তোমাদেরকে যা বলা হয়েছে সেটা করো — আল-বাক্বারাহ ৬৮-৭১

ধর্মীয় নিয়ম-কানুনগুলোকে কীভাবে খামোখা ঘাঁটাঘাঁটি করে কঠিন বানানো যায়, যাতে তার অনুসরণ করা মানুষের পক্ষে প্রায় অসম্ভব হয়ে যায়, এবং ধর্মীয় নির্দেশ শেষ পর্যন্ত মানতে না পারলে কীভাবে সব দোষ আল্লাহকে تعالى দেওয়া যায় — তার কিছু অভিনব উদাহরণ আমরা সূরা আল-বাক্বারাহ’র ৬৭-৭১ আয়াতে দেখতে  পাবো। প্রথমত আজকের যুগের মুসলিমদের একইভাবে ধর্মকে পেঁচিয়ে কঠিন বানানোর একটি উদাহরণ দেই—

চৌধুরী সাহেব সম্প্রতি ধর্মের ব্যাপারে খুব সিরিয়াস হয়েছেন। তিনি তার জীবন থেকে, ধর্মীয় নির্দেশের বিরুদ্ধে যায়, এমন সব ব্যাপার একে একে দূর করার চেষ্টা করছেন। একদিন এলাকার জ্ঞানীগুণী হাজি সাহেবকে মসজিদে আলোচনায় বলতে শুনলেন, “মুসল্লি ভাইয়েরা, আজকাল টিভিতে অনেক হারাম জিনিস দেখানো হয়। টিভি আমাদের কিশোর-তরুন সমাজকে ধ্বংস করে দিচ্ছে। টিভি দেখা হারাম। আপনারা আজকেই টিভির সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিন।”

তিনি নামায শেষে হাজি সাহেবের সাথে দেখা করে জিজ্ঞেস করলেন, “আচ্ছা হাজি সাহেব, টিভিতে তো আমরা অনেক প্রোগ্রাম দেখি, যেগুলোতে কোনো হারাম কিছু দেখানো হয় না? যেমন, শিক্ষামূলক ডকুমেন্টারিগুলোতে আল্লাহর দুনিয়ার কত কিছু দেখানো হয়, যেগুলো আমরা হয়ত কোনোদিন নিজের চোখে গিয়ে দেখার সুযোগ পেতাম না। এগুলো দেখে আল্লাহর প্রতি শ্রদ্ধায় বুক ভরে যায়, ভাই। এগুলো দেখাও কি হারাম?”
হাজি সাহেব, “জ্বি ভাই সাহেব, টিভিতে যেহেতু অনেক খারাপ চ্যানেল আছে, যেখানে গান-বাজনা, পরকীয়া, অশ্লীল ছবি, মিথ্যা খবর প্রচার করা হয়। তুলনামূলক ভাবে টিভির ভালোর চাইতে খারাপ দিক অনেক বেশি, তাই টিভিকে হারাম বলা যায়। মনে রাখবেন, যেই জিনিসে খারাপ অনেক বেশি, তাতে অল্প কিছু ভালো থাকলেও, সেটা হারাম। কু’রআনে মদকে এই কারণেই হারাম করা আছে, যদিও তাতে কিছু ভালো দিক রয়েছে। একইভাবে টিভির বেলায়ও আমাদেরকে মদ হারাম করার ফর্মুলা ব্যবহার করতে হবে।”

চৌধুরী সাহেব আবারও জিজ্ঞেস করলেন, “আচ্ছা তাহলে টিভিতে খবর দেখাও কি হারাম?”
হাজি সাহেব, “জ্বি, টিভি হারাম হলে, তাতে যা দেখানো হবে, তার সবকিছুই হারাম।”

চৌধুরী সাহেব বললেন, “আচ্ছা তাহলে ইসলামিক চ্যানেলগুলোও দেখাও কি হারাম? আমি তো ভাই ইসলামের পথে আসলাম টিভিতে ইসলামের চ্যানেলগুলোর প্রোগ্রামগুলো দেখে। সেগুলো না থাকলে আমি ইসলাম সম্পর্কে কিছুই জানতে পারতাম না, নামাযও পড়তাম না, মসজিদেও আসতাম না।”
হাজি সাহেব, “টিভি যেহেতু হারাম, তাই টিভিতে সেটা দেখলে, সেটাও হারাম হয়ে যাবে।”

চৌধুরী সাহেব, “আচ্ছা রেডিও কি তাহলে হারাম, কারণ রেডিওতে তো গান-বাজনা, ডিজে’দের আজেবাজে গীবত, বেগানা মহিলা তারকাদের সাক্ষাতকার, প্রেমের আলাপ সবই হয়।”

