষত্রটি পঞ্চাশ কোটি সূর্যের সমান![৪৩৮]

সূর্যের তুলনায় পৃথিবীর আকৃতি
  (আর্টিকেলের বাকিটুকু পড়ুন)

কোনটা সৃষ্টি করা বেশি কঠিন: তোমরা, নাকি যে আকাশ তিনি বানিয়েছেন, সেটা? — আন-নাযিয়াত পর্ব ২

কোনটা সৃষ্টি করা বেশি কঠিন: তোমরা, নাকি যে আকাশ তিনি বানিয়েছেন, সেটা? তিনি সেটার ছাদকে উঁচু করেছেন, সুবিন্যস্ত করেছেন। এর রাতে আধার দিয়েছেন এবং এর দিনের উজ্জ্বলতা প্রকাশ করেছেন। আর ভূমিকে তারপরে বিস্তৃত করেছেন। তা থেকে পানি এবং তৃণভূমি বের করেছেন। দৃঢ়ভাবে পর্বতমালাকে গেঁথে দিয়েছেন। এসবই তোমাদের এবং তোমাদের গবাদির জীবিকার জন্য। —আন-নাযিয়াত ২৭-৩৩

  (আর্টিকেলের বাকিটুকু পড়ুন)

তুমি কি জানো, রাতে যা হঠাৎ করে আসে, সেটা কী? এক বিদীর্ণকারী নক্ষত্র —আত-তারিক

শপথ আকাশের এবং রাতে যা হঠাৎ করে আসে তার। তুমি কি জানো, রাতে যা হঠাৎ করে আসে, সেটি কী? এক বিদীর্ণকারী নক্ষত্র। এমন কেউ নেই যার জন্য তত্ত্বাবধায়ক নেই। তাই মানুষ ভেবে দেখুক কীসের থেকে তাকে সৃষ্টি করা হয়েছে। সবেগে বের হওয়া তরল থেকে তাকে সৃষ্টি করা হয়েছে। মেরুদণ্ড এবং পাঁজরের হাড়ের মধ্যে থেকে সে বেরিয়ে আসে। অবশ্যই তিনি পারেন তাকে পুনরায় জীবন দিতে। —আত-তারিক ১-৮

শপথ আকাশের এবং রাতে যা হঠাৎ করে আসে তার

এই আয়াতগুলো যুগে যুগে কৌতূহলী মানুষের মধ্যে অনেক চিন্তার খোরাক যুগিয়েছে। কোন সেই নক্ষত্র যা রাতের বেলা হঠাৎ করে আসে? এমন এক কল্পনাতীত উজ্জ্বল নক্ষত্র, যার আলো মহাবিশ্বে কোটি কোটি মাইল পাড়ি দিয়ে, সকল বাধা বিদীর্ণ করে রাতের আকাশে জ্বল জ্বল করতে থাকে? তারিক طاِرِق অর্থ রাতের বেলা হঠাৎ করে আসা, অথবা রাতের আধারে খট খট করে দরজায় টোকা দেওয়া। অপ্রত্যাশিত এমন কিছু, যা মানুষকে চিন্তায় ফেলে দেয়। কোন সেই নক্ষত্র যা রাতের বেলা হঠাৎ করে এসে মানুষকে চিন্তায় ফেলে দেয়?[১][৭][৮][১৭][১৮]

একটি নক্ষত্র যখন তার ভেতরের প্রচণ্ড চাপে বিস্ফোরিত হয়ে যায়, অথবা আশপাশ থেকে খুব বেশি পদার্থ ঢুকে গেলে তারপর বিস্ফোরিত হয়ে যায়, তখন সেটি এতই উজ্জ্বল হয় যে, মহাবিশ্বের সুদূর প্রান্ত থেকেও তাকে দেখা যায়। মহাবিশ্বের সব গ্যালাক্সির উজ্জ্বলতাকে হারিয়ে এটি রাতের আকাশে কয়েক দিন, অনেক সময় কয়েক মাস জ্বল জ্বল করতে থাকে। একে সুপারনোভা বলে। সুপারনোভা অনেক সময় এতই উজ্জ্বল হয় যে, দিনের বেলায়ও তা দেখা যায়। প্রতি হাজার বছরে কয়েকবার এরকম ঘটনা পৃথিবীর আকাশে খালি চোখে দেখা যায়।  (আর্টিকেলের বাকিটুকু পড়ুন)

