তিনি সেটাকে বলেন ‘হও’, আর তা হয়ে যায় — আল-বাক্বারাহ ১১৭

কীভাবে কোনো কিছুর সৃষ্টি হয়, এনিয়ে নানা ধর্মে নানা মতবাদ রয়েছে। কিছু ধর্ম মতে: বস্তু এবং শক্তি সবসময়ই ছিল, সেগুলোর শুধুই রূপান্তর হয়। এর বিরুদ্ধে খুব সহজ কিছু যুক্তি এবং পর্যবেক্ষণ দিয়ে তা ভুল প্রমাণ করা যায় (দেখুন আল-বাক্বারাহ ১০৮)। আবার কিছু ধর্ম (এমনকি বৈজ্ঞানিক মতবাদও) প্রচার করে: মহাবিশ্ব সৃষ্টির আগে এক মহা-মহাবিশ্ব ছিল, যেখানে যা কিছু সৃষ্টি হওয়া সম্ভব, তার সবকিছু সৃষ্টি হচ্ছে, এবং আমাদের মহাবিশ্বের মত আরও অসংখ্য মহাবিশ্ব রয়েছে।

আবার কিছু ধর্ম এবং বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব প্রচার করে: বস্তু এবং শক্তির আগে ‘কিছু’ একটা ছিল, যা থেকে সবকিছু এমনিতেই সৃষ্টি হয়েছে। আমাদের চারপাশে যে বৈচিত্র্যময় সৃষ্টিজগৎ আমরা দেখছি, তার জন্য কোনো বুদ্ধিমান বা ব্যক্তিত্ববান স্রষ্টার কোনো প্রয়োজন নেই। এগুলো সব কিছুই সেই ‘কিছু’ একটা থেকে এমনিতেই সৃষ্টি হয়েছে। —এর বিরুদ্ধেও খুব সহজ যুক্তি দিয়ে তা সহজেই ভুল প্রমাণ করা যায়।

এখন পর্যন্ত সবচেয়ে যুক্তিযুক্ত ধারণা, যার বিরুদ্ধে কোনো ফিলসফিকাল যুক্তি ধোপে টিকতে পারেনি, তা পাওয়া যায় কু’রআনে—

2_117

সবগুলো আকাশ এবং পৃথিবীর অস্তিত্বদানকারী তিনি। যখন তিনি কিছুর অস্তিত্ব দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন, তিনি সেটাকে শুধু বলেন: ‘হও’, আর তা হয়ে যায়। [আল-বাক্বারাহ ১১৭]

Hot spring 600

  (আর্টিকেলের বাকিটুকু পড়ুন)

সে সঠিক পথ থেকে একেবারেই হারিয়ে গেছে — আল-বাক্বারাহ ১০৮ পর্ব ২

হাজার বছর আগে মুসা عليه السلام নবীকে বনি ইসরাইলিরা নানা ধরনের প্রশ্ন করত: “আল্লাহ تعالى কোথায়? দেখাও আমাদেরকে। আল্লাহকে تعالى নিজের চোখে না দেখলে, নিজের কানে তাঁর আদেশ না শুনলে বিশ্বাস করব না।” হাজার বছর পরে আজ একবিংশ শতাব্দীতে এসে এখনও আল্লাহর تعالى সম্পর্কে সেই একই ধরনের প্রশ্ন করতে দেখা যায়। শুধু প্রশ্নগুলো আগের থেকে আরও ‘আধুনিক’ এবং ‘বৈজ্ঞানিক’ হয়েছে, এবং কথা ও যুক্তির মারপ্যাঁচে একটু বেশি গম্ভীর শোনায় —এই যা।

2_108

যেভাবে মুসাকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, তোমরাও কি সেভাবেই তোমাদের নবীকে প্রশ্ন করতে চাও? যে ঈমানকে কুফরি দিয়ে বদল করে, সে সঠিক পথ থেকে একেবারেই হারিয়ে গেছে। [আল-বাক্বারাহ ১০৮]

আজকের যুগে আল্লাহর تعالى অস্তিত্বকে অস্বীকার করে বিভিন্ন ধরনের নাস্তিকদের কিছু প্রশ্ন এবং দাবি দেখা যাক—

উঠতি নাস্তিক: আল্লাহ تعالى যদি সবকিছু সৃষ্টি করে থাকে, তাহলে তাকে সৃষ্টি করলো কে?

হতাশাগ্রস্থ নাস্তিক: সত্যিই যদি আল্লাহ تعالى থাকে, তাহলে পৃথিবীতে এত দুঃখ, কষ্ট, মুসলিমদের উপর এত অত্যাচার, এত প্রাকৃতিক দুর্যোগ, মহামারি হয় কেন? আল্লাহ تعالى এগুলো হতে দেয় কেন?

বুদ্ধি প্রতিবন্ধী নাস্তিক: আল্লাহ تعالى বলে কেউ আছে —এর পক্ষে কোনো প্রমাণ নেই। এখন পর্যন্ত কোনো বিজ্ঞান সম্মত প্রমাণ পাওয়া যায়নি যে, সৃষ্টিজগৎ কোনো অতিবুদ্ধিমান সত্তা বানিয়েছে। সুতরাং আল্লাহ تعالى বলে কেউ নেই।

আঁতেল নাস্তিক: আল্লাহ تعالى ধারণাটা আসলে মানুষের কল্পনা প্রসূত। মানুষ যখন কোনো প্রাকৃতিক ঘটনা ব্যাখ্যা করতে পারত না, তখন তারা মনে করত: নিশ্চয়ই কোনো অতিপ্রাকৃত সত্তা রয়েছে, যে এসব ঘটাচ্ছে। একারণে মানুষ এমন কোনো সত্তাকে কল্পনা করে নেয়, যার কোনো দুর্বলতা নেই। যেমন: তার ক্ষুধা, ঘুম পায় না; সে মারা যায় না; কেউ তাকে জন্ম দেয় না; তার কোনো শরীর নেই যেখানে সে আবদ্ধ; তার কোনো আকার নেই, যা তাকে দুর্বল করে দেবে। এরকম নিরাকার, অবিনশ্বর, অসীম ক্ষমতা ইত্যাদি যত সব কল্পনাতীত গুণ মানুষচিন্তা করে বের করতে পেরেছে, তার সবকিছু ব্যবহার করে সে এক স্রষ্টাকে সৃষ্টি করেছে। এর মানে তো এই না যে, স্রষ্টা বলে আসলেই কেউ আছে?

ঘৃণাস্তিক: ধর্মের নামে যে পরিমাণ মানুষ হত্যা হয়েছে, আর অন্য কোনোভাবে এত মানুষ মারা যায়নি। ধর্মের কারণে মানুষে মানুষে ঝগড়া, ঘৃণা, মারামারি, দলাদলি, এক জাতি আরেক জাতিকে মেরে শেষ করে ফেলা —এমন কোনো খারাপ কাজ নেই যা হয় না। পৃথিবীতে যদি কোনো ধর্ম না থাকতো, তাহলে মানুষে-মানুষে এত ভেদাভেদ, এত রক্তারক্তি কিছুই হতো না। যদি আল্লাহ বলে আসলেই কেউ থাকে, তাহলে ধর্মের নামে এত হত্যা কেন হয়? ধার্মিকরা এত অসাধু হয় কেন? যতসব চোর, লম্পট, প্রতারকরা দেখা যায় টুপি-দাঁড়ি পড়ে মসজিদে নামাজ ঠিকই পড়ে।

এই প্রশ্নগুলোর কিছু উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করা হলো—

earth good and evil  (আর্টিকেলের বাকিটুকু পড়ুন)