হাজি সাহেব, “টিভির মতো রেডিও তাহলে হারাম, কারণ রেডিও থেকেও মানুষ প্রতিদিন অনেক পাপ অর্জন করছে।”

চৌধুরী সাহেব, “আচ্ছা, তাহলে মোবাইল ফোনও কি হারাম নয়, কারণ মোবাইল ফোনে ছেলে মেয়েরা প্রেম করে, স্বামী স্ত্রী লুকিয়ে পরকীয়া করে, মানুষ অমাহরাম মানুষের সাথে যখন তখন কথা বলে, অহরহ গীবত করে?”
হাজি সাহেব কিছুক্ষণ চিন্তা করে বললেন, “জ্বি, তাহলে মোবাইল ফোনও হারাম, যেহেতু এটা দিয়েও প্রতি নিয়ত বিপুল পরিমাণে কবিরা গুনাহ করা হচ্ছে। মোবাইল ফোন না থাকলে কবিরা গুনাহ করা অনেক কমে যাবে।”

চৌধুরী সাহেব চিন্তিত হয়ে বললেন, “আচ্ছা, ভাই তাহলে তো কম্পিউটার হচ্ছে সবচেয়ে বড় হারাম জিনিস। কারণ কম্পিউটারে টিভির মতো ভিডিও, রেডিওর মতো মিউজিক, মোবাইলের মতো অমাহরামের সাথে কথাবার্তা, অশ্লীল ওয়েবসাইট, মিথ্যা খবর — কোনো কিছুই বাকি নাই। এটা তো তাহলে মহা-হারাম। আমি যে কম্পিউটারে বসে সারাদিন ইসলামের জন্য পড়াশুনা করতাম, সেটা তো এখনি বাদ দিয়ে দিতে হবে।”
হাজি সাহেব, “জ্বি, কম্পিউটারে যেহেতু টিভি, রেডিও, মোবাইল ফোন — এই সবের সম্মিলিত সকল পাপ একসাথে করা যায়, তাই কম্পিউটার পুরোপুরি হারাম। ইসলাম শিখতে হলে শুধুই মসজিদে আসবেন, আলেমদেরকে জিজ্ঞেস করবেন। এভাবেই প্রথম যুগের মুসলিমরা রাসুল عليه السلام  এবং সাহাবীদের কাছ থেকে ইসলাম শিখেছেন। আমাদেরকেও একই পদ্ধতি অনুসরণ করতে হবে। বাকি সব পদ্ধতি বিদ’আ।”

চৌধুরী সাহেব বাসায় এসে স্ত্রীকে বললেন, “বউ, সর্বনাশ! আজকে থেকে টিভি, রেডিও, ফোন, কম্পিউটার সব বন্ধ। এগুলো সব হারাম। আমি হাজি সাহেবের কাছ থেকে নিজের কানে শুনে এসেছি!”

কয়েক মাস পর চৌধুরী সাহেবকে আর মসজিদে দেখা যায় না। তার কিছুদিন পর রাস্তায় হাজি সাহেব তাকে দেখে আঁতকে উঠলেন। এই চৌধুরী সাহেব তো আগের সেই চৌধুরী সাহেব নয়! তার মুখের দাঁড়ি, কপালে সিজদার দাগ, টাকনুর উপরে প্যান্ট — সব উধাও। সিগারেট টানতে টানতে মোবাইল ফোনে কারো সাথে উচ্চস্বরে ঝগড়া করতে করতে এক ফাইভ স্টার হোটেলে ঢুকছেন।

সূরা আল-বাক্বারাহ’র এই আয়াতগুলো থেকে আমরা এক বিরাট শিক্ষা পাবো: “কেউ যেন ধর্মীয় নিয়ম কানুনগুলোকে খামোখা প্রশ্ন করে নিজের জন্য জটিল করার চেষ্টা না করে। প্রথম যুগের মুসলিমরা এভাবেই সমস্যাটাকে দেখেছেন। তারা ধর্মকে নিজেদের জন্য কঠিন করে ফেলতেন না। কিন্তু পরবর্তী প্রজন্মরা এসে তাদের নিজেদের চিন্তা-ভাবনা, বিশ্লেষণ ব্যবহার করে: ধর্মের মধ্যে নানা ধরনের সীমাবদ্ধতা তৈরি করে, ধর্মকে এমন অবস্থায় নিয়ে গেছেন যে, তা শেষ পর্যন্ত মানুষের জন্য অনুসরণ করাটা কঠিন হতে হতে একটা বিরাট বোঝা হয়ে গেছে।” [আসাদ][২]

