যারা তাদের সম্পদ দিন-রাত প্রকাশ্যে, গোপনে আল্লাহর পথে খরচ করে — আল-বাক্বারাহ ২৭৪

যারা তাদের সম্পদ দিন-রাত প্রকাশ্যে, গোপনে আল্লাহর পথে খরচ করে — তাদের পুরস্কার তাদের প্রতিপালকের কাছে রাখা আছে। তাদের কোনো ভয় নেই, তারা কোনো আফসোস করবে না। [আল-বাক্বারাহ ২৭৪]

এই আয়াতে আল্লাহ تعالى সেই সব মানুষদের কথা বলেছেন, যারা সবসময় দান করেন। দিনের বেলা রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় কোনো অভাবীকে দেখলে দান করেন। কোনো সংগঠন এসে সাহায্য চাইলে দান করেন। কেউ তাকে অভাবী মানুষের দুর্দশার কথা শোনালে তিনি দান করার জন্য ছুটে যান। কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ, মহামারিতে দুস্থ মানুষদের দান করার সুযোগ পেলে তিনি কখনও ছেড়ে দেন না। আত্মীয়রা চাওয়ার আগেই তিনি তাদের অবস্থা সম্পর্কে খোঁজখবর নিয়ে তাদেরকে সাহায্য করেন। মসজিদে কারও চেহারা দেখে সে কষ্টে আছে মনে হলে, তিনি তার কষ্ট কমাতে এগিয়ে যান। এই ধরনের নিবেদিত প্রাণ মানুষরা দিনে, রাতে, প্রকাশ্যে, গোপনে যখন যেভাবে পারেন দান করতে থাকেন। এদের সম্পর্কে আল্লাহ تعالى বলছেন যে, এদের পুরস্কার বিশেষভাবে তাঁর تعالى কাছেই জমা আছে। এরা কিয়ামতের দিন যখন তাঁর تعالى কাছে আসবেন, সেদিন তাদের কোনো ভয়, কোনো আফসোস বা দুঃখ থাকবে না। আল্লাহ تعالى এদেরকে বিরাট পুরস্কার দেবেন। এমন পুরস্কার, যা তিনি تعالى নিজের কাছে রেখেছেন। অন্য কাউকে তিনি تعالى এত বড় পুরস্কার ধরে রাখার জন্য যোগ্য মনে করেননি।

প্রশ্ন হচ্ছে: কেন দানশীলদের জন্য এত বড় পুরস্কার? এই ধরনের পুরস্কার কি পাঁচ ওয়াক্ত নামাজি, নিয়মিত রোজাদারদের জন্য থাকা উচিত ছিল না?

ঘরে বসে নামাজ, রোজা করা সোজা কাজ। কিন্তু নিজের কষ্টের সম্পদ কাউকে দান করা কঠিন ব্যাপার। দান করতে গেলেই মাথার মধ্যে হাজারো চিন্তা শুরু হয়ে যায়, “যদি দান করি তাহলে বাচ্চার পড়ার খরচের জন্য টাকা থাকবে? আগামী কয়েকমাস বাড়ি ভাড়া দিতে পারবো? পরিবারের কেউ গুরুতর অসুস্থ হলে তার চিকিৎসার টাকা কীভাবে দেব? গাড়ি-বাড়ি কেনার জন্য টাকা জমাবো কীভাবে?” — যখনি আমরা কোনো দান করার পরিস্থিতিতে পড়ি, তখনি আমরা একেক জন চার্টার্ড একাউন্টেন্ট হয়ে যাই। মুহূর্তের মধ্যে আমাদের যাবতীয় সম্পদ, বিনিয়োগ এবং ঝুঁকির হিসাব মাথার মধ্যে গিজগিজ করতে থাকে। দান করতে গেলেই বোঝা যায় কার আল্লাহর تعالى প্রতি বিশ্বাস কতটা দৃঢ়।

