যখন জীবন্ত পুতে ফেলা শিশু কন্যাকে জিজ্ঞেস করা হবে… —আত-তাকউইর

যখন সূর্য গুটিয়ে ফেলা হবে। যখন তারকাগুলো ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়বে। যখন পর্বতমালাকে চলমান করা হবে। যখন পূর্ণ গর্ভবতী উটকে উপেক্ষা করা হবে। যখন বন্য পশুদের একসাথে করা হবে। যখন সাগরগুলো উত্তাল করে ফেলা হবে। যখন আত্মাকে জুড়ে দেওয়া হবে। যখন জীবন্ত পুতে ফেলা শিশু কন্যাকে জিজ্ঞেস করা হবে: কোন অপরাধে তাকে হত্যা করা হয়েছে? যখন আমলনামা প্রকাশ করা হবে। যখন আকাশের আবরণ তুলে ফেলা হবে। যখন জাহান্নামের তীব্র আগুনকে ভীষণভাবে প্রজ্বলিত করা হবে। যখন জান্নাতকে কাছে নিয়ে আসা হবে। তখন প্রত্যেকে জেনে যাবে: সে কী নিয়ে উপস্থিত হয়েছে।  —আত-তাকউইর ১-১৪

মহাবিশ্বের ধ্বংস হয়ে যাওয়া কোনো সাধারণ ঘটনা নয়। সেদিন আমাদের উপরে আকাশে এবং আমাদের চারপাশে পৃথিবীতে এমন ভয়ংকর সব ঘটনা ঘটবে যে, মানুষ সেদিন তাদের সবচেয়ে মূল্যবান সম্পত্তির কথাও বেমালুম ভুলে গিয়ে দিগ্বিদিক জ্ঞান শূন্য হয়ে ছুটতে থাকবে। আরবদের কাছে দশ মাসের গর্ভবতী উট, যার বাচ্চা দেওয়ার করার সময় হয়ে গেছে, তা ছিল সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ, কারণ সেটি তাদেরকে আরেকটি মূল্যবান সম্পদ— একটি উটের বাচ্চা উপহার দিত এবং একই সাথে দুধ দিত। এধরনের উটকে তারা নিয়মিত সবরকম যত্ন নিত, নিরাপত্তার সবরকম ব্যবস্থা করতো, দিনরাত এই উটের চিন্তায় মশগুল থাকতো।

যেদিন মহাবিশ্বের ধ্বংস শুরু হয়ে যাবে, সেদিন সেই মূল্যবান সম্পদকে উপেক্ষা করে নিজেদেরকে নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়বে। আজকের দিনে তুলনা করলে, মানুষ তার দামি গাড়ি, বাড়ি, ল্যাপটপ, মোবাইল ফোন ফেলে পালাতে থাকবে—রাস্তায় পড়ে থাকবে বিএমডব্লিউ, মার্সিডিজ, আওডি। আলিশান বাড়ি, ফুল-ফলের বাগান দরজা খোলা অবস্থায় খালি পড়ে থাকবে। অনেক পরিশ্রমের অর্জন যেই মূল্যবান সম্পদগুলো, যেগুলোর চিন্তায় মানুষ দিনরাত মশগুল থাকতো, নিরাপত্তার সবরকম ব্যবস্থা নিত, নিয়মিত যত্ন নিত—সেদিন কেউ ফিরেও তাকাবে না সেগুলোর দিকে।

  (আর্টিকেলের বাকিটুকু পড়ুন)

কেউ যদি জিবরাইলের শত্রু হয় — আল-বাক্বারাহ ৯৭-৯৮

একটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য নিয়ে একজন সন্মানিত সত্তা উপরের মহাজগত থেকে রওনা হয়েছেন নিচে মহাবিশ্বের দিকে। তার গন্তব্য ছায়াপথের বাইরের দিকে সূর্য নামের একটি বিশেষ নক্ষত্রের তৃতীয় গ্রহ পৃথিবী। এই গ্রহে মাটি থেকে তৈরি বুদ্ধিমান প্রাণীরা মারামারি, খুনাখুনি, নৈতিকভাবে জঘন্য সব কাজ করে নিজেদেরকে শেষ করে ফেলছে। তাদেরকে সংশোধন করার জন্য সর্বোচ্চ ক্ষমতাবানের কাছ থেকে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বাণী এসেছে, যা তিনি নিয়ে যাচ্ছেন সেই বুদ্ধিমান প্রাণী ‘মানবজাতি’র বিশেষ একজনের কাছে পৌঁছে দিতে।

