ওরা মানুষকে জাদু শিখিয়েছিল — আল-বাক্বারাহ ১০২-১০৩

চৌধুরী সাহেব গাড়ি থেকে নেমে সাবধানে এদিক ওদিক তাকিয়ে মগবাজারে এক অন্ধকার গলির ভেতর একটা দোকানে ঢুকছেন। সেই দোকান এক বিখ্যাত মন্ত্রগুরুর। সে নাকি জাদুটোনা করে মানুষের জীবন দুর্বিষহ করে দিতে পারে। চৌধুরী সাহেব তার এলাকার প্রতিদ্বন্দী হাজী সাহেবের জীবন নষ্ট করে দেওয়ার জন্য সেই মন্ত্রগুরুর কাছে এসেছেন, যাতে করে পরের মাসের ইলেকশনে হাজী সাহেবকে হারিয়ে দিতে পারেন। এই মোক্ষম সময়ে হাজী সাহেবের জীবনে নানা ঝামেলা তৈরি করতে পারলে, চৌধুরী সাহেবের জন্য ইলেকশনে জেতা অনেক সহজ হয়ে যাবে।

তিনি এক অন্ধকার ঘরে মন্ত্রগুরুর সামনে গিয়ে বসলেন। তাকে তার সমস্যার কথা জানালেন। মন্ত্রগুরু তাকে বললেন, “দুশ্চিন্তা বন্ধ করুন। আমি ‘ওদেরকে’ ডাকছি। ওরা আপনার শত্রুর জীবন শেষ করে দেবে। তবে মনে রাখবেন, একবার যদি এই পথে পা বাড়ান, আর ফিরে আসার উপায় নেই।”

চৌধুরী সাহেবের তখন মনে পড়ে গেল, তার এক আত্নীয় তাকে বহুবার সাবধান করেছিলেন: এই সব জাদুটোনার মধ্যে না যেতে। এগুলো করা কুফরী। সারাজীবনের জন্য জাহান্নামে চলে যেতে হবে। কিন্তু চৌধুরী সাহেব জিদে অন্ধ হয়ে আছেন। গত তিন বছর তিনি হাজী সাহেবের কাছে ইলেকশনে হেরেছেন। এই বার আর না। যত কিছুই লাগে, তিনি এই বার ইলেকশনে জিতবেনই।

মন্ত্রগুরু এক লাখ টাকা নিয়ে তাকে এক ভয়ঙ্কর জাদু শিখিয়ে দিলেন। তিনি সেই জাদুর কাগজ আর সরঞ্জাম নিয়ে খুশি মনে বাসায় ফেরত যাচ্ছেন। এই বার ইলেকশনে তার জেতা ঠেকায় কে?

আমাদের উপমহাদেশে জাদুটোনার ব্যাপক প্রচলন শুরু হয়েছে। অনেকেই আজকাল নিজেদের স্বার্থ হাসিল করার জন্য জাদুটোনার আশ্রয় নিচ্ছেন। হাজার বছর আগে বনী ইসরাইল ঠিক একই কাজ করে নিজেদেরকে ধ্বংস করে ফেলেছিল। আজকে অনেক মুসলিমরা ঠিক একই কাজ করে নিজেদেরকে চিরজীবনের জন্য ধ্বংস করে ফেলছেন।

2_102_1

তারা বরং সেগুলো অনুসরণ করত, যা শয়তানরা সুলাইমানের রাজত্বের নামে মিথ্যা অপপ্রচার করত। সুলাইমান কোনোদিন কুফরী করেনি, বরং ওই শয়তানগুলোই কুফরী করেছিল। ওরা মানুষকে জাদু শিখিয়েছিল। বাবিল শহরে পাঠানো দুই ফেরেশতা হারুত এবং মারুতকে যা দিয়ে পাঠানো হয়েছিল, তা শিখিয়েছিল। … [আল-বাক্বারাহ ১০২]

  (আর্টিকেলের বাকিটুকু পড়ুন)