এই শপথ কি বিচার-বুদ্ধি সম্পন্ন মানুষের জন্য যথেষ্ট নয়?

শপথ ফজরের, দশ রাতের, জোড়-বেজোড়ের এবং রাতের, যখন তা আসা-যাওয়া করে! এই শপথ কি বিচার-বুদ্ধি সম্পন্ন মানুষের জন্য যথেষ্ট নয়? তোমার রব আ’দ জাতির সাথে কী করেছিলেন দেখনি? ইরাম শহরের সাথে, যেখানে ছিল বিশাল বিশাল স্তম্ভ? যার মত কিছু অন্য কোনো দেশে সৃষ্টি হয়নি। তারপর ছামুদ জাতির সাথে, যারা উপত্যাকায় পাথর কেটে বাড়ি নির্মাণ করতো? তারপর ফিরাউনের সাথে, সেই পেরেক ওয়ালা ফিরাউন? যারা দেশে দেশে চরম অন্যায় করেছে। সব জায়গায় ব্যাপক দুর্নীতি করেছে। তারপর তোমার রব তাদের উপর আযাবের চাবুক মারলেন। নিঃসন্দেহে তোমার রব সবই লক্ষ্য রাখছিলেন। —আল-ফাজ্‌র ১-১৪

এই শপথ কি বিচার-বুদ্ধি সম্পন্ন মানুষের জন্য যথেষ্ট নয়?

হিজর শব্দটির অর্থ হচ্ছে ‘বাধা দেওয়া’। হিজর মানুষের সেই জ্ঞান, বুদ্ধিকে নির্দেশ করে, যা মানুষকে অন্যায় করা থেকে বাধা দেয়। মানুষের অনেক বুদ্ধি থাকতে পারে। কিন্তু সেই বুদ্ধিকে যদি লাগাম দেওয়া না হয়, তখন সেই বুদ্ধি থেকে ভয়াবহ সমস্যা তৈরি হয়। মানুষ তখন সৃষ্টিজগতের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর প্রাণী হয়ে যায়। তাই বুদ্ধিমান হওয়া মানেই যে একজন ভালো মানুষ হওয়া, তা সবসময় ঠিক নয়।

যেমন, অনেক মেধাবী, বুদ্ধিমান কিশোর, তরুণদের আমরা দেখেছি: বড় হয়ে তাদের বুদ্ধিকে কাজে লাগায় যত সব খারাপ কাজে। এরা তাদের বুদ্ধিকে কাজে লাগিয়ে বের করে যে, চিনির সাথে চিনির মতো দেখতে সার মেশালে কম খরচে চিনির ওজন বাড়ানো যায়, ব্যবসায় লাভও হয়। তারপর এই কম দামি বিষাক্ত ঘন চিনি দিয়ে এরা মিষ্টি, কেক, বিস্কুট তৈরি করে। সেই বিষাক্ত সার দেওয়া চিনি খেয়ে যে মানুষের ভয়ঙ্কর সব সমস্যা হয়, সেটাতে তাদের কিছু যায় আসে না।  (আর্টিকেলের বাকিটুকু পড়ুন)

তারপর তাকে তার অবাধ্যতা এবং বাধ্যতার বোধ দেওয়া হয়েছে — আশ-শামস

শপথ সূর্যের, তার উজ্জ্বল আলোর; চাঁদের, যখন তাকে অনুসরণ করে; দিনের, যখন তাকে প্রকাশ করে; এবং রাতের, যখন তাকে ঢেকে ফেলে। শপথ আকাশের এবং তার অসাধারণ নির্মাণের। শপথ পৃথিবীর এবং যেভাবে তা বিস্তৃত করা হয়েছে। শপথ মানবাত্নার এবং তার যথাযথ বিন্যাসের। তারপর তাকে তার অবাধ্যতা এবং বাধ্যতার বোধ দেওয়া হয়েছে। সুতরাং যে একে পরিশুদ্ধ করেছে, সে সফল হয়েছে। আর যে একে নষ্ট করে ফেলেছে, সে ব্যর্থ হয়েছে।

ছামুদ তাদের বিদ্রোহী মনোভাবের জন্য পুরোপুরি অবাধ্য হয়ে গিয়েছিল, যখন তাদের নিষ্ঠুরতমজন মাথাচাড়া দিয়ে উঠলো। তখন আল্লাহর রাসুল তাকে বললেন, “এটা আল্লাহর উট, একে পানি পান করানোর ব্যাপারে সাবধান!” কিন্তু তারা তার বিরুদ্ধে মিথ্যা বলা শুরু করলো এবং নিষ্ঠুরভাবে উটটিকে হত্যা করলো। তখন তাদের প্রতিপালক তাদের সবাইকে ভীষণভাবে মেরে একেবারে মাটিতে মিশিয়ে দিলেন। তিনি পরোয়া করেন না এর পরিণতির। [আশ-শামস]

সৃষ্টিজগত-এর শপথ

কুর‘আনে আল্লাহ تعالى বহুবার সৃষ্টিজগতের নানা দিক নিয়ে শপথ করেছেন। এই শপথগুলোর উদ্দেশ্য হচ্ছে, মানুষ যেন ভালো করে সেই ব্যাপারগুলো লক্ষ্য করে। যেমন, “শপথ সূর্যের এবং তার উজ্জ্বল আলোর…” — এই আয়াতে আল্লাহ تعالى আমাদেরকে যেন বলছেন: সূর্যের দিকে লক্ষ্য করেছ? সেটা কীভাবে উজ্জ্বল আলো দেয়? কী প্রচণ্ড শক্তির উৎস এই সূর্য, যার আলো যতদূর চোখ যায় সব আলোকিত করে দেয়? কত বড় আগুনের গোলা হলে এটা এত উত্তাপ দেয় যে, বিশাল এলাকার মাটি শুকিয়ে ফেটে মরুভূমি হয়ে যায়? নদী নালার পানি বাষ্প হয়ে উবে যায়? তোমাদের বানানো কোনো আগুন পারে এর ধারে কাছে কিছু করতে?  (আর্টিকেলের বাকিটুকু পড়ুন)