ইহুদি, খ্রিস্টানরা রাসুল মুহাম্মাদ عليه السلام-কে মানুষ হিসেবে বেশ পছন্দই করতো। তারা জানতো: তিনি একজন সৎ, বিনয়ী মানুষ, কোনো অন্যায় করেন না, ধনী-গরিব পার্থক্য করেন না। এমনকি তারা রাসুলের عليه السلام কাছে নিজেদের সম্পদ আমানত হিসেবেও রেখে যেত। সবদিক থেকে তারা রাসুলকে عليه السلام একজন অনুসরণ করার মত আদর্শ মানুষ হিসেবেই মানতো। কিন্তু তারপরেও যখন রাসুল عليه السلام তাদেরকে হাজারো যুক্তি-প্রমাণ দিয়ে বোঝানোর চেষ্টা করতেন যে, তারা ভুল পথে আছে, তাদের ধর্মগ্রন্থগুলো বিকৃত হয়ে গেছে, তখন তারা আর রাসুলের عليه السلام কথা শুনত না। বরং উলটো বলতো—
ওরা বলে, “তোমরা ইহুদি কিংবা খ্রিস্টান হয়ে যাও, তাহলেই পথ পাবে।” বলে দাও, “আমরা বরং ইব্রাহিমের পথ অনুসরণ করবো, তিনি বিশুদ্ধ বিশ্বাসের অধিকারী ছিলেন। তিনি কখনই আল্লাহর تعالى সাথে শিরককারীদের একজন ছিলেন না।” [আল-বাক্বারাহ ১৩৫]
প্রথমে আমাদের বোঝা দরকার: তারা যখন বলছে ইহুদি বা খ্রিস্টান হয়ে যেতে, তারা আসলে কোন ধর্মের দিকে ডাকছে।
ইহুদি বা জুডাইজম ধর্মের নাম নবী ইয়াকুবের عليه السلام ১২ জন সন্তানের একজন ‘জুডা’-এর নামের অনুসরণ করে রাখা। আল্লাহ تعالى এই ইহুদি ধর্ম পাঠাননি।[২৪১] ইহুদি রাবাইদের (ধর্মীয় পুরোহিত) হালাল-হারাম নির্ধারণ করার ক্ষমতা রয়েছে। তারা যা বলেন, সেটাই সর্বোচ্চ সিদ্ধান্ত। তাদের লেখা তালমুদ গ্রন্থ (আমাদের হাদিস গ্রন্থের মতো) হচ্ছে সর্বোচ্চ শারিয়াহ। তাদের মতের বিপরীতে তাওরাতে পরিষ্কার বাণী থাকলেও কিছু যায় আসে না।[৩] এই ধর্ম অনুসারে: আল্লাহ تعالى কী বলেছেন, তার থেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে রাবাইরা কী বলছেন। রাবাইদের নিজেদের মতো শারিয়াহ নির্ধারণ এবং পরিবর্তন করার সম্পূর্ণ ক্ষমতা আছে, যেখানে ইসলামে শারিয়াহ একমাত্র আল্লাহ تعالى এবং তাঁর রাসুলের عليه السلام বাণী থেকে নির্ধারিত, যা কোনো ইমাম, মাওলানা, মুফতির বাণী থেকে নেওয়া যায় না।
একইভাবে খ্রিস্টান ধর্ম এসেছে যীশুখ্রিস্টের নাম থেকে। আল্লাহ تعالى এই খ্রিস্টান ধর্ম পাঠাননি। এই দুটি ধর্মের নাম হয়েছে: হয় কোনো মানুষের নামে, না হয় কোনো গোত্রের নামে। এগুলোর কোনোটাই আল্লাহর تعالى দেওয়া নাম নয়। খ্রিস্টান ধর্মেও নানা পর্যায়ের ধর্মীয় গুরু রয়েছে, যেমন পোপ, বিশপ, ফাদার। পোপ হচ্ছেন সর্বোচ্চ পদের। তিনি যদি বাইবেলে কিছু বাদ দিতে বলেন, সেটা বাদ হয়ে যাবে। তিনি যদি বাইবেলে কোনো সংশোধন করতে বলেন, তাহলে সেই সংশোধন করে, নতুন বাইবেল প্রকাশ করা হবে। ১৮৭৯ থেকে ১৮৮৫ সালে বাইবেলে প্রায় ৩০,০০০ সংশোধন করা হয়েছে।[২৭০] স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন আসে: বাইবেল যদি সত্যিই স্রষ্টার বাণী হয়ে থাকে, তাহলে তা এত বার সংশোধন করার দরকার কেন হয়? কোনো ধর্মীয় গ্রন্থ যদি মানুষ সংশোধন করতেই পারে, তাহলে সেই ধর্মীয় গ্রন্থ তো গোঁড়াতেই ভুল। সেটা মানুষ মানতে যাবে কেন? পোপরা যদি সত্যিই ‘গডের’ নির্ধারিত পবিত্র মানুষ হয়, তাহলে তাদের মধ্যে এত নারীঘটিত কেলেঙ্কারী, ছোট ছেলেমেয়েদের সাথে নোংরামির ঘটনা পাওয়া যায় কেন?