একারণেই যারা নিজের সাথে প্রতিনিয়ত যুদ্ধে জয়ী হয়ে দিন-রাত দান করতে পারেন, তাদের বিশ্বাস অত্যন্ত মজবুত হয়ে যায় এবং তাদের অন্তর খুবই শক্তিশালী হয়ে যায়। তখন তাদের ভেতরে বেশ কিছু ইতিবাচক পরিবর্তন আসে। যেমন, আল্লাহর تعالى প্রতি আস্থা অনেক বেড়ে যায়, ভবিষ্যৎ নিয়ে অহেতুক দুশ্চিন্তা করা কমে যায়, অমূলক ভয়-ভীতিকে তারা জয় করেন, নেতিবাচক চিন্তা কমে যায়, অন্যের প্রতি আত্মত্যাগ করার মানসিকতা তৈরি হয়, সহমর্মিতা বোধ বাড়ে। একারণেই যারা নিয়মিত দান করেন, তাদের অন্তর মজবুত হয়, অল্পতেই মন ভেঙ্গে পড়ে না। দান করাটা হচ্ছে কঠিন পরিস্থিতিতেও অন্তরকে আল্লাহর تعالى আদেশ মানানোর জন্য এক ধরনের ট্রেনিং। দুর্ভিক্ষ, মহামারি বা কষ্টের সময় মানুষকে দান করা, যখন কিনা নিজেরই অভাব চলছে, আত্মীয়দেরকে দান করা যাদের সাথে সম্পর্ক ভালো না—এগুলো বেশ কঠিন কাজ। এগুলো আমাদেরকে সহজ, আরামের ইবাদতের গণ্ডি থেকে বের করে, কঠিন পরিস্থিতিতেও আল্লাহর تعالى প্রতি আস্থা রাখা, তাঁর تعالى আদেশ মেনে চলার ট্রেনিং দেয়।[৭]

যারা তাদের সম্পদ দিন-রাত প্রকাশ্যে, গোপনে আল্লাহর পথে খরচ করে

মানুষের ভিতরে স্বার্থপরতা এবং কৃপণতা স্বভাবজাত। মানুষ সবসময়ই চেষ্টা করে নিজের লাভের জন্য কাজ করার। নিজের সম্পদকে যতটুকু সম্ভব আগলে রাখার, যেন সে নিজের সম্পদ নিজে উপভোগ করতে পারে। কিন্তু এই আয়াতে আল্লাহ تعالى এমন মানুষদের কথা বলছেন, যারা তাদের স্বার্থপরতা এবং কৃপণতাকে জয় করতে পেরেছে। এরা দিন-রাত দান করে। যখন, যেভাবে পারে আল্লাহর تعالى পথে তাদের সম্পদ খরচ করে। যারা মানুষের এই দুটি দুর্বলতাকে জয় করতে পারেন, তারা আল্লাহর تعالى বিশেষ অতিথি হয়ে যান।

শুধু তাই না, এরা অভাবের সময়ও দান করেন। আল্লাহ تعالى এদের সম্পর্কে বলেছেন—

তোমরা তোমাদের পালনকর্তার ক্ষমা পাওয়ার চেষ্টা করো এবং এমন এক বাগান পাওয়ার জন্য ছুটে যাও, যেই বাগান সবগুলো আকাশ এবং পৃথিবীর আকৃতির মতো বিশাল, যা তৈরী করা হয়েছে আল্লাহর প্রতি সবসময় সাবধানীদের জন্য। যারা সচ্ছলতায় ও অভাবের সময় ব্যয় করে, যারা নিজেদের রাগকে সংবরণ করে, আর মানুষের প্রতি ক্ষমা প্রদর্শন করে। আর যারা ভালো কাজ করে, আল্লাহ অবশ্যই তাদের ভালবাসেন। [আলে ইমরান- ১৩৩-১৩৪]

তাদের পুরস্কার তাদের প্রতিপালকের কাছে রাখা আছে

এই আয়াতে আল্লাহর تعالى শব্দ চয়ন সূক্ষ্ম। তিনি বলেননি مَعَ رَبِّهِمْ বরং তিনি বলেছেন عِندَ رَبِّهِمْ। আরবিতে ‘কাছে রয়েছে’ বোঝানোর জন্য দুটো শব্দ রয়েছে مَعَ মা’আ এবং عِندَ ই’ন্দা। মা’আ সাধারণত ব্যবহার করা হয় কোনো কিছু অন্য কিছুর সাথে রয়েছে বোঝানোর জন্য।[১১] কিন্তু ই’ন্দা ব্যবহার করা হয় কোনো কিছু অন্য কিছুর সাথে যেখানে থাকা যথাযথ, ঠিক সেখানেই রয়েছে—এটা বোঝানোর জন্য।[১১] যেমন, আমরা যদি বলি: ছাত্রটি প্রধান শিক্ষকের সাথে কোথাও রয়েছে — সেক্ষেত্রে মা’আ ব্যবহার করব, কারণ ছাত্রটি হয়ত প্রধান শিক্ষকের সাথে বাজার করতে গেছে।[১১] কিন্তু যদি বলি: ছাত্রটি প্রধান শিক্ষকের সাথে প্রধান শিক্ষকের কক্ষে রয়েছে — তাহলে ই’ন্দা, কারণ সেখানে প্রধান শিক্ষক তার যথাযথরূপে রয়েছেন। এই আয়াতে আল্লাহ تعالى সুন্দর করে বলেছেন: তাদের জন্য যে শুধু পুরস্কার রয়েছে তা-ই নয়, সেই পুরস্কার রয়েছে একদম যথাযথ জায়গায়: আল্লাহর تعالى নিজের কাছে।[১১] এছাড়াও এই আয়াতে তিনি বিশেষভাবে বলেছেন, “তাদের প্রতিপালকের কাছে রয়েছে।” তিনি বলেননি “আল্লাহর কাছে রয়েছে”। “তাদের রব” শব্দটি ব্যবহার করে তিনি تعالى তাদের সাথে তাঁর تعالى ঘনিষ্ঠতাকে ফুটিয়ে তুলেছেন।