ধর্মীয় দায়িত্বগুলোকে সমাজ, সংস্কৃতি, সন্মানের কারণে অযথা জটিল করে, জীবন দুর্বিষহ করে ফেলার আরেকটি উদাহরণ হল: বিয়ে।

ইসলাম আমাদেরকে বিয়ের জন্য একটি অত্যন্ত সহজ পদ্ধতি শিখিয়ে দিয়েছে: ১) মসজিদে গিয়ে বর, কনে বা তার পক্ষ থেকে পাঠানো অভিভাবক, এবং দুজন সাক্ষি সাথে নিয়ে ইমাম বা আলেমদের উপস্থিতিতে মোহর ঠিক করা, ২) একটি ছোট খুতবা দেওয়া, ৩) বর এবং কনের পক্ষ থেকে মৌখিক সাক্ষি নেওয়া যে, তারা একে অন্যকে মোহর এবং অন্যান্য শর্ত সাপেক্ষে বিয়ে করতে রাজি, ৪) কাগজে-কলমে নিকাহ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা, ৫) বর এবং কনের সুন্দর সম্পর্কের জন্য সবাই মিলে আল্লাহর تعالى কাছে দু’আ করা, ৫) পরদিন শুধুমাত্র বরের পক্ষ থেকে একটি ছাগল/ভেড়া কুরবানি করে ওয়ালিমা অনুষ্ঠান করা (কনের কিছুই করতে হবে না), ৬) নতুন স্বামী এবং স্ত্রী একসাথে মিলে আল্লাহর تعالى দেওয়া বরকতে একটি সুন্দর সম্পর্ক শুরু করা।[১৫৬]

আজকে আমরা বিয়েকে পরিণত করেছি আমাদের জীবনের অন্যতম দুঃস্বপ্নগুলোর একটিতে — কয়েক মাস ধরে লক্ষ টাকা খরচ করে বিয়ের শপিং করা এবং কোন পক্ষ কী দিল বা দিল না, তা নিয়ে কথা শোনানো। হাজার খানেক মানুষকে দাওয়াত দেওয়া। কে দাওয়াত পেল, কে পেলো না এনিয়ে ঝগড়া করা। বিয়ের অনুস্থানে কে থাকবে, কে থাকবে না, এনিয়ে তর্ক করা। বংশ গৌরব পাছে নষ্ট হয়ে না যায়, এজন্য লক্ষ টাকা খরচ করে অমুক ভাইয়ের/বোনের বিয়ের থেকে আরও বড় কমিউনিটি সেন্টার ভাড়া করতে গিয়ে দিনের পর দিন হয়রানি। লক্ষ টাকা খরচ করে বিয়ের কার্ড ছাপান এবং কার্ডের ডিজাইন নিয়ে দুই পক্ষে মনমালিন্য। মানুষকে দেখানোর জন্য এমন বিরাট অংকের মোহর ঠিক করা, যা বর কোনোভাবেই কনেকে দিতে পারবে না, এমনকি সারা জীবনেও কোনোদিন দিতে পারবে কিনা, তার ঠিক নেই। এভাবে সে মোহর দেওয়ার কোনো নিয়ত না রেখে, শুধুই লোক দেখানো একটা ব্যাপার করে, ইসলামের আইন অনুসারে ‘বিয়ে’ না করে, স্ত্রীর সাথে অবৈধ সম্পর্ক করতে থাকবে।

গায়ে-হলুদ, বউ ভাত ইত্যাদি হিন্দু রীতি অনুসরণ করে, তিন থেকে সাত দিন ধরে অনুষ্ঠানের পর অনুষ্ঠান করতে করতে: দুই পক্ষের ব্লাড-প্রেসার, কোলেস্টরেল, ডায়াবেটিস চরমে উঠানো। অনুষ্ঠানগুলোতে বন্ধুবান্ধব, আত্মীয়স্বজন, ছেলে মেয়ে সব একসাথে মাখামাখি হয়ে একটি গণ লালসা প্রোগ্রামে পরিণত করা। অনুষ্ঠানগুলো থেকে অবিবাহিত ছেলে মেয়ে, এমনকি বিবাহিতদের মধ্যেও নতুন হারাম সম্পর্কের সূচনা করে দেওয়া। অনুষ্ঠান শেষে মোট খরচের বিল দেখে দুই পক্ষের অভিভাবকদের মাথায় হাত এবং মাসের পর মাস টেনশন করা: কীভাবে ক্রেডিট কার্ডের লোণ শোধ করবে। হাজারো হারাম কাজের মধ্যে দিয়ে সম্পূর্ণ ইসলাম বিরোধী পদ্ধতিতে বিয়ে করে, শত মানুষের গুনাহর ভাগিদার হয়ে, নতুন স্বামী-স্ত্রী এবং তাদের পরিবারদেরকে আল্লাহর গজবের শিকার করে, পরিবারগুলোতে বাকি জীবনের জন্য অশান্তি, অপ্রাপ্তি এবং দুঃখের সূচনা করা।