আল্লাহর تعالى দেওয়া একমাত্র ধর্মের নাম হচ্ছে ইসলাম, যার অর্থ: স্রস্টার প্রতি পূর্ণ সমর্পণ। নাম থেকেই বোঝা যায়: অন্য সব ধর্ম এবং ইসলাম ধর্মের মধ্যে মুল পার্থক্য কোথায়। একজন স্রস্টা এমন একটি ধর্ম পাঠাবেন, যেটি সারা পৃথিবীর সব মানুষের জন্য প্রযোজ্য হবে, অথচ তার নাম তিনি দেবেন কোনো এক ভদ্রলোকের নাম অনুসারে, বা কোনো এক দলের নাম অনুসারে —এটা দাবি করাটা হাস্যকর।
ইসলাম হচ্ছে একমাত্র ধর্ম, যা সব নবীকে সমর্থন করে। ইহুদিরা ঈসা عليه السلام নবীকে মানে না। প্রশ্ন আসে: কীভাবে কোনো ধর্মের অনুসারীরা একজন নবীকে অস্বীকার করতে পারে, যখন সেই ধর্মের আল্লাহ تعالى একই? কীভাবে কোনো ধর্মের অনুসারীরা দাবি করতে পারে যে, আগের কোনো নবী ভুল করেছেন? এর মানে কি এই দাঁড়ায় না যে, আল্লাহই تعالى ভুল করেছেন?[৩]
যদি ইহুদি এবং খ্রিস্টান ধর্ম অনুসরণ করলেই সঠিক পথ পাওয়া যেত, তাহলে প্রশ্ন আসে: আগের নবীরা কি তাহলে ভুল পথে ছিলেন? নবী ইব্রাহিম عليه السلام এবং তাঁর পরে আসা নবীরা عليه السلام কি তাহলে ভুল পথে ছিলেন? আরও প্রশ্ন আসে: ইহুদি এবং খ্রিস্টান ধর্মগ্রন্থ অনুসারে দেখা যায়: নবী ইব্রাহিম عليه السلام এক আল্লাহর تعالى উপাসনা করতেন এবং এক আল্লাহর تعالى উপাসনার কথাই তিনি প্রচার করে গেছেন। তাদের ধর্ম গ্রন্থে কোথাও বলা নেই যে, তিনি ইহুদি বা খ্রিস্টান ছিলেন। এটা কীভাবে যৌক্তিক দাবি হতে পারে যে, তার সময় ধর্ম ছিল একরকম, কিন্তু তার পরে ধর্ম পাল্টে আরেক রকম হয়ে গেল?[১১] আল্লাহ تعالى তো একই আছেন। তিনি তো তাঁর সঠিক পথের সংজ্ঞা যুগে যুগে পাল্টে দেন না যে, একেক নবী একেক ধরনের ধর্ম নিয়ে আসবেন।
একারণেই আল্লাহ تعالى এই আয়াতে ইহুদি এবং খ্রিস্টানদেরকে বলছেন যে, তারা যদি ইব্রাহিমকে عليه السلام নবী হিসেবে মানে, তাহলে কীভাবে তারা নবী ইব্রাহিমের عليه السلام ধর্মকে গোঁড়া থেকে পাল্টে দিয়ে, ধর্মীয় মূলনীতিগুলো বাদ দিয়ে, নতুন সব মূলনীতি নিয়ে এসে, তারপর নিজেদের মতো নাম দিয়ে ধর্ম বানিয়ে অনুসরণ করছে? নবী ইব্রাহিম عليه السلام তো কখনই আল্লাহর تعالى সাথে শিরক করেননি। তাহলে তারা কেন আল্লাহর تعالى সাথে শিরক করছে? তাদের রাবাইদের আল্লাহর تعالى ক্ষমতা দিয়ে দিচ্ছে? যীশুকে আল্লাহর تعالى ক্ষমতা দিয়ে দিচ্ছে? পোপকে ক্ষমতা দিচ্ছে আল্লাহর تعالى বাণী পরিবর্তন করার?