আমরা যখন খবর পাই যে, আমাদের কোনো বিশেষ অর্জনের জন্য প্রধানমন্ত্রী নিজে আমাদেরকে পুরস্কার দেবেন, তখন আমাদের খুশি দেখে কে? আমাদের নিকটআত্মীয়রা গর্ব করে বলে বেড়ায়, “ওকে প্রধানমন্ত্রী নিজে পুরস্কার দেওয়ার জন্য ডেকেছেন! আমাদের চৌদ্দগুষ্টিতে কেউ প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে পুরস্কার পায়নি। কত বড় সম্মান আমাদের!” আর এই আয়াতে আল্লাহ تعالى বলছেন যে, এই ধরনের দানশীল, নিবেদিত মানুষদের পুরস্কার তিনি تعالى নিজের কাছে রেখেছেন। কিয়ামতের দিন তাদেরকে তিনি تعالى নিজে পুরস্কার দেবেন। বিশ্বজগতের প্রতিপালক নিজে এসে পুরস্কার দেওয়া কী বিরাট ব্যাপার হতে পারে, সেটা আমরা কল্পনাও করতে পারবো না। কিয়ামতের দিন এই চরম সৌভাগ্যবান মানুষগুলোর কোনো ভয় থাকবে না, যেদিন আমরা সবাই ভয়ে, আতঙ্কে থরথর করে কাঁপতে থাকবো। যেদিন আমরা দুনিয়ায় করা হাজারো ভুলের জন্য দুঃখে, আফসোসে মরে যেতে চাইবো, সেদিন এই দানবীরদের কোনো দুঃখ, আফসোস থাকবে না। তারা থাকবেন আল্লাহর تعالى একান্ত সান্নিধ্যে, চিরসুখী।

সুরাহ আল-বাক্বারাহ’তে ধারাবাহিকভাবে প্রায় দশটি আয়াতে আল্লাহ تعالى আমাদেরকে দান করার জন্য উদ্বুদ্ধ করলেন। এই আয়াত সেই ধারাবাহিক আয়াতগুলোর শেষ আয়াত। আমরা প্রথম থেকে সবগুলো আয়াত যদি পড়ি, তাহলে আমরা পুরো ছবিটি দেখতে পাবো—

[২৬১] যারা আল্লাহর পথে তাদের সম্পদ খরচ করে, তাদের উপমা হলো একটি শস্য বীজের মতো, যা থেকে সাতটি শীষ জন্মে, প্রতিটি শীষে থাকে একশটি শস্য বীজ। আল্লাহ যাকে ইচ্ছা বহুগুণে বাড়িয়ে দেন। আল্লাহর ভাণ্ডার অনেক প্রশস্ত, তিনি সবচেয়ে ভালো জানেন।  [২৬২] যারা আল্লাহর পথে তাদের সম্পদ খরচ করে, তারপরে দানের কথা মনে করিয়ে খোটা দেয় না বা কোনো কষ্টও দেয় না, তারাই তাদের রবের কাছে প্রতিদান পাবে, তাদের কোনো ভয় নেই, তারা কোনো দুঃখও করবে না।  [২৬৩] দান করে তারপর কষ্ট দেওয়ার থেকে সুন্দর কথা বলা এবং ক্ষমা করা উত্তম। আল্লাহ ধনী-অভাবহীন এবং একইসাথে অত্যন্ত সহনশীল।