তারপর সংসারে যাবতীয় অশান্তির জন্য আল্লাহকে تعالى সব দোষ দেওয়া, যেন তারা নিজেরা কত সাধু।

বনী ইসরাইলকে আল্লাহ تعالى নবী মুসা عليه السلام -এর মাধ্যমে একটি সহজ নির্দেশ দিয়েছিলেন: “একটি গরু জবাই করো।” তাদের বিশেষ গরু-প্রীতির কারণে তাদের সেটা করার কোনো ইচ্ছা ছিল না।[১১] তাই তারা নানা বাহানা করে চেষ্টা করল: নবী মুসাকে عليه السلام দিয়ে বার বার আল্লাহর تعالى কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করার: ঠিক কোন ধরনের গরু জবাই করতে হবে, সেটা আল্লাহ تعالى যেন একদম পরিস্কার করে দেখিয়ে দেন। তারা একটি সহজ নির্দেশকে বার বার অহেতুক প্রশ্ন করে একটা জটিল ব্যাপারে পরিণত করল—

2_68

তারা বলল, “তোমার প্রভুকে আমাদের হয়ে জিজ্ঞেস করো: এটা কী ধরনের গরু?” মূসা বললেন, “নিশ্চিতভাবে আল্লাহ বলেছেন, ‘এটা বেশি বুড়ো নয়, আবার একদম কম-বয়স্ক নয়, মাঝামাঝি।’ তাই  যাও, তা করো, যা তোমাদেরকে আদেশ করা হয়েছে!” [আল-বাক্বারাহ ৬৮]

ইতিহাসে আছে: বনী ইসরাইলরা নবী মূসাকে عليه السلام একটি হত্যা মামলা মিটমাট করার জন্য অনুরোধ করেছিল।[১][২][১১] তার উত্তরে তিনি বলেছিলেন যে, আল্লাহ تعالى তাদেরকে নির্দেশ করেছেন যেন তারা একটি গরু জবাই করে। এই উত্তর শুনে তারা ভেবেছিল: নবী মুসা عليه السلام তাদের সাথে মশকরা করছেন। তারা ভুলে গিয়েছিল কার সাথে তারা কথা বলছে। একজন নবী عليه السلام যে কখনো আল্লাহর تعالى নামে মিথ্যা কথা বলেন না, এই সহজ বোধটুকু তারা হারিয়ে ফেলেছিল।

এর উত্তরে নবী মুসা عليه السلام জোর দিয়ে বললেন যে, আল্লাহ تعالى নিজে বলেছেন এটা কী ধরনের গরু। এখানে তিনি নিজে থেকে কিছুই বানিয়ে বলছেন না। তারপর তিনি তাদেরকে বললেন: فَٱفْعَلُوا۟ — যাও, বেশি চিন্তা না করে এখনি গিয়ে যা বলা হয়েছে সেটা করো। فعل (ফা’আলা) হচ্ছে কোনো চিন্তাভাবনা না করে স্বতঃস্ফূর্তভাবে কিছু করা, যেমন: শ্বাস নেওয়া। আর عمل (আ’মিলা) হচ্ছে চিন্তা ভাবনা করে কিছু করা।[১] নবী মুসা عليه السلام  বলছেন: আল্লাহর تعالى কাছ থেকে নির্দেশ এসেছে একটা মধ্যবয়স্ক গরু জবাই করার। এখন তাদের ঈমানের পরীক্ষা হচ্ছে: কোনো ধরনের বাহানা না করে, অহেতুক গবেষণা করে ব্যাপারটা ঘোলা না করে, যা বলা হয়েছে, ঠিক সেটাই করা।[১] কিন্তু না, তাদের টালবাহানা চলতেই থাকল—

2_69

তারা বলল, “তোমার প্রভুকে জিজ্ঞেস করো, যেন আমাদেরকে দেখিয়ে দেন সেটার রঙ কি?”তিনি বললেন, “নিশ্চিতভাবে আল্লাহ বলেছেন, নিশ্চিতভাবে এর রঙ উজ্জ্বল হলুদ, দেখতে মনোহর।” [আল বাক্বারাহ ৬৯]