তিনি মানবজাতিকে শিখিয়েছেন, যা তারা জানত না — আল-আলাক্ব — পর্ব ২

যিনি মানুষকে এক ঝুলন্ত গঠন থেকে সৃষ্টি করেছেন

আল্লাহ تعالى মানুষকে লক্ষ্য করতে বলছেন এক বিস্ময়কর বৈজ্ঞানিক তথ্যের উপর। মানুষকে তিনি সৃষ্টি করেছেন আলাক্ব অর্থাৎ জমাট বাঁধা রক্ত বা ঝুলন্ত এক গঠন থেকে। এই বাণী যখন মানুষকে দেওয়া হয়েছিল, তখন মানুষ জানত না এই আয়াতের গভীরতা কতখানি। আজকে আমরা অত্যাধুনিক স্ক্যানিং প্রযুক্তির মাধ্যমে দেখতে পেয়েছি ভ্রূণ মায়ের গর্ভের দেওয়ালে আঁকড়ে ধরে ঝুলে থাকে। আর আলাক্ব শব্দের অর্থই হচ্ছে এমন একটা কিছু, যা আঁকড়ে ধরে ঝুলে থাকে।

আল্লাহ تعالى যখন মানুষকে তাঁর সৃষ্টির ব্যাপারে বলেন, তখন তার মধ্যে কিছু উদ্দেশ্য থাকে। প্রথম উদ্দেশ্য হচ্ছে, আল্লাহর تعالى অসীম ক্ষমতা, সৃজনশীলতা এবং তাঁর প্রজ্ঞা সম্পর্কে মানুষকে চিন্তা করতে উৎসাহ দেওয়া। একটা মাত্র জমাট বাঁধা রক্ত থেকে একসময় চোখ, মুখ, কান, হাত, পা বের হয়ে বড় সড় একটা পরিপূর্ণ মানুষ তৈরি হয়ে যায়। জমাট বাধা রক্তের মধ্যে কোনো বিবেক, বুদ্ধি, চেতনা কিছুই নেই। এটা একটা বোধ শক্তিহীন জড় পদার্থ। অথচ এই রক্তের ফোঁটা থেকেই মহাবিশ্বের অন্যতম বুদ্ধিমান, চেতন, বিবেকবান, জটিল প্রাণীর জন্ম হয়। কীভাবে এক ফোঁটা রক্তের মধ্যে এত বিপুল পরিমাণের তথ্য থাকে যে, তা মানুষের প্রতিটি অঙ্গের আকৃতি, গঠন, চামড়ার রঙ, চোখের রঙ, উচ্চতা, শারীরিক ক্ষমতা, মস্তিষ্কের মতো জটিলতম যন্ত্র গঠন করার যাবতীয় নির্দেশ সংরক্ষণ করা থাকে?  (আর্টিকেলের বাকিটুকু পড়ুন)

সে সঠিক পথ থেকে একেবারেই হারিয়ে গেছে — আল-বাক্বারাহ ১০৮ পর্ব ২

হাজার বছর আগে মুসা عليه السلام নবীকে বনি ইসরাইলিরা নানা ধরনের প্রশ্ন করত: “আল্লাহ تعالى কোথায়? দেখাও আমাদেরকে। আল্লাহকে تعالى নিজের চোখে না দেখলে, নিজের কানে তাঁর আদেশ না শুনলে বিশ্বাস করব না।” হাজার বছর পরে আজ একবিংশ শতাব্দীতে এসে এখনও আল্লাহর تعالى সম্পর্কে সেই একই ধরনের প্রশ্ন করতে দেখা যায়। শুধু প্রশ্নগুলো আগের থেকে আরও ‘আধুনিক’ এবং ‘বৈজ্ঞানিক’ হয়েছে, এবং কথা ও যুক্তির মারপ্যাঁচে একটু বেশি গম্ভীর শোনায় —এই যা।

2_108

যেভাবে মুসাকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, তোমরাও কি সেভাবেই তোমাদের নবীকে প্রশ্ন করতে চাও? যে ঈমানকে কুফরি দিয়ে বদল করে, সে সঠিক পথ থেকে একেবারেই হারিয়ে গেছে। [আল-বাক্বারাহ ১০৮]

আজকের যুগে আল্লাহর تعالى অস্তিত্বকে অস্বীকার করে বিভিন্ন ধরনের নাস্তিকদের কিছু প্রশ্ন এবং দাবি দেখা যাক—

উঠতি নাস্তিক: আল্লাহ تعالى যদি সবকিছু সৃষ্টি করে থাকে, তাহলে তাকে সৃষ্টি করলো কে?