[২৬৪] বিশ্বাসীরা শোনো, দানের কথা মনে করিয়ে খোটা দিয়ে এবং কষ্ট দিয়ে তোমাদের দানকে বরবাদ করে দিয়ো না, সেই লোকের মতো, যে কিনা দান করে মানুষকে দেখানোর জন্য এবং আল্লাহ ও আখিরাতে বিশ্বাস রাখে না। ওর উদাহরণ হলো একটা বড় পাথরের মতো, যার উপরে কিছুটা মাটির আস্তর জমে, কিন্তু তারপর ভারি বৃষ্টি এসে সব মাটি ধুয়ে আবার খালি পাথর রেখে যায়। সে যা অর্জন করলো, তার কিছুই তার আর কাজে লাগলো না। আল্লাহ অবিশ্বাসী লোকদের পথ দেখান না।  [২৬৫] আর যে আল্লাহকে খুশি করার আশায় এবং নিজের বিশ্বাসকে মজবুত রাখার জন্য তার সম্পদ খরচ করে, তার উপমা হলো উঁচু ভূমিতে গাছে ঘেরা এক ঘন সবুজ বাগানের মতো, যেখানে ভারি বৃষ্টি হলে দ্বিগুণ ফলন হয়। আর ভারি বৃষ্টি যদি না-ও হয়, হাল্কা ঝিরঝির বৃষ্টিই তার জন্য যথেষ্ট। তোমরা যা কিছুই করো, আল্লাহ তার সব দেখেন।

[২৬৬] তোমাদের মধ্যে কেউ কি চাইবে যে, তার একটি গাছে ঘেরা ঘন সবুজ বাগান থাকুক, আঙুর এবং খেজুরে ভরা, যার ভেতর দিয়ে ঝর্ণা ধারা বয়ে যায়, যেখানে সব ধরনের ফল-ফসল হয়, আর সে একসময় বয়সের ভারে নুয়ে পড়ুক এবং তার সন্তানগুলোও হোক দুর্বল? তারপর এক আগুনের ঘূর্ণি এসে সব জ্বালিয়ে পুড়িয়ে ছারখার করে দিক? এভাবেই আল্লাহ তোমাদেরকে তার বাণী পরিষ্কার করে দেন, যেন তোমরা চিন্তাভাবনা করো।

[২৬৭] বিশ্বাসীরা শোনো, তোমরা যা কিছু অর্জন করেছ, আর যা কিছু আমি তোমাদেরকে পৃথিবী থেকে দিয়েছি, তার মধ্যে থেকে ভালোগুলো আল্লাহর পথে খরচ করো। খারাপ জিনিসগুলো দেওয়ার নিয়ত করবে না, যেগুলো যদি কেউ তোমাদেরকে দিত, তাহলে তোমরা ঘৃণায় চোখ বুজে তা নিতে। আর জেনে রেখো, আল্লাহ সকল চাহিদার ঊর্ধ্বে, তিনি অত্যন্ত প্রশংসিত।  [২৬৮] শয়তান তোমাদেরকে অভাবের ভয় দেখায়, আর তোমাদেরকে অশ্লীল কাজ করতে তাগাদা দেয়। কিন্তু আল্লাহ তোমাদেরকে তাঁর পক্ষ থেকে ক্ষমা এবং প্রাচুর্যের নিশ্চয়তা দেন। আল্লাহ তো সবকিছু ঘিরে আছেন, তিনি সব জানেন।  [২৬৯] তিনি যাকে চান, তাকে প্রজ্ঞা দান করেন। আর যাকে প্রজ্ঞা দান করা হয়েছে, সে বিরাট কল্যাণ পেয়ে গেছে। আর চিন্তাশীল মানুষরা ছাড়া কেউ শিক্ষা নেবে না।

[২৭০] তোমরা যা কিছুই খরচ করো, বা যেটাই মানত করো, আল্লাহ অবশ্যই তা জানেন। আর যালিমদের সাহায্য করার কেউ নেই। [২৭১] তোমরা যদি তোমাদের দানের কথা প্রকাশ করে দাও, তাহলে তাতেও কল্যাণ আছে। আর যদি তা গোপন রাখো এবং তা অভাবীদের দাও, তাহলে সেটা তোমাদের জন্য আরও বেশি ভালো হবে। তোমাদের গুনাহগুলোর কিছু মাফ করার উপায় হয়ে যাবে। আর তোমাদের সব কাজের ব্যাপারে আল্লাহ খবর রাখেন।

[২৭২] ওরা সঠিক পথে চলল কি না, তা তোমার দায়িত্ব নয়। বরং আল্লাহ যাকে চান, তাকে সঠিক পথে নিয়ে আসেন। তোমরা ভালো যা কিছুই খরচ করো না কেন, সেটা তোমাদের স্বার্থেই হবে, কারণ তোমরা শুধুমাত্র আল্লাহকে পাওয়ার উদ্দেশ্যেই তা খরচ করো। আর ভালো যা কিছুই তোমরা খরচ করবে, সেটার পুরো প্রতিদান তোমাদেরকে দেওয়া হবে। তোমাদের উপর একটুও অন্যায় করা হবে না।