এই আয়াতে নবী মুসা عليه السلام মনে হচ্ছে রেগে গেছেন। তিনি দুই বার বলেছেন إِنَّهُۥ, إِنَّهَا : নিশ্চিতভাবে এই নির্দেশ এসেছে আল্লাহর কাছ থেকে, নিশ্চিতভাবে এটা…; বনী ইসরাইল যেন কখনই না ভাবে যে, এগুলো নবী মুসা عليه السلام নিজে বানিয়ে বলছেন, এজন্য তিনি বার বার জোর দিয়ে বলছেন।[১১]

প্রশ্ন হচ্ছে, গরুর রঙ কী তাতে কি যায় আসে? তারা ইচ্ছা করলেই আল্লাহর নির্দেশ অনুসারে একটি মধ্যবয়স্ক গরু জবাই করে দায়িত্ব শেষ করে ফেলতে পারত। কিন্তু তাদের অহেতুক ঘোলা করার অভ্যাস, আর গরু-ভক্তির কারণে: তারা নবী মুসাকে عليه السلام বার বার প্রশ্ন করে ঘোরাতে লাগলো।[৯] এবার তাদের প্রশ্নের এক কঠিন উত্তর এল: উজ্জ্বল হলুদ রঙের গরু, যা দেখতে সুন্দর, মানুষ একবার দেখলে শুধু তাকিয়েই থাকে।تَسُرُّ ٱلنَّٰظِرِينَ — চোখ ফেরানো যায় না, এমন সুন্দর এক হলুদ গরু।

আল্লাহ تعالى তাদেরকে উজ্জ্বল হলুদ, দেখতে মনোহর একটি গরু জবাই করতে বললেন, তার একটি কারণ রয়েছে। আমরা আগে পড়েছি যে, এক সময় বনী ইসরাইল গরু পূজা করত। তারা একবার সোনার তৈরি একটি বাছুরের মূর্তিকে পূজা করা শুরু করেছিল, যখন নবী মুসা عليه السلام তূর পাহাড়ে গিয়েছিলেন আল্লাহর تعالى কাছ থেকে তাওরাহ নিয়ে আসতে। এখানে আল্লাহ تعالى তাদেরকে সেই সোনার বাছুরের মতো দেখতে একটি উজ্জ্বল হলুদ গরুই জবাই করতে বললেন। এবার দেখা যাবে, তাদের ঈমানের দৌড় কতদূর। তাদের মধ্যে যাদের এখনও গরু-ভক্তি রয়ে গেছে, আল্লাহর تعالى প্রতি বিশ্বাস পুরোপুরি এখনও আসেনি, তাদের এই ধরনের একটি গরু জবাই করতে যথেষ্ট কষ্ট হবে।[২][৯][১১] তাই তাদের বাহানা চলতেই থাকল—

2_70

তারা বলল, “তোমার প্রভুকে জিজ্ঞেস করো, যেন তিনি আমাদেরকে পরিষ্কার করে বলেন: সেটা কোনটা। আমাদের কাছে সব গরু দেখতে একই রকম মনে হয়। আর অবশ্যই, আল্লাহ যদি চান, তাহলে তো আমরা সঠিক পথনির্দেশ পাবোই।” [আল বাক্বারাহ ৭০]

এই পর্যায়ে গিয়ে তারা ফাজলেমি করা শুরু করল। সব গরু দেখতে কখনই একই রকম নয়। বিশেষ করে একটি উজ্জ্বল, হলুদ গরু কোনো সাধারণ ঘটনা নয়। আমরা যদি কখনো মাঠে এরকম একটি উজ্জ্বল হলুদ রঙের গরু দেখি, আমাদের চোখ বড় বড় হয়ে যাবে। আমরা আশে পাশের সবাইকে ডেকে এনে সেই গরুটা দেখাবো। “আমাদের কাছে সব গরু দেখতে একই রকম মনে হয়” — এই ধরনের মন্তব্য করার পেছনে কোনো যুক্তি থাকতে পারে না। তাদের ভেতরে যে আল্লাহর تعالى প্রতি অবাধ্যতা ছিল, তা এই ধরনের প্রশ্ন দেখেই বোঝা যায়।[১]