হতাশাগ্রস্থ নাস্তিক: সত্যিই যদি আল্লাহ تعالى থাকে, তাহলে পৃথিবীতে এত দুঃখ, কষ্ট, মুসলিমদের উপর এত অত্যাচার, এত প্রাকৃতিক দুর্যোগ, মহামারি হয় কেন? আল্লাহ تعالى এগুলো হতে দেয় কেন?

বুদ্ধি প্রতিবন্ধী নাস্তিক: আল্লাহ تعالى বলে কেউ আছে —এর পক্ষে কোনো প্রমাণ নেই। এখন পর্যন্ত কোনো বিজ্ঞান সম্মত প্রমাণ পাওয়া যায়নি যে, সৃষ্টিজগৎ কোনো অতিবুদ্ধিমান সত্তা বানিয়েছে। সুতরাং আল্লাহ تعالى বলে কেউ নেই।

আঁতেল নাস্তিক: আল্লাহ تعالى ধারণাটা আসলে মানুষের কল্পনা প্রসূত। মানুষ যখন কোনো প্রাকৃতিক ঘটনা ব্যাখ্যা করতে পারত না, তখন তারা মনে করত: নিশ্চয়ই কোনো অতিপ্রাকৃত সত্তা রয়েছে, যে এসব ঘটাচ্ছে। একারণে মানুষ এমন কোনো সত্তাকে কল্পনা করে নেয়, যার কোনো দুর্বলতা নেই। যেমন: তার ক্ষুধা, ঘুম পায় না; সে মারা যায় না; কেউ তাকে জন্ম দেয় না; তার কোনো শরীর নেই যেখানে সে আবদ্ধ; তার কোনো আকার নেই, যা তাকে দুর্বল করে দেবে। এরকম নিরাকার, অবিনশ্বর, অসীম ক্ষমতা ইত্যাদি যত সব কল্পনাতীত গুণ মানুষচিন্তা করে বের করতে পেরেছে, তার সবকিছু ব্যবহার করে সে এক স্রষ্টাকে সৃষ্টি করেছে। এর মানে তো এই না যে, স্রষ্টা বলে আসলেই কেউ আছে?

ঘৃণাস্তিক: ধর্মের নামে যে পরিমাণ মানুষ হত্যা হয়েছে, আর অন্য কোনোভাবে এত মানুষ মারা যায়নি। ধর্মের কারণে মানুষে মানুষে ঝগড়া, ঘৃণা, মারামারি, দলাদলি, এক জাতি আরেক জাতিকে মেরে শেষ করে ফেলা —এমন কোনো খারাপ কাজ নেই যা হয় না। পৃথিবীতে যদি কোনো ধর্ম না থাকতো, তাহলে মানুষে-মানুষে এত ভেদাভেদ, এত রক্তারক্তি কিছুই হতো না। যদি আল্লাহ বলে আসলেই কেউ থাকে, তাহলে ধর্মের নামে এত হত্যা কেন হয়? ধার্মিকরা এত অসাধু হয় কেন? যতসব চোর, লম্পট, প্রতারকরা দেখা যায় টুপি-দাঁড়ি পড়ে মসজিদে নামাজ ঠিকই পড়ে।

এই প্রশ্নগুলোর কিছু উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করা হলো—

earth good and evil  (আর্টিকেলের বাকিটুকু পড়ুন)

