ওরা তাকে খুব ভালো করে চেনে — আল-বাক্বারাহ ১৪৫-১৪৭

আমরা অনেক সময় মুসলিমদের ভেতরকার সমস্যা নিয়ে এত বেশি হতাশ হয়ে পড়ি যে, অন্য ধর্মের অনুসারীদের মধ্যেও যে ব্যাপক সমস্যা আছে, তা ভুলে যাই। এই সুযোগে কিছু সুধীবৃন্দ এবং নাস্তিকরা, অমুসলিমদের মগজ ধোলাইয়ের শিকার হয়ে ইসলামের নামে গালিগালাজ করে একচোট দেখিয়ে দেয় যে, ইসলাম হচ্ছে যত নষ্টের মূল। অথচ একটু খোঁজ-খবর নিলেই দেখা যায়, ইহুদি, খ্রিস্টান, হিন্দু ধর্মের অনুসারীদের মধ্যেও ভয়াবহ সমস্যা রয়েছে। এরকম একটি সমস্যা আল্লাহ تعالى এই আয়াতে উল্লেখ করেছেন—

2_145_title

2_145যাদেরকে কিতাব দেওয়া হয়েছে, তাদেরকে তুমি যদি সবরকম নিদর্শন এনেও দেখাও, তবুও তারা তোমার কিবলা অনুসরণ করবে না। তুমি কখনই তাদের কিবলার অনুসারী হবে না। এমনকি ওরা একে অন্যের কিবলাও অনুসরণ করে না। তোমার কাছে যে জ্ঞান এসেছে, তা  আসার পরেও যদি তুমি ওদের খেয়াল-খুশি মতো করতে যেতে, তাহলে তুমিও সীমালঙ্ঘনকারীদের একজন হয়ে যেতে। [আল-বাক্বারাহ ১৪৫]

এই আয়াতে আল্লাহ تعالى বলছেন যে, অন্য ধর্মের অনুসারীদের মধ্যে কোনো ঐক্য নেই। ইহুদিদের কিবলা হচ্ছে বাইতুল-মাকদিস, যা আমরা আল-আক্বসা নামে চিনি।[৪] খ্রিস্টানদের কিবলা হচ্ছে পূর্ব দিক।[৪] তারা চার্চগুলোকে পূর্বমুখী করে তৈরি করে। কারণ তারা বিশ্বাস করে যীশু যখন আবার আসবেন, তখন তিনি পূর্ব দিক থেকে আসবেন।[২৭৭] এরা একে অন্যের কিবলাকে অনুসরণ বা সমর্থন করা তো দূরের কথা, অস্বীকার করে। ইহুদিরা মনে করে যীশু হচ্ছেন এক বড় প্রতারক, ভণ্ড নবী।[২৭৬]

কু’রআনে বনী ইসরাইল বলতে আজকের ‘ইসরাইল’ নামক দেশে যারা থাকে, তাদেরকে বোঝায় না। বর্তমান ইসরাইল মূলত একটি সেক্যুলার দেশ। সেই দেশে সেক্যুলার-নাস্তিক বাসিন্দাদের সাথে তাদের ধর্মপ্রাণ ইহুদি বাসিন্দাদের মধ্যে ব্যাপক পরিমাণে সংঘর্ষ চলছে, যেমন কিনা মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলোতেও চলছে।[২৬৮] মুসলিম দেশগুলোতে যেমন শিয়া-সুন্নিদের মধ্যে সবসময় মারামারি লেগেই আছে, সেক্যুলার সরকার ধর্মপ্রাণ মুসলিমদের কোণঠাসা করে রেখেছে, অনুরূপ একই ঘটনা ঘটছে ইহুদিদের দুটি চরমপন্থী সম্প্রদায়ের মধ্যে। তার উপর ইসরাইলের সেক্যুলার সরকার এবং ধর্মপ্রাণ ইহুদিদের মধ্যে লেগে আছে বিরাট কোন্দল।[২৬৯]  (আর্টিকেলের বাকিটুকু পড়ুন)

