তোমরা ভালো যা কিছুই করো না কেন, আল্লাহ সে ব্যাপারে অবশ্যই জানেন —আল-বাক্বারাহ ২১৫

আজকাল অনেক আধুনিক মুসলিম ধর্ম মানার কোনো কারণ খুঁজে পান না। তারা ভাবেন যে, ধর্মীয় রীতিগুলো অনুসরণ করা, যেমন নামাজ পড়া, রোজা রাখা —এগুলো করে কী হবে? এগুলো করে কী মানুষের কোনো লাভ হচ্ছে? মানুষের কষ্ট কমছে? অভাব দূর হচ্ছে? সমাজের সংস্কার হচ্ছে? — তাদের জন্য এই আয়াতটি অনুপ্রেরণা দেবে—
2_214

ওরা তোমাকে জিজ্ঞেস করে: কীসে তারা খরচ করবে? বলে দাও, “তোমরা ভালো যা কিছুই খরচ করো, প্রথমত সেটা হবে তোমাদের বাবা-মার জন্য, তারপর নিকটজন, এতিম, অভাবী, অসহায় ভ্রাম্যমান মানুষদের জন্য। আর তোমরা ভালো যা কিছুই করো না কেন, আল্লাহ সে ব্যাপারে অবশ্যই জানেন।” [আল-বাক্বারাহ ২১৫]

পৃথিবীর মূল ধর্মগুলোর মধ্যে ইসলাম হচ্ছে একমাত্র ধর্ম, যেখানে মানুষের জন্য খরচ করা বাধ্যতামূলক। ইসলামে শুধু মানুষের জন্য খরচ করার নির্দেশই দেওয়া হয়নি, একই সাথে কার জন্য কীভাবে খরচ করতে হবে, সেটাও সুন্দরভাবে বলে দেওয়া হয়েছে। ইসলামই একমাত্র ধর্ম, যেখানে বিশ্বাসের পাঁচটি মূল স্তম্ভের মধ্যে একটি হলো বাধ্যতামূলক দান। যারা মনে করেন: মানব ধর্মই আসল ধর্ম, মানুষের উপকার করতে পারাটাই আসল কথা, নামাজ, রোজা করে কী হবে? —তারা হয়তো জানেন না যে, মানব ধর্মের যে সব ব্যাপার তাদের কাছে এত ভালো লাগে, সেগুলো ইসলামের অংশ মাত্র। একজন প্রকৃত মুসলিম শুধুই একজন নিয়মিত নামাজী, রোজাদার নন, একই সাথে তিনি একজন দানশীল মানুষ, একজন চরিত্রবান, আইনের প্রতি অনুগত, আদর্শ নাগরিক।

2_215_title

সুরা আল-বাক্বারাহ’তে এ পর্যন্ত আমরা তিন বার দান করার নির্দেশ পেলাম। প্রশ্ন হচ্ছে, কেন কুরআনে এতবার দান করার কথা বলা হয়েছে?

আপনি দেখবেন: কিছু মানুষ আছে যারা পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ে, রমযানে ত্রিশটা রোজা রাখে, কিন্তু গত এক বছরেও কোনোদিন কোনো এতিমখানায় একটা টাকাও দিতে পারেনি। ড্রাইভার, কাজের বুয়া, বাড়ির দারোয়ান তার কাছে বার বার টাকা চাইতে এসে— “দিবো, দিবো, রমজান আসুক” —এই শুনে খালি হাতে ফিরে গেছে। গরিব আত্মীয়স্বজন এসে কয়েকদিন থেকে ফিরে গেছে, কিন্তু কোনো টাকা নিয়ে যেতে পারেনি। মসজিদে বহুবার সে বিভিন্ন উদ্যোগের জন্য টাকার আবেদন শুনেছে, কিন্তু কোনোদিন পকেটে হাত দিয়ে একটা একশ টাকার নোট বের করে দিতে পারেনি। এয়ারকন্ডিশনড মসজিদে বসে নামাজ পড়া সোজা কাজ, কিন্তু পকেট থেকে হাজার টাকা বের করে গরিব আত্মীয়, প্রতিবেশী, এতিমখানায় দেওয়া যথেষ্ট কঠিন কাজ। এর জন্য ঈমান লাগে।  (আর্টিকেলের বাকিটুকু পড়ুন)

তোমরা কথা দিয়ে কথা রাখোনি — আল-বাক্বারাহ ৮৩ – পর্ব ১

আল্লাহ تعالى এই আয়াতে আমাদেরকে এমন কিছু করতে বলবেন, যেগুলো আমরা সচরাচর শুনতে চাই না। বরং কেউ আমাদেরকে এই কথাগুলো বললে আমাদের গা জ্বালা করে, আমরা নানা টালবাহানা করে, অজুহাত দেখিয়ে এগুলো এড়িয়ে যেতে যাই। আজকে আমরা মুসলিমরা কত নীচে নেমে গেছি, সেটা এই আয়াত থেকে একেবারে পরিষ্কার হয়ে বেড়িয়ে যাবে—

2_83

মনে করে দেখ, যখন আমি বনী ইসরাইলের কাছ থেকে অঙ্গীকার নিয়েছিলাম: “আল্লাহ ছাড়া আর কোনো কিছুরই ইবাদত করবে না; বাবা-মার জন্য সবকিছু সবচেয়ে ভালোভাবে করবে; এবং নিকটাত্মীয়, অসহায়-এতিম আর গরিব-সামর্থ্যহীনদের সাথেও; মানুষের সাথে খুব সুন্দর ভাবে কথা বলবে; সালাত প্রতিষ্ঠা করবে এবং যাকাত দিবে।” এরপরও তোমাদের কয়েকজন ছাড়া বাকি সবাই মুখ ফিরিয়ে নিলে। তোমরা কথা দিয়ে কথা রাখোনি। [আল-বাক্বারাহ ৮৩]

CityRuin

বনী ইসরাইলিরা ছিল সেই যুগের মুসলিম। তাদের কাছ থেকে আল্লাহ تعالى কিছু অঙ্গীকার নিয়েছিলেন। তারা সেগুলো মানেনি। আল্লাহ تعالى তাদেরকে ধ্বংস করে দিয়েছেন। আজকের যুগের মুসলিমরা হচ্ছে বনী ইসরাইলের উত্তরসূরি। আমরা কতখানি সেই অঙ্গীকার মানছি দেখা যাক—  (আর্টিকেলের বাকিটুকু পড়ুন)