তোমরাও কি সেভাবেই তোমাদের নবীকে প্রশ্ন করতে চাও? — আল-বাক্বারাহ ১০৮

হাজার বছর আগে মুসা عليه السلام নবীকে বনি ইসরাইলিরা নানা ধরনের প্রশ্ন করত: “আল্লাহ تعالى কোথায়? দেখাও আমাদেরকে। আল্লাহকে تعالى নিজের চোখে না দেখলে, নিজের কানে তাঁর আদেশ না শুনলে বিশ্বাস করব না।” তার শত বছর পরে নবী মুহাম্মাদ-কেও عليه السلام একই ধরনের প্রশ্ন করা হত: “সাফা পাহাড়কে সোনার পাহাড় বানিয়ে দেখাও দেখি? আকাশ থেকে একটা বই এনে দেখাও দেখি?”[১৪] হাজার বছর পরে আজ বিংশ শতাব্দীতে এসে এখনও আল্লাহর تعالى সম্পর্কে একই ধরনের প্রশ্ন করতে দেখা যায়। শুধু প্রশ্নগুলো আগের থেকে আরও ‘আধুনিক’ এবং ‘বৈজ্ঞানিক’ হয়েছে, এবং কথা ও যুক্তির মারপ্যাঁচে একটু বেশি গম্ভীর শোনায় —এই যা।

2_108

যেভাবে মুসাকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, তোমরাও কি সেভাবেই তোমাদের নবীকে প্রশ্ন করতে চাও? যে ঈমানকে কুফরি দিয়ে বদল করে, সে সঠিক পথ থেকে একেবারেই হারিয়ে গেছে। [আল-বাক্বারাহ ১০৮]

আজকের যুগে আল্লাহর تعالى অস্তিত্বকে অস্বীকার করে বিভিন্ন ধরনের নাস্তিকদের কিছু প্রশ্ন এবং দাবি দেখা যাক—

universe man

মহাকাশ বিজ্ঞানী: মহাবিশ্ব শূন্য থেকে নিজে থেকেই সৃষ্টি হয়েছে। এর আগে কিছু ছিল না। মহাবিশ্বের কোনো সৃষ্টিকর্তা নেই। Quantum Vaccum কোয়ান্টাম শূন্যতা থেকে মহাবিশ্ব সৃষ্টি হয়েছে। মহাবিশ্ব কোনো স্রস্টা বানিয়েছে, তার প্রমাণ কী?

পদার্থবিজ্ঞানী: মহাবিশ্ব সৃষ্টি হয়েছে এক অতি-মহাবিশ্ব থেকে। একে কোনো সৃষ্টি কর্তা বানায়নি। এক অতি-মহাবিশ্ব, যাকে মাল্টিভার্স বলা হয়, সেখানে প্রতিনিয়ত সকল ধরনের সৃষ্টি জগত তৈরি হয়। সকল সম্ভাবনা সেখানে বিদ্যমান। এরকম অসীম সংখ্যক মহাবিশ্বের একটিতে আমরা রয়েছি। আরেকটি মহাবিশ্বে হয়ত আমারই মত একজন রয়েছে, যে আমার থেকে একটু লম্বা। আরেকটিতে আমার থেকে একটু খাটো। মোট কথা যতকিছুই ঘটা সম্ভব, তার সবই ঘটেছে, ঘটছে এবং ঘটবে। এই মহাবিশ্বই একমাত্র মহাবিশ্ব, যাকে কোনো একক সত্তা সৃষ্টি করেছে, এর প্রমাণ কী?
দার্শনিক: মহাবিশ্ব অনন্তকাল থেকে রয়েছে। পদার্থ এবং শক্তি অবিনশ্বর। এদের সৃষ্টি বা ধ্বংস হয় না। এদের শুধু রূপান্তর হয়। সময় অসীম। মহাবিশ্ব যে একদিন ছিল না, সময় যে একসময় শুরু হয়েছে, এবং একে যে কোনো এক অতিসত্তা সৃষ্টি করেছে, তার প্রমাণ কী?

জীববিজ্ঞানী: কোনো অতিবুদ্ধিমান সত্তা মানুষ বা অন্য কোনো প্রাণী বা উদ্ভিদ সৃষ্টি করেনি। এগুলো সবই প্রাকৃতিক নিয়মের ফলাফল। বিবর্তনের ফলে এক কোষী প্রাণী থেকে বহুকোষী প্রাণী তৈরি হয়েছে এবং কোটি কোটি বছর ধরে তা উন্নত হতে হতে একসময় বানর বা শিম্পাঞ্জি থেকে মানুষের মতো বুদ্ধিমান প্রাণী তৈরি হয়েছে। মানুষ কোনো বিশেষ প্রাণী নয়, শুধুই বানর থেকে বিবর্তনের ফলে একটু উন্নত প্রাণী। প্রমাণ কী যে, কোনো অতিবুদ্ধিমান সত্তা নিজের ইচ্ছামত ডিজাইন করে সমস্ত প্রাণী এবং উদ্ভিদ তৈরি করেছে?