[২৭৩] তোমাদের দান সেই অভাবীরা পাবে, যারা আল্লাহর পথে এমনভাবে নিবেদিত যে, তারা জীবিকার খোঁজে বের হতে পারে না। তারা মানুষের কাছে হাত পাতেন না দেখে অজ্ঞরা মনে করে যে, তাদের কোনো অভাব নেই। কিন্তু তুমি তাদের লক্ষণগুলোর দিকে খেয়াল করলে বুঝতে পারবে। তারা কখনও নাছোড়বান্দার মতো চায় না। আর তোমরা ভালো যা কিছুই দান করবে, আল্লাহ অবশ্যই সে ব্যাপারে সব জানেন।  [২৭৪] যারা তাদের সম্পদ গোপনে এবং প্রকাশ্যে রাতের বেলায় এবং দিনের বেলায় আল্লাহর পথে খরচ করে — তাদের পুরস্কার তাদের প্রতিপালকের কাছে আছে। তাদের কোনো ভয় নেই, তারা কোনো আফসোস করবে না।

এই আয়াতগুলো থেকে আমরা বেশ কিছু শিক্ষা নিতে পারি—

  • ১) দান করে দানের কথা মনে করিয়ে দিয়ে কষ্ট দিলে তা বরবাদ হয়ে যায়।
  • ২) দান করার সময় আল্লাহ ছাড়া অন্য কাউকে খুশি করার আশা থাকলে, বা লোক দেখানো দান হয়ে গেলে তা বরবাদ হয়ে যায়।
  • ৩) মানুষকে অনুপ্রাণিত করার জন্য প্রকাশ্যে দান করা যেতে পারে। তবে গোপনে দান করা বেশি ভালো।
  • ৪) সম্মানিত মানুষরা অভাবের সময় অন্যের কাছে হাত পাতেন না। আমাদেরকে বুঝতে হবে কাদের সাহায্য দরকার এবং নিজে থেকে এগিয়ে যেতে হবে সাহায্য করার জন্য।
  • ৫) ঠিকভাবে দান করলে তার সাতশ গুণ বেশি পুরস্কার আল্লাহ দেবেন। শুধু তাই না, যাকে ইচ্ছা আরও বাড়িয়ে দেবেন।
  • ৬) যারা নিয়মিত দান করে, তাদের কোনো ভয় নেই, তারা কোনো আফসোস করবে না।

[১] বাইয়িনাহ এর কু’রআনের তাফসীর। [২] ম্যাসেজ অফ দা কু’রআন — মুহাম্মাদ আসাদ। [৩] তাফহিমুল কু’রআন — মাওলানা মাওদুদি। [৪] মা’রিফুল কু’রআন — মুফতি শাফি উসমানী। [৫] মুহাম্মাদ মোহার আলি — A Word for Word Meaning of The Quran [৬] সৈয়দ কুতব — In the Shade of the Quran [৭] তাদাব্বুরে কু’রআন – আমিন আহসান ইসলাহি। [৮] তাফসিরে তাওযীহুল কু’রআন — মুফতি তাক্বি উসমানী। [৯] বায়ান আল কু’রআন — ড: ইসরার আহমেদ। [১০] তাফসীর উল কু’রআন — মাওলানা আব্দুল মাজিদ দারিয়াবাদি [১১] কু’রআন তাফসীর — আব্দুর রাহিম আস-সারানবি [১২] আত-তাবারি-এর তাফসীরের অনুবাদ। [১৩] তাফসির ইবন আব্বাস। [১৪] তাফসির আল কুরতুবি। [১৫] তাফসির আল জালালাইন। [১৬] লুঘাতুল কুরআন — গুলাম আহমেদ পারভেজ। [১৭] তাফসীর আহসানুল বায়ান — ইসলামিক সেন্টার, আল-মাজমাআহ, সউদি আরব [১৮] কু’রআনুল কারীম – বাংলা অনুবাদ ও সংক্ষিপ্ত তাফসীর — বাদশাহ ফাহাদ কু’রআন মুদ্রণ কমপ্লেক্স। [১৯] তাফসির আল-কাবির। [২০] তাফসির আল-কাশ্‌শাফ।

নতুন আর্টিকেল বের হলে জানতে চাইলে কু’রআনের কথা ফেইসবুক পেইজে লাইক করে রাখুন—

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *