তিনি মানবজাতিকে শিখিয়েছেন, যা তারা জানত না — আল-আলাক্ব — পর্ব ২

যিনি মানুষকে এক ঝুলন্ত গঠন থেকে সৃষ্টি করেছেন

আল্লাহ تعالى মানুষকে লক্ষ্য করতে বলছেন এক বিস্ময়কর বৈজ্ঞানিক তথ্যের উপর। মানুষকে তিনি সৃষ্টি করেছেন আলাক্ব অর্থাৎ জমাট বাঁধা রক্ত বা ঝুলন্ত এক গঠন থেকে। এই বাণী যখন মানুষকে দেওয়া হয়েছিল, তখন মানুষ জানত না এই আয়াতের গভীরতা কতখানি। আজকে আমরা অত্যাধুনিক স্ক্যানিং প্রযুক্তির মাধ্যমে দেখতে পেয়েছি ভ্রূণ মায়ের গর্ভের দেওয়ালে আঁকড়ে ধরে ঝুলে থাকে। আর আলাক্ব শব্দের অর্থই হচ্ছে এমন একটা কিছু, যা আঁকড়ে ধরে ঝুলে থাকে।

আল্লাহ تعالى যখন মানুষকে তাঁর সৃষ্টির ব্যাপারে বলেন, তখন তার মধ্যে কিছু উদ্দেশ্য থাকে। প্রথম উদ্দেশ্য হচ্ছে, আল্লাহর تعالى অসীম ক্ষমতা, সৃজনশীলতা এবং তাঁর প্রজ্ঞা সম্পর্কে মানুষকে চিন্তা করতে উৎসাহ দেওয়া। একটা মাত্র জমাট বাঁধা রক্ত থেকে একসময় চোখ, মুখ, কান, হাত, পা বের হয়ে বড় সড় একটা পরিপূর্ণ মানুষ তৈরি হয়ে যায়। জমাট বাধা রক্তের মধ্যে কোনো বিবেক, বুদ্ধি, চেতনা কিছুই নেই। এটা একটা বোধ শক্তিহীন জড় পদার্থ। অথচ এই রক্তের ফোঁটা থেকেই মহাবিশ্বের অন্যতম বুদ্ধিমান, চেতন, বিবেকবান, জটিল প্রাণীর জন্ম হয়। কীভাবে এক ফোঁটা রক্তের মধ্যে এত বিপুল পরিমাণের তথ্য থাকে যে, তা মানুষের প্রতিটি অঙ্গের আকৃতি, গঠন, চামড়ার রঙ, চোখের রঙ, উচ্চতা, শারীরিক ক্ষমতা, মস্তিষ্কের মতো জটিলতম যন্ত্র গঠন করার যাবতীয় নির্দেশ সংরক্ষণ করা থাকে?  (আর্টিকেলের বাকিটুকু পড়ুন)

তিনি অনন্ত বিদ্যমান, সব কিছুর ধারক — আয়াতুল কুরসি, আল-বাক্বারাহ ২৫৫

কু’রআনে কিছু আয়াত রয়েছে, যেখানে আল্লাহ تعالى আমাদের অনেক মানসিক সমস্যা এবং প্রশ্নের সমাধান দিয়ে দিয়েছেন। এই আয়াতগুলো আমরা যখন মনোযোগ দিয়ে পড়ি, তখন ধাক্কা খাই। যখন সময় নিয়ে ভেবে দেখি, তখন আমাদের হতাশা, অবসাদ, ডিপ্রেশন, কিছু না পাওয়ার দুঃখ, নিজের উপরে রাগ, অন্যের উপরে হিংসা, প্রিয়জনকে হারানোর বেদনা —এই সবকিছু কাটিয়ে ওঠার শক্তি খুঁজে পাই। আমরা অবাক হয়ে লক্ষ্য করি যে, আমরা এতদিন থেকে যেসব সমস্যায় ভুগছিলাম, তার সমাধান তো এই আয়াতেই ছিল! এরকম একটি আয়াত হচ্ছে আয়াতুল কুরসি। এই আয়াতের প্রতিটি বাক্যে শিরক থেকে দূরে থাকার শিক্ষা রয়েছে এবং একই সাথে আমরা দুনিয়াতে যে নানা ধরনের শিকলের মধ্যে আবদ্ধ হয়ে গেছি, তা থেকে বেড়িয়ে আসার উপায় শেখানো হয়েছে—

2_255

আল্লাহ, তিনি ছাড়া আর কোনো উপাসনার যোগ্য কেউ নেই, তিনি অনন্ত বিদ্যমান, সব কিছুর ধারক। তাঁকে তন্দ্রা বা নিদ্রা স্পর্শ করে না। আকাশগুলো এবং পৃথিবীতে যা কিছুই আছে, সবকিছু শুধুমাত্র তাঁর। কে আছে যে তার অনুমতি ছাড়া সুপারিশ করবে? তাদের দৃষ্টির সামনে এবং দৃষ্টির অগোচরে যা কিছুই আছে, তিনি তাঁর সব জানেন। তাঁর ইচ্ছা ছাড়া তাঁর জ্ঞানের কোনো কিছুই তারা আয়ত্ত করতে পারে না। তাঁর কুরসী আকাশগুলো এবং পৃথিবীকে ঘিরে রেখেছে। সেগুলোর রক্ষণাবেক্ষণ তাঁকে কখনো ক্লান্ত করে না। তিনি সবার ঊর্ধ্বে, সর্বোচ্চ ক্ষমতাবান। [আল-বাক্বারাহ ২৫৫]

  (আর্টিকেলের বাকিটুকু পড়ুন)