কেন আল্লাহ আমাদের সাথে কথা বলেন না? — আল-বাক্বারাহ ১১৮

আজকাল সুধীবৃন্দ প্রশ্ন করেন, “সত্যিই যদি আল্লাহ বলে কেউ থাকে, তাহলে তিনি আমাদের সাথে কথা বলেন না কেন? আমি তো কোনোদিন কোনো অলৌকিক ঘটনা ঘটতে দেখলাম না? প্রমান কী যে আল্লাহ বলে আসলেই কেউ আছেন?” প্রথমত, তাদেরকে অভিনন্দন! তারা এমন একটি জটিল, আধুনিক, যুগোপযোগী প্রশ্ন আবিষ্কার করেছেন, যা ১৪০০ বছর আগে আরবের মরুভূমিতে ঘুরে বেড়ানো যাযাবর, অশিক্ষিত, অসামাজিক বেদুইনরা রাসুলকে عليه السلام করেছিল। শুধু তাই না, তাদের আগেও নবীদেরকে একই প্রশ্ন করা হয়েছিল। এর উত্তর আল্লাহ تعالى কু’রআনেই দিয়ে দিয়েছেন—

2_118

যারা বোঝে না, তারা বলে, “কেন আল্লাহ تعالى আমাদের সাথে কথা বলে না?” বা “আমাদের কাছে কোনো অলৌকিক নিদর্শন আসে না কেন?” ওদের আগের প্রজন্মও একই কথা বলে গেছে। ওদের সবার অন্তর আসলে একই রকম। আমি অবশ্যই আমার নিদর্শনগুলো যথেষ্ট পরিষ্কার করে দিয়েছি সেই সব মানুষের কাছে, যারা নিশ্চিত হতে চায়। [আল-বাক্বারাহ ১১৮]

nature-pattern-photography-10

যারা এই ধরনের প্রশ্ন করে, তাদের আসল সমস্যা হচ্ছে: তারা মনে করে না যে, ইসলাম এমন কোনো অসাধারণ ধর্ম, যা তাদের মানতে হবে। অথবা তারা মনে করে না যে, ইসলাম তাদেরকে এমন কিছু দিতে পারে, যা তারা নিজেরাই চিন্তা ভাবনা করে বের করতে পারে না। তাই তাদের দাবি হচ্ছে: আল্লাহ تعالى যেন তাদের সাথে সরাসরি কথা বলে তাদেরকে বোঝান, কেন তারা ইসলাম মানবে? ইসলামে এমন কী আহামরি কিছু আছে যে, তা মানতে হবে?

আপনাকে যখন কোনো গাড়ির সেলসম্যান একটা সাধারণ গাড়ি বিক্রি করার চেষ্টা করে, সে আপনাকে অনেক বোঝাবে: কেন আপনার গাড়িটা কেনা উচিত, এই গাড়ির চমৎকার বৈশিষ্ট্য কী যা অন্য গাড়ির নেই, কীভাবে এই গাড়িটা সমাজে আপনার স্ট্যাটাস বাড়িয়ে দেবে ইত্যাদি। সে নানা ভাবে চেষ্টা করবে আপনাকে গাড়িটা গছিয়ে দেওয়ার, কারণ গাড়িটা এমন কোনো অসাধারণ কোনো গাড়ি নয়, যা কেনার জন্য মানুষ গভীর আগ্রহে কয়েক মাস আগে থেকে এপয়েন্টমেন্ট নেওয়ার জন্য লাইন ধরে থাকে।

ধরুন আপনি একদিন সিদ্ধান্ত নিলেন: আপনি একটা বিশেষ দামী ব্র্যান্ডের গাড়ি কিনবেন। আপনার বন্ধুরা আপনাকে অনেক বুঝিয়েছে যে, এর চেয়ে ভালো, নিরাপদ গাড়ি আর নেই। আপনি নিজেও অনেক পড়াশুনা করে দেখলেন যে, আসলেই এর চেয়ে শক্তসামর্থ্য, নিরাপদ গাড়ি এখন পর্যন্ত কোনো কোম্পানি বানায়নি। কিন্তু কেনার আগে আপনি দাবি করলেন: সেই গাড়ির কোম্পানির সিইও-র সাথে আপনি নিজে কথা বলবেন, তারপরেই সেই গাড়ি কিনবেন, নাহলে কিনবেন না। সিইও যেন নিজে আপনাকে ফোন করে তার গাড়ি কিনতে অনুরোধ করে।  (আর্টিকেলের বাকিটুকু পড়ুন)

তোমরা কি বুদ্ধি ব্যবহার করো না? — আল-বাক্বারাহ ৭৬-৭৯

মসজিদে বসে নামায শেষে চৌধুরী সাহেব তার বন্ধুর সাথে ব্যবসার ব্যাপারে আলাপ করছেন। তিনি দুঃখ করে বন্ধুকে বললেন, “ভাই, ট্যাক্স দিতে দিতে অবস্থা খারাপ। ব্যবসার খরচ করে কুলাতে পারছি না।” বন্ধু জিজ্ঞেস করলেন, “আপনি ট্যাক্স পুরোটা দেন নাকি? আমি তো নামমাত্র ট্যাক্স দেই।” তিনি অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলেন, “বলেন কি? কীভাবে?” বন্ধু বললেন , “আমি একজনকে টাকা খাওয়াই। সে আমাকে ট্যাক্স সার্টিফিকেট দিয়ে দেয়। আপনার সাথে কালকে পরিচয় করিয়ে দেব।” চৌধুরী সাহেব এদিক ওদিক তাকিয়ে নিচু গলায় বললেন, “ছি, ছি, ভাই। মসজিদে বসে এই সব কথা বলতে হয় না, এটা আল্লাহর ঘর। চলেন, ওই চায়ের দোকানে গিয়ে বাকি আলাপ করি।”

আল্লাহর تعالى সম্পর্কে এই ধরনের চরম অবমাননাকর ধারণার একটি উদাহরণ দেওয়া আছে এই আয়াতে—

2_76

যখন তারা বিশ্বাসীদের সাথে দেখা করে, তখন বলে, “আমরা ঈমানদার”; কিন্তু যখন তারা নিজেদের মধ্যে থাকে, তখন বলে, “তোমরা কেন তাদেরকে বলে দিলে আল্লাহ আমাদেরকে কী প্রকাশ করেছেন? তারা তো আল্লাহর সামনে এনিয়ে তোমাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দাঁড় করাবে? তোমরা কি বুদ্ধি ব্যবহার করো না?” [আল-বাক্বারাহ ৭৬]

  (আর্টিকেলের বাকিটুকু পড়ুন)