কিন্তু সেই গ্রহে আরেক ধরনের শক্তিশালী বুদ্ধিমান প্রাণী রয়েছে, যারা শক্তির তৈরি। এদের অনেকে নিজেদেরকে মাটির তৈরি প্রাণীদের থেকে উঁচু পর্যায়ের মনে করে। এরা চায় না সেই বাণী মানুষ নামের ‘নিচুস্তরের’ প্রাণীদের কাছে পৌঁছাক। হাজার বছর ধরে তারা নানা ভাবে মানুষকে প্রতারিত করেছে, ভুল পথে নিয়ে গেছে। মানব জাতিকে শেষ করে দেওয়া তাদের উদ্দেশ্য।

জিন নামের শক্তির তৈরি এই প্রাণীদের মধ্যে আবার একজন আছে, যে ভয়ঙ্কর। তার নাম ইবলিস। সে একসময় এতটাই উপরে উঠে গিয়েছিল যে, এই সন্মানিত সত্তার মতো সেও একসময় মহান স্রষ্টার সাথে কথা বলতে পারত। অনেক কাল আগে সে স্রষ্টার সাথে এক ভয়ঙ্কর বেয়াদবি করে উপরের জগত থেকে বিতাড়িত হয়েছে। তখন সে স্রষ্টার কাছ থেকে অমরত্ব চেয়ে নিয়েছিল, যেন সে মানবজাতিকে সারা জীবন ভুল পথে তাড়িয়ে নিতে পারে। সে কোনোভাবেই চায় না মানুষের জন্য ভালো কিছু হোক। তাই সে তার বাহিনী নিয়ে প্রস্তুত। যেভাবেই হোক মানুষের কাছে এই বাণী পৌঁছানো আটকাতে হবে। আর পৌঁছে গেলেও, সেটা যেন মানুষের মধ্যে প্রচার না হয়, সেই ব্যবস্থা করতে হবে।

সেই সন্মানিত সত্তা পৃথিবীতে এসে পৌঁছালেন। ইবলিস এবং তার বাহিনীর ব্যাপারে তিনি মোটেও চিন্তিত নন, কারণ তার প্রচণ্ড ক্ষমতার কাছে ওরা কিছুই না। তিনি আরও উচ্চতর শক্তির তৈরি। সর্বোচ্চ ক্ষমতাবান মহান স্রষ্টা নিজে তাকে এই গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্ব দিয়েছেন। সৃষ্টিজগতে দ্বিতীয় আর কেউ নেই, যে এই গুরু দায়িত্ব তাঁর থেকে ভালো ভাবে পালন করতে পারে। ইবলিস এবং তার বাহিনী হাজার চেষ্টা করেও কিছুই করতে পারল না। তিনি সেই বিশেষ মানুষটির কাছে স্রষ্টার বাণী পৌঁছে দিলেন।

এই সন্মানিত সত্তার নাম জিবরাইল। তিনি বহুবার পৃথিবীতে এসে নবীদের عليه السلام কাছে মহান আল্লাহর تعالى বাণী পৌঁছে দিয়েছেন—

2_97

বলে দাও, “কেউ যদি জিবরাইলের শত্রু হয় —যে কিনা নিঃসন্দেহে আল্লাহর অনুমতিতে কু’রআনকে নিয়ে এসেছে তোমার অন্তরে, এর আগে যা এসেছিল তাকে সত্যায়িত করে —যা একটি পথনির্দেশ এবং বিশ্বাসীদের জন্য সুসংবাদ।” [আল-বাক্বারাহ ৯৭]

cloud light 2

  (আর্টিকেলের বাকিটুকু পড়ুন)