তাদের পুরস্কার তাদের প্রভুর কাছে রয়েছে — আল-বাক্বারাহ ৬২

সূরা বাক্বারাহ’র এই আয়াতটি নিয়ে প্রচুর তর্ক-বিতর্ক হয়েছে এবং এক শ্রেণীর ‘আধুনিক মুসলিম’ এই ধরনের আয়াতকে অপ্রাসঙ্গিকভাবে অপব্যবহার করেছে পাশ্চাত্যের সমাজের সাথে নিজেদেরকে খাপ খাইয়ে, সেখানকার মুসলিম-অমুসলিম উভয়ের কাছেই তাদের জনপ্রিয়তা বাড়ানোর জন্য—

2_62

কোনো সন্দেহ নেই, যারা বিশ্বাস করেছে এবং যারা ইহুদী, খ্রিস্টান, সাবিইন — এদের মধ্যে যারা আল্লাহকে এবং শেষ দিনে বিশ্বাস করে এবং ভালো কাজ করে, তাদের পুরস্কার তাদের প্রভুর কাছে রয়েছে। তাদের কোনো ভয় নেই, তারা দুঃখও করবে না। [আল-বাক্বারাহ ৬২]

heaven-on-mountain

এই আয়াতের অর্থ কি এই যে, আজকে যারা ভালো ইহুদী, ভালো খ্রিস্টান, তারা সবাই জান্নাতে যাবে? তাহলে এত কষ্ট করে ইসলাম মানার কি দরকার? কারো যদি কু’রআনের সালাত, হিজাব, রোযা রাখার আইন পছন্দ না হয়, তাহলে সে কালকে থেকে খ্রিস্টান হয়ে গেলেই তো পারে? সে তখনো আল্লাহকে বিশ্বাস করবে, শেষ দিনেও বিশ্বাস করবে, এমনকি ভালো কাজও করবে। তখন এই আয়াত অনুসারে “তাদের কোনো ভয় নেই, তারা দুঃখ করবে না।” কী দরকার এত কষ্ট করে, এত নিয়ম মেনে মুসলিম হয়ে থাকার?  (আর্টিকেলের বাকিটুকু পড়ুন)

ওরাই শেষ পর্যন্ত সফল হবে – বাকারাহ ৪-৫

সূরা বাকারাহ ৪ নম্বর আয়াতটি নিয়ে আধুনিক মুসলিমদের মধ্যে অনেক তর্ক বিতর্ক হয়েছে—

2_4

যারা তোমার (মুহাম্মাদ) উপর যা অবতীর্ণ হয়েছে এবং তোমার আগে যা অবতীর্ণ হয়েছে তাতে বিশ্বাস করে, যারা পরকালে নিশ্চিতভাবে বিশ্বাস করে।[বাকারাহ-৪]

Coexist

প্রশ্ন আসে, কেন আমাদেরকে কু’রআনের পাশাপাশি আগে যে কিতাবগুলো নাজিল হয়েছিল সেগুলোতে বিশ্বাস করতে হবে? −এর মানে কি আমাদের তাওরাত, জাবুর, ইনজিল এগুলো সব পড়তে হবে? আমাদের কি ইহুদিদের মতো তাওরাতে যা আছে সেটা মানতে হবে? খ্রিষ্টানদের মতো গস্পেলে যা আছে সেগুলো মানতে হবে? আজকে যারা ইহুদি এবং খ্রিষ্টান, তারা কি তাহলে আল্লাহর تعالى দেওয়া ধর্মের উপর আছে এবং তাদের কি কু’রআন মানার কোনো প্রয়োজন নেই? তারা কি মুসলিমদের মতোই জান্নাতে চলে যাবে?

  (আর্টিকেলের বাকিটুকু পড়ুন)