তিনি বিশুদ্ধ বিশ্বাসের অধিকারী ছিলেন। তিনি কখনই আল্লাহর تعالى সাথে শিরককারীদের একজন ছিলেন না।
আল্লাহ تعالى এই আয়াতে বলছেন: ইব্রাহিম عليه السلام ছিলেন حَنِيفًا হানিফ। হানিফ এসেছে হানাফা থেকে, যার অর্থ: যার সহজাত প্রবৃত্তি আছে বিশুদ্ধ বিশ্বাসের প্রতি।[২][১৪] যে সহজাতভাবেই সঠিক বিশ্বাস এবং সিদ্ধান্তের দিকে যায়। যে দুনিয়ার পাপ থেকে নিজেকে দূরে রেখে, অন্ধ বিশ্বাস, বাপদাদার অন্ধ অনুকরণ থেকে নিজেকে মুক্ত রাখে। যে নিজে থেকেই উপলব্ধি করতে পারে: আমাদের বাপদাদারা যা করছে, তা ভুল। যার মধ্যে এই কমনসেন্স আছে যে, মানুষের বানানো কিছুকে মানুষেরই স্রষ্টা, উপাসনার যোগ্য প্রভু মনে করে ইবাদত করা ভুল।[২] একারণেই প্রাচীন আরবিতে এবং আরব কাব্যে হানিফ, তাহান্নুফ বলতে বোঝানো হতো: একক স্রষ্টার প্রতি একান্ত নিবেদিত হওয়া, দীর্ঘ ইবাদতে মগ্ন থাকা।[২]
বলো, “আমরা বরং ইব্রাহিমের পথ অনুসরণ করবো, …”
এই আয়াতে আমাদের জন্য একটি শিক্ষা হলো: আমাদেরকে ইসলামের দাওয়াহ দিতে হবে। শুধু নিজে ইসলাম মেনে চললেই হবে না, ইহুদি এবং খ্রিস্টানদের সঠিক পথে দাওয়াহ দিতে হবে। অন্য ধর্মের লোকেরা যখন আমাদেরকে ভুল পথে ডাকবে, আমাদেরকে ইসলাম থেকে দূরে সরিয়ে নিতে চেষ্টা করবে, তখন তাদেরকে, “কাফিরের দল! নাজাস্ কোথাকার! দূর হ!” —এই বলে তাড়িয়ে দেওয়া যাবে না। বরং এই আয়াতের নির্দেশ অনুসারে তাদের বোঝাতে হবে: কেন আমরা মনে করি ইসলাম একমাত্র সঠিক ধর্ম, আমাদের বিশ্বাসের পেছনে যুক্তিটা কোথায়?
আমাদের সবসময় মনে রাখতে হবে যে, আমাদের ইহুদি এবং খ্রিস্টান ভাইবোনেরা একদল প্রতারকের পাল্লায় পড়ে ভুল পথে চলে গেছে। আমাদের দায়িত্ব হচ্ছে তাদেরকে ভালো করে বুঝিয়ে শুনিয়ে সঠিক পথে নিয়ে আসা। এরপরেও তারা যদি না শোনে, তাহলে সেটা তাদের ব্যাপার। তাদের মধ্যে কারা সঠিক পথে আসবে, কারা আসবে না, সেটা সম্পূর্ণ আল্লাহর تعالى ইচ্ছা, কারণ হিদায়াহ একমাত্র আল্লাহর تعالى হাতে। আমাদের দায়িত্ব হচ্ছে শুধুই আল্লাহর تعالى বাণী পৌঁছে দেওয়া। যাদেরকে আমরা ইসলামের পথে আনতে পারব, তারা আমাদের জন্য বিরাট সওয়াবের উৎস হয়ে যাবে। আর যারা ইসলামের পথে আসবে না, তারা আমাদের জন্য পরীক্ষা হয়ে থাকবে।