ঐতিহাসিক: যদি কোনো বুদ্ধিমান সত্তা মহাবিশ্বকে নিয়ন্ত্রণ করতই, তাহলে ইতিহাসে অনেক ঘটনা থাকতো, যা থেকে বোঝা যেত: কোনো বুদ্ধিমান সত্তা সেগুলো ঘটিয়েছে, যা কোনোভাবেই প্রকৃতির স্বাভাবিক নিয়মে ঘটা সম্ভব নয়। এরকম ঘটনা ঘটতে তো দেখা যাচ্ছে না। তাহলে প্রমাণ কী যে, আল্লাহ বলে সত্যিই কেউ আছে?

উঠতি নাস্তিক: আল্লাহ تعالى যদি সবকিছু সৃষ্টি করে থাকে, তাহলে তাকে সৃষ্টি করলো কে?

হতাশাগ্রস্থ নাস্তিক: সত্যিই যদি আল্লাহ تعالى থাকে, তাহলে পৃথিবীতে এত দুঃখ, কষ্ট, মুসলিমদের উপর এত অত্যাচার, এত প্রাকৃতিক দুর্যোগ, মহামারি হয় কেন? আল্লাহ تعالى এগুলো হতে দেয় কেন?

আঁতেল নাস্তিক: আল্লাহ تعالى ধারণাটা আসলে মানুষের কল্পনা প্রসূত। মানুষ যখন কোনো প্রাকৃতিক ঘটনা ব্যাখ্যা করতে পারত না, তখন তারা মনে করত: নিশ্চয়ই কোনো অতিপ্রাকৃত সত্তা রয়েছে, যে এসব ঘটাচ্ছে। একারণে মানুষ এমন কোনো সত্তাকে কল্পনা করে নেয়, যার কোনো দুর্বলতা নেই। যেমন: তার ক্ষুধা, ঘুম পায় না; সে মারা যায় না; কেউ তাকে জন্ম দেয় না; তার কোনো শরীর নেই যেখানে সে আবদ্ধ; তার কোনো আকার নেই, যা তাকে দুর্বল করে দেবে। এরকম নিরাকার, অবিনশ্বর, অসীম ক্ষমতা ইত্যাদি যত সব কল্পনাতীত গুণ মানুষচিন্তা করে বের করতে পেরেছে, তার সবকিছু ব্যবহার করে সে এক স্রস্টাকে সৃষ্টি করেছে। এর মানে তো এই না যে, স্রস্টা বলে আসলেই কেউ আছে?

ঘৃণাস্তিক: ধর্মের নামে যে পরিমাণ মানুষ হত্যা হয়েছে, আর অন্য কোনোভাবে এত মানুষ মারা যায়নি। ধর্মের কারণে মানুষে মানুষে ঝগড়া, ঘৃণা, মারামারি, দলাদলি, এক জাতি আরেক জাতিকে মেরে শেষ করে ফেলা —এমন কোনো খারাপ কাজ নেই যা হয় না। পৃথিবীতে যদি কোনো ধর্ম না থাকতো, তাহলে মানুষে-মানুষে এত ভেদাভেদ, এত রক্তারক্তি কিছুই হতো না। যদি আল্লাহ বলে আসলেই কেউ থাকে, তাহলে ধর্মের নামে এত হত্যা কেন হয়? ধার্মিকরা এত অসাধু হয় কেন? যতসব চোর, লম্পট, প্রতারকরা দেখা যায় টুপি-দাঁড়ি পড়ে মসজিদে নামাজ ঠিকই পড়ে।

এই প্রশ্নগুলোর কিছু উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করি—

  (আর্টিকেলের বাকিটুকু পড়ুন)

কু’রআনে কী ধরনের বৈজ্ঞানিক তথ্য আছে?