আরেকটি উল্লেখযোগ্য ব্যাপার হচ্ছে, এখানে তারা বলল, ‘ইন শাআ আল্লাহ।’ বলার ভাষাটাও লক্ষ্য করার মতো — وَإِنَّآ إِن شَآءَ ٱللَّهُ لَمُهْتَدُونَ “আর অবশ্যই, আল্লাহ যদি চান, তাহলে তো আমরা সঠিক পথনির্দেশ পাবোই।” ব্যাপারটা এমন যে, এতক্ষণ যে তারা বুঝতে পারছে না কী ধরনের গরু জবাই করতে হবে — সেটা হচ্ছে আল্লাহর تعالى দোষ। আল্লাহই تعالى যেন তাদেরকে পরিষ্কার করে বোঝাতে পারছেন না। তাই এই আয়াতে তারা খুব সুক্ষভাবে সব দোষ আল্লাহকে تعالى দিয়ে দিলো যে, আল্লাহ تعالى যদি সত্যিই চান: তারা একটি গরু জবাই করুক, তাহলে তারা ঠিকই সেটা করবে। যার মানে দাঁড়ায়, যদি তারা শেষ পর্যন্ত গরু জবাই না করে, তাহলে আসলে আল্লাহ تعالى চাননি দেখেই তারা তা করেনি। সেখানে তাদের কোনোই দোষ নেই।

আজকের যুগের মুসলিমদের একটা উদাহরণ দেই—

আপনি একদিন চৌধুরী সাহেবকে গিয়ে জিজ্ঞেস করলেন, “চৌধুরী সাহেব, আপনাকে তো কোনোদিন নামায পড়তে দেখি না। আপনার তো অনেক বয়স হলো। এক পা কবরে চলে গেছে। এবার কি একটু আল্লাহর প্রতি মনোযোগ দিলে হয় না?”
চৌধুরী সাহেব বললেন, “জ্বি জ্বি ভাই, ইন শাআ আল্লাহ। যদি আল্লাহ চান, আমি আগামি মাস থেকেই নামায পড়া শুরু করব।”
দুই মাস পার হয়ে যায়। চৌধুরী সাহেবকে এখনও নামায পড়তে দেখা যায় না। আপনি একদিন আবারও তাকে মনে করিয়ে দেন। তখন সে বলে, “ভাই, আমার দোষ না। আমি তো ‘ইন শাআ আল্লাহ’ বলেই ছিলাম। আল্লাহ চাইলে নিশ্চয়ই আমি নামাযি হয়ে যেতাম।”

নাস্তিকরা ঠিক একই ধরনের যুক্তি দেখায়, “তোমরা মুসলিমরা না বল: আল্লাহ যা চান, তাই হয়। যদি আল্লাহ চাইতেন, আমি অবশ্যই মুসলিম হতাম। আমি আজকে নাস্তিক, কারণ আল্লাহ চান না আমি আস্তিক হই। এখানে আমার কোনো দোষ নেই।”

নিজেদের ভেতরের অনিচ্ছাকে লুকিয়ে রেখে, নিজেকে পরিবর্তনের জন্য যথেষ্ট চেষ্টা না করে, কোনো কিছু শেষ পর্যন্ত না হলে, সব আল্লাহর تعالى ইচ্ছা বলে চালিয়ে দেওয়ার অভ্যাস সেই বনী ইসরাইলের আমল থেকে চলে আসছে। এটা নতুন কিছু নয়। অবশ্যই আল্লাহ تعالى চান বলেই সব হয় —এতে কোনও সন্দেহ নেই। তবে আল্লাহ تعالى যখন তাঁর কোনও বান্দাকে সঠিক পথ দেখাতে চান, সেটার পেছনে কিছু শর্ত থাকে। অন্যতম শর্ত হচ্ছে, “আমি সব জানি, সব বুঝি, আমাকে ধর্মের পেচাল শুনিও না!” —এই ধরনের মানসিকতা পরিবর্তণ করতে হবে। যদি কারো মধ্যে সত্য জানবার ইচ্ছা না থাকে, যদি সে দাম্ভিকতার মধ্যে নিজেকে ঢেকে রাখে, তাহলে আল্লাহ তাকে পথভ্রষ্ট হতে দেবেন।

তাছাড়া আল্লাহ تعالى আমাদের সকল কাজ, সিদ্ধান্ত সম্পর্কে আগে থেকেই জানেন, তবে এর অর্থ এই না যে, তিনি تعالى আমাদের কোনো কিছু করতে বাধ্য করে দেন। বরং, আমরা চাইলেই নড়তে পারছি, দাঁড়াতে পারছি, বসতে পারছি, যে কোনো কাজ করতে পারছি। তিনি تعالى সবকিছু জানেন, তবে কামনা করেন: আমরা ভালোগুলোই করবো, খারাপগুলো বর্জন করবো। বা, তাঁর تعالى নির্দেশগুলো মানব, নিষেধগুলো থেকে বিরত খাকব। কাজেই ভালো-মন্দ কাজের দায়ভার একান্তই আমাদের ওপর, একে আল্লাহর تعالى ইচ্ছার ওপর চাপানোর কোনো সুযোগ নেই।