ইহুদি, খ্রিস্টানরা যে মুসলিমদের দাওয়াহ নিতে আগ্রহী, ইসলামের বাণী শুনে নিজেদেরকে পরিবর্তন করার ইচ্ছা রাখে, তার সবচেয়ে বড় প্রমাণ হচ্ছে: ১৯৯০ থেকে ২০০০, মাত্র দশ বছরে ১ কোটি ২৫ লক্ষ খ্রিস্টানের মুসলিম হয়ে যাওয়া।[২৭১] আজকে পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশি যে ধর্মে মানুষ আসছে, তা হলো ইসলাম। প্রতিবছর লক্ষ ইহুদি, খ্রিস্টান, হিন্দু নিজেদের ধর্ম, পরিবার, সংস্কৃতি ত্যাগ করে, সমাজের বিরুদ্ধে কঠিন সংগ্রাম করে হলেও মুসলিম হয়ে যাচ্ছে: ইসলামের বাণী শুনে মুগ্ধ হয়ে, আল্লাহর تعالى প্রতি ভালবাসায় নিবেদিত হয়ে। তাদের আল্লাহর تعالى প্রতি যতখানি ঈমান আছে, তার ধারে কাছে ঈমান আমাদের অনেক ‘আধুনিক মুসলিম’-এর নেই। শুধুই আল্লাহর تعالى জন্য তারা যত বড় ত্যাগ স্বীকার করছে, প্রতিদিন যত কষ্ট সহ্য করছে —তার কতখানি আমরা জন্মগত মুসলিমরা করতে পারছি?
তাই ইহুদি, খ্রিস্টান, হিন্দু, বৌদ্ধ —সকল ধর্মের মানুষদের আমন্ত্রণ জানাতে হবে ইসলামের প্রতি। তাদেরকে যুক্তি দিয়ে বোঝাতে হবে: কেন আমরা নবী ইব্রাহিমের عليه السلام আদর্শ অনুসরণ করে রাসুল মুহাম্মাদের عليه السلام দেখানো পথ বেছে নিয়েছি। হতে পারে: যেই অমুসলিমকে আজকে আমরা কাফির বলে গালি দিচ্ছি, ঘৃণা করছি, সেই অমুসলিম ভাই বা বোন আজ থেকে পাঁচ বছর পরে মুসলিম হয়ে, নিষ্পাপ অবস্থায় মারা গিয়ে সোজা জান্নাতে চলে যাবে। আর আমরা তাদেরকে গালি দেওয়ার জন্য, ঘৃণা করার জন্য কিয়ামতের দিন জবাব দিতে গিয়ে আটকে যাবো।
আসুন আল্লাহর تعالى আদেশ অনুসরণ করে তাদেরকে শেখাই—
বলো, “আমরা আল্লাহকে تعالى গভীরভাবে বিশ্বাস করি। বিশ্বাস করি যা আমাদেরকে পাঠানো হয়েছে, যা ইব্রাহিমকে পাঠানো হয়েছে, ইসমাইলকে, ইসহাককে, ইয়াকুব এবং তাদের বংশধরদেরকে, যা মুসা এবং ঈসাকে দেওয়া হয়েছে, এবং যা নবীদেরকে তাদের প্রভুর পক্ষ থেকে দেওয়া হয়েছে। আমরা তাদের কারো মধ্যে পার্থক্য করি না। আমরা শুধুমাত্র তাঁরই প্রতি পুরোপুরি অনুগত।” [আল-বাক্বারাহ ১৩৬]
এরপরেও যদি তারা আমাদের কথা না শোনে, তাহলে আমাদের অবস্থান হচ্ছে—
তোমরা যা বিশ্বাস করো, সেরকম কিছুতে যদি তারা বিশ্বাস করে, তাহলে তারা সঠিক পথ পাবে। কিন্তু যদি তারা ফিরে যায়, তাহলে তারা সন্দেহ-বিবাদে জড়িয়ে পড়বে। তাদের বিরুদ্ধে আল্লাহই تعالى যথেষ্ট। তিনি সব শোনেন, সবকিছু জানেন। [আল-বাক্বারাহ ১৩৭]
এই আয়াতের ভাষা বেশ চমৎকার। এখানে কোনো গালি, ব্যাঙ্গ নেই। এমনকি এখানে সরাসরি বলাও হয়নি যে, “তোমরা যা বিশ্বাস করো, ঠিক সেটাতেই যদি তারা বিশ্বাস করে…” বরং বলা হয়েছে, “তোমরা যা বিশ্বাস করো, সেরকম কিছুতে যদি তারা বিশ্বাস করে, …” এই ভাষা ব্যবহার করে তর্ক করার সুযোগ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। না হলে তারা অনেকেই খেপে গিয়ে তর্ক শুরু করতো: “কী! তোমরা মনে করো তোমরা সব ঠিক, আর আমরা সব ভুল? তোমরা যা যা বিশ্বাস করো, ঠিক সেটাই আমাদের বিশ্বাস করতে হবে? আমাদের কোনো কিছুই ঠিক না?”[১১]