যিনি তাঁর প্রত্যেকটি সৃষ্টিকে নিখুঁত করেছেন এবং মানবজাতির সৃষ্টির সূচনা করেছিলেন পানিসিক্ত অজৈব পদার্থ (কাঁদা) থেকে। (৩২:৭)

DNA-Strandকু’রআনে পৃথিবী, সৌরজগত, মহাবিশ্ব এবং সৃষ্টির সূচনার যে বর্ণনা দেওয়া আছে, তার সম্পর্কে ১৪০০ বছর আগে মানুষের কোনোই ধারণা ছিল না। কু’রআন এমন একটি সময়ে প্রকাশ করা হয়েছে, যখন কোনো পদার্থ বিজ্ঞান, রসায়ন বিজ্ঞান, মহাকাশ বিজ্ঞান, চিকিৎসা বিজ্ঞান— এসব কিছুই ছিল না। মানুষ মনে করতো: পৃথিবী হচ্ছে একমাত্র জগত এবং আকাশ হচ্ছে পৃথিবীর ছাদ, যেখানে চাঁদ, সূর্য, নক্ষত্র ভেসে বেড়াচ্ছে এবং রাতের বেলা সূর্য পৃথিবীর নিচে গিয়ে বিশ্রাম নেয় (গ্রীক হেলিওসেন্ট্রিসম)। অথচ কু’রআন, যা কি না ৬১০-৬৩২ খ্রিস্টাব্দে নাজিল হয়েছে: এখন থেকে ১৪০০ বছর আগে এমন কিছু বৈজ্ঞানিক তথ্য প্রকাশ করেছে, যা শুধুমাত্র সাম্প্রতিক বিজ্ঞানই সন্দেহাতীত ভাবে প্রমাণ করতে পেরেছে। কু’রআনে যে শত শত বৈজ্ঞানিক তথ্যের ইংগিতে ভরা আয়াত পাওয়া গেছে, তা সব একসাথে করতে গেলে একটা বই লিখতে হবে। তাই আমি কিছু চমকপ্রদ আয়াত এবং সেগুলোতে কী ধরনের বৈজ্ঞানিক, ঐতিহাসিক, গাণিতিক তথ্যর ইংগিত পাওয়া গেছে— তা তুলে ধরলাম। বিস্তারিত জানতে www.quranandscience.comquranmiracles.com দেখুন।  (আর্টিকেলের বাকিটুকু পড়ুন)

এই উদাহরণ দিয়ে আল্লাহ কি বোঝাতে চান? – বাকারাহ ২৬-২৭

2_26

স্ত্রী-মশার মতো ছোট কিছু বা তারচেয়ে বড় কিছুর [বা তার উপরে কিছুর] উদাহরণ দিতে আল্লাহ  লজ্জাবোধ করেন না। বিশ্বাসীরা জানে যে, এটি তাদের প্রভুর কাছ থেকে আসা সত্য, কিন্তু অবিশ্বাসীরা বলে, “এই (মশার) উদাহরণ দিয়ে আল্লাহ কী বোঝাতে চান?”—এর দ্বারা তিনি অনেককে বিপথে যেতে দেন এবং এর দ্বারা তিনি অনেককে সঠিক পথ দেখান। কিন্তু শুধুমাত্র চরম অবাধ্যদেরকেই তিনি বিপথে যেতে দেন। [বাকারাহ ২৬]

mosquito

কু’রআন পড়ে সঠিক পথ পাবার একটি শর্ত হচ্ছে সবসময় মনে রাখা যে, কু’রআনের স্রষ্টা আল্লাহ تعالى সব জানেন, আমি সেই তুলনায় কিছুই জানি না। যখন আমরা এই ব্যাপারটি ভালোভাবে উপলব্ধি করতে পারব, তখন আমরা — “স্ত্রী মশার মতো ছোট কিছু বা তারচেয়ে বড় কিছুর উদাহরণ দিতে আল্লাহ লজ্জাবোধ করেন না” — এই ধরনের আয়াত পড়ে ভাবব না, “মশা! এত কিছু থাকতে মশা? আল্লাহ تعالى  কি আরও বড় কিছু, যেমন হাতি, ডাইনোসর— এগুলোর উদাহরণ দিতে পারতেন না?” এখানেই হচ্ছে মানুষের সমস্যা। যারা মনে করে—সে নিজে অনেক কিছু জানে, বিজ্ঞান নিয়ে তার অনেক পড়াশোনা—তাকে মশার উদাহরণ দিলে, কেন হাতির কথা বলা হলো না, তা নিয়ে তর্ক করে। হাতির উদাহরণ দিলে কেন ডাইনোসরের উদাহরণ দেওয়া হলো না, সেটা নিয়ে তর্ক করে। তাদের তর্কের কোনো শেষ নেই। এই সমস্যা ১৪০০ বছর আগে আরব কাফির, মুশরিকদের ছিল, এবং এই বিংশ শতাব্দীতে ‘আধুনিক’ উঠতি পণ্ডিতদের মধ্যেও রয়েছে—যারা মনে করে এই পুরো মহাবিশ্ব সৃষ্টি হয়েছে এক হঠাৎ দুর্ঘটনা থেকে, এর পেছনে কোনো সৃষ্টিকর্তা নেই। একইভাবে এই ধরনের সমস্যা আজকালকার ‘আধুনিক’ উঠতি মুসলিমদেরও আছে, যারা মনে করে কু’রআনের বাণীর মধ্যে অনেক ঘাপলা আছে, এবং তারা চিন্তা ভাবনা করে আল্লাহর تعالى পরিকল্পনা এবং সৃষ্টির মধ্যে অনেক ফাঁক-ফোঁকর বের করে ফেলেছে।  (আর্টিকেলের বাকিটুকু পড়ুন)