উল্লেখ্য, ‘ইন শাআ আল্লাহ’ কথাটি সব পরিস্থিতিতে বলা যায় না। যেমন: আমরা বলতে পারি না, “ইন শাআ আল্লাহ, আল্লাহ চাইলে আমি একজন খাঁটি মুসলিম হবো” বা “ইন শাআ আল্লাহ, আল্লাহ আমাকে জান্নাত দিন।” কোনো দু’আতে ‘ইন শাআ আল্লাহ’ যোগ করা যায় না।[১]

2_71

তিনি বললেন, “নিশ্চিতভাবে আল্লাহ বলেছেন, নিশ্চিতভাবে এটা এমন একটা গরু যা ক্ষেতে চাষ করতে বা পানির সেচে ব্যবহার করা হয়নি, একদম নিষ্কলঙ্ক, নিখুঁত।” তারা বলল, “এইত, এখন তুমি সঠিক তথ্য এনেছ।” তারপর তারা জবাই করল, যদিও তারা সেটা প্রায় না করার উপক্রম হয়েছিল। [আল বাক্বারাহ ৭১]

এক উজ্জ্বল হলুদ রঙের গরু, যার দিকে মানুষ হাঁ করে তাকিয়ে থাকে, যার গায়ের রঙে কোনো খুঁত নেই, পরিষ্কার, নিষ্কলঙ্ক, মধ্য বয়স্ক হওয়ার পরেও যাকে কোনোদিন কোনো কাজে লাগানো হয়নি, বরং ভিআইপি আদরে বসে বসে খাওয়ানো হয়েছে — এমন সেলিব্রিটি গরু পাওয়া প্রায় অসম্ভব ব্যাপার। বনী ইসরাইল আল্লাহর تعالى সহজ নির্দেশ খামোখা প্যাঁচাতে গিয়ে তাদের কাজটাকে অসম্ভব কঠিন করে ফেললো। এখন তাদেরকে এরকম এক বিখ্যাত গরু খুঁজে বের করে সেটাকে জবাই করে মেরে ফেলতে হবে। যদি তারা আল্লাহর تعالى প্রথম নির্দেশ শুনে সাথে সাথে কোনো একটা গরু এনে জবাই করে ফেলত, তাহলে তাদেরকে এত কষ্ট করতে হতো না।

এবার তারা বুঝতে পারলো যে, আর আল্লাহর تعالى সাথে চালাকি করে লাভ নেই। এর আগে তারা চেষ্টা করছিল কোনো ভাবে ফাঁকি দেওয়া যায় কিনা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা দেখল, এর থেকে বের হওয়ার কোনো উপায় নেই। বরং যত বেশি প্রশ্ন করছে, তত ব্যাপারটা তাদের জন্য কঠিন হয়ে যাচ্ছে। তাই তারা ভাব নিয়ে বলল, “এইত, এখন তুমি সঠিক তথ্য এনেছ।”

বনী ইসরাইলের একটার পর একটা পরিষ্কার ভণ্ডামির প্রশ্ন শুনে নবী মুসা عليه السلام কি বুঝতে পারেননি যে, বনী ইসরাইল খামোখা পেচাচ্ছে এবং তাদের আসলে কোনো ইচ্ছাই নেই গরু জবাই করার? অবশ্যই তিনি বুঝতে পেরেছেন। কিন্তু তারপরেও তিনি ধৈর্য নিয়ে চেষ্টা করে গেছেন। হাদিসে আছে প্রতিবার যখন বনী ইসরাইল তাকে একটা করে প্রশ্ন করত, তিনি তূর পর্বতে যেতেন আল্লাহর تعالى সাথে কথা বলে উত্তর জেনে আসতে। এটা ছিল একটা লম্বা, কষ্টকর সফর তার জন্য।[১] তার পরেও তিনি ধৈর্যের সাথে শেষ পর্যন্ত চেষ্টা করে গেছেন, যেন তার লোকেরা আল্লাহর تعالى নির্দেশের অবাধ্যতা করে কঠিন শাস্তির মধ্যে না পড়ে।

এখানে আমাদের জন্য একটা বিরাট উপলব্ধির ব্যাপার আছে: আমরা যারা ইসলামের দাওয়াত দেই, অনেক সময় আমরা এমন কিছু মানুষ পাবো, যারা এমন সব অবান্তর, অপ্রাসঙ্গিক, ফালতু কথা বলবে, যা শুনে আমাদের মাথায় রক্ত উঠে যাবে। আবার অনেকে আছে, যাদেরকে একই কথা বার বার বোঝানোর পরেও তারা ইচ্ছা করে চেষ্টা করবে না বোঝার এবং বুঝলেও চেষ্টা করবে খামোখা প্যাঁচানোর। এই ধরনের মানুষদের উপর আমরা যেন সহজে আশা ছেড়ে না দেই। নবী মুসা عليه السلام যদি বনী ইসরাইলের মতো এমন কঠিন ধাপ্পাবাজদের উপর আশা ছেড়ে না দিয়ে, ধৈর্যর সাথে চেষ্টা করে যেতে পারেন, তাহলে আমাদেরকেও পারতে হবে।