এই আয়াতে আমাদেরকে শেখানো হচ্ছে: যখন আমরা কাউকে তার সারাজীবনের বিশ্বাস, ধ্যানধারণা পরিবর্তন করতে বলবো, তখন আমাদেরকে সাবধানে সঠিক ভাষা ব্যবহার করতে হবে। তাকে আক্রমণ করে: তার সবকিছু ভুল, সে জাহান্নামি, তার চৌদ্দগুষ্টি বিদআতি —এভাবে সরাসরি বললে হবে না। দাওয়াহ দেওয়ার ভাষা, আর তর্কের ভাষা আলাদা, এটা আমাদের সবসময় মনে রাখতে হবে।
দাওয়াহ শব্দের অর্থ আমন্ত্রণ। আমরা কখনো কাউকে আমন্ত্রণ দিয়ে বাসায় এনে, তারপর তাকে বলি না, “আপনার ধর্ম, ধারণা সব ভুল। সারাজীবন যা করে এসেছেন, তার সব ভুল। আপনি জাহান্নামে যাচ্ছেন, এই ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই। ভাই, এখনো সময় আছে, ভালো হয়ে যান…”
—এটা দাওয়াহ নয়। আমরা যাদের দাওয়াহ দেবো, তাদের বিশ্বাসের প্রতি সন্মান বজায় রেখে, তাদেরকে আমাদের বিশ্বাসের পেছনে কারণ, যুক্তি, সত্যটা কোথায়, সেটা মার্জিত ভাষায় দেখাতে হবে। তাদের বিশ্বাসে সমস্যাগুলো কোথায়, তা আন্তরিকতার সাথে বোঝাতে হবে।
যাদের সত্যিকারের জ্ঞান আছে, প্রশ্নের উত্তর জানা আছে, মানুষকে বোঝানোর আন্তরিকতা আছে, তাদের কখনো বাজে ভাষা ব্যবহার করে আক্রমণ করার দরকার পড়ে না। কেউ আক্রমণ করা শুরু করলেই বোঝা যায় যে, তার জ্ঞানের দৌড় ওই পর্যন্তই। এর বেশি কিছু সে পারে না দেখেই নিজেকে নিজের কাছে বিজয়ী মনে করানোর জন্য বাজে ভাষার আশ্রয় নেওয়া শুরু করেছে।
সূত্র:
- [১] নওমান আলি খানের সূরা আল-বাকারাহ এর উপর লেকচার এবং বাইয়িনাহ এর কু’রআনের তাফসীর।
- [২] ম্যাসেজ অফ দা কু’রআন — মুহাম্মাদ আসাদ।
- [৩] তাফহিমুল কু’রআন — মাওলানা মাওদুদি।
- [৪] মা’রিফুল কু’রআন — মুফতি শাফি উসমানী।
- [৫] মুহাম্মাদ মোহার আলি — A Word for Word Meaning of The Quran
- [৬] সৈয়দ কুতব — In the Shade of the Quran
- [৭] তাদাব্বুরে কু’রআন – আমিন আহসান ইসলাহি।
- [৮] তাফসিরে তাওযীহুল কু’রআন — মুফতি তাক্বি উসমানী।
- [৯] বায়ান আল কু’রআন — ড: ইসরার আহমেদ।
- [১০] তাফসীর উল কু’রআন — মাওলানা আব্দুল মাজিদ দারিয়াবাদি
- [১১] কু’রআন তাফসীর — আব্দুর রাহিম আস-সারানবি
- [১২] আত-তাবারি-এর তাফসীরের অনুবাদ।
- [১৩] তাফসির ইবন আব্বাস।
- [১৪] তাফসির আল কুরতুবি।
- [১৫] তাফসির আল জালালাইন।
- [২৭০ বাইবেল সংশোধনের ইতিহাস — http://en.wikipedia.org/wiki/Revised_Version
- [২৭১] অন্য ধর্ম থেকে ইসলামে আসার পরিসংখ্যান — Guinness World Records. 2003. p. 142.