যারা মানুষের চিন্তার ক্ষমতার বাইরে এমন সব ব্যাপারে বিশ্বাস করে – বাকারাহ ৩

এর আগের আয়াতে আল্লাহ تعالى আমাদেরকে বলেছেন যে, কুর’আন পড়ে যদি আমরা কোনো লাভ পেতে চাই, তাহলে আমাদের প্রথম যেটা দরকার সেটা হচ্ছে তাকওয়া: আল্লাহর تعالى প্রতি পূর্ণ সচেতনতা—এটা বিশ্বাস করা যে আমার দিকে সবসময় ক্যামেরা এবং মাইক্রোফোন তাক করে রাখা হয়েছে। আমি যা বলছি, যা করছি, যেদিকে তাকাচ্ছি, যেসব বদ চিন্তা করছি, তার সবগুলোই রেকর্ড করা হচ্ছে এবং একদিন আল্লাহর تعالى সামনে আমার সব কুকর্ম রিপ্লে করে দেখানো হবে। যতক্ষণ আমাদের ভিতরে এই তাকওয়া না আসছে, ততক্ষণ কুর’আন পড়ে আমরা সঠিক পথনির্দেশ পাব না। আমরা এক লাইন কুর’আন পড়ব, আর দশটা প্রশ্ন করব: “এরকম কেন হলো? ওরকম কেন হলো না? না, এটা তো ঠিক হলো না? ”

এর পরের আয়াতে আল্লাহ‌ تعالى আমাদেরকে মুত্তাকী (আল্লাহর تعالى প্রতি পূর্ণ সচেতন) হওয়ার জন্য শর্তগুলো সম্পর্কে বলছেন—

  (আর্টিকেলের বাকিটুকু পড়ুন)

পিঁপড়া – আন-নামল ১৮

কু’রআনের আয়াতগুলো ভাষাতত্ত্ববিদদের জন্য তথ্যের খনি। আল্লাহ تعالى খুব সাধারণ দেখতে কিছু আয়াতে, সাধারণ কিছু গল্প বা কথোপকথনের মধ্য দিয়েই অসাধারণ সব তথ্য প্রকাশ করেন। যেমন, নিচের আয়াতটি দেখুন যেখানে আল্লাহ تعالى আমাদেরকে একটি স্ত্রী পিঁপড়ার একটি মাত্র কথার মধ্য দিয়ে আমাদেরকে পিঁপড়াদের সম্পর্কে কত ধরণের তত্থ্য দিয়েছেনঃ

আর যখন তারা পিঁপড়াদের উপত্যকায় পৌছিয়েছিল, একটি পিঁপড়া(স্ত্রী) বলেছিল, “হে পিঁপড়ারা, তোমাদের ঘরগুলোতে প্রবেশ কর, যাতে করে সুলায়মান এবং তার বাহিনী তোমাদেরকে না বুঝে পিষে না ফেলে”। (২৭:১৮)

আপনার কাছে মনে হবে, এতো ছোটদের কোনো গল্পের বইয়ের মত! এখানে পিঁপড়াদের সম্পর্কে আল্লাহ تعالى নতুন কী জানালেন আমাদেরকে?  (আর্টিকেলের বাকিটুকু পড়ুন)