এই আয়াতগুলোতে আমরা দেখলাম যে, শেষ পর্যন্ত তিনিই জিতলেন। মাঝখান থেকে বনী ইসরাইলের পরীক্ষা কঠিন হতে হতে প্রায় এক অসম্ভব ব্যাপার হয়ে গেল। একইভাবে আমাদেরকে মনে রাখতে হবে যে, আমরা যদি মানুষকে ইসলামের দাওয়াত দেই, এবং হাজারো চেষ্টার পরেও তারা তা না শুনে, তার মানে এই নয় যে, আমরা হেরে গেলাম। শেষ পর্যন্ত আমরাই জিতব। কিয়ামতের দিন আমাদের চেষ্টার জন্য আল্লাহ আমাদেরকে পুরষ্কার দেবেন, আর তারা চরম শাস্তি পাবে সত্য কথা না শোনার জন্য। কিন্তু আমরা যদি ধৈর্য হারিয়ে হাল ছেড়ে দেই, তাহলে আমরাই হেরে যাবো।

আরেকটি শিক্ষা হলো, ‘ইন শাআ আল্লাহ’ বলার তাৎপর্য কতখানি। বনী ইসরাইল একটা ভালো কাজ করেছিল, তারা ঠিকই শেষে ‘ইন শাআ আল্লাহ’ বলেছিল এবং শুধরে যাওয়ার চেষ্টা করেছিলো। যার কারণে আল্লাহ تعالى তাদেরকে শেষ পর্যন্ত প্রায় অসম্ভব একটি কাজ করার সামর্থ্য ঠিকই দিয়ে দেন। এখান থেকে আমাদেরকে শিখতে হবে যে, আমরা যে কাজটা করতে যাচ্ছি, সেটা যতই কঠিন হোক না কেন, ‘ইন শাআ আল্লাহ’ বলে আল্লাহর تعالى উপর দৃঢ় ভরসা রাখতে হবে, এবং একইসাথে সাধ্য অনুযায়ী সর্বোচ্চ চেষ্টা করতে হবে। আল্লাহ تعالى ঠিকই আমাদেরকে অসাধ্য সাধন করার ক্ষমতা দেবেন, যদি সেটা তাঁর পরিকল্পনার অংশ হয়ে থাকে।

সুত্র:

  • [১] নওমান আলি খানের সূরা বাকারাহ এর উপর লেকচার।
  • [২] ম্যাসেজ অফ দা কু’রআন — মুহাম্মাদ আসাদ।
  • [৩] তাফহিমুল কু’রআন — মাওলানা মাওদুদি।
  • [৪] মা’রিফুল কু’রআন — মুফতি শাফি উসমানী।
  • [৫] মুহাম্মাদ মোহার আলি — A Word for Word Meaning of The Quran
  • [৬] সৈয়দ কুতব — In the Shade of the Quran
  • [৭] তাদাব্বুরে কু’রআন — আমিন আহসান ইসলাহি।
  • [৮] তাফসিরে তাওযীহুল কু’রআন — মুফতি তাক্বি উসমানী।
  • [৯] বায়ান আল কু’রআন — ড: ইসরার আহমেদ।
  • [১০] তাফসীর উল কু’রআন — মাওলানা আব্দুল মাজিদ দারিয়াবাদি।
  • [১১] কু’রআন তাফসীর — আব্দুর রাহিম আস-সারানবি।
  • [১৫৬] বিয়ে করার সুন্নাহ সমর্থিত পদ্ধতি — http://spa.qibla.com/issue_view.asp?HD=12&ID=2123&CATE=167

নতুন আর্টিকেল বের হলে জানতে চাইলে কু’রআনের কথা ফেইসবুক পেইজে লাইক করে রাখুন—

2 thoughts on “তোমাদেরকে যা বলা হয়েছে সেটা করো — আল-বাক্বারাহ ৬৮-৭১”

  1. আচ্ছা ,দেনমোহর কড়ায় গন্ডায় পরিশোধ না করলে বিয়ে হালাল হয় না, ব্যপারটা কি আসলেই এমন? মোহর নিয়ে আগেও যতদূর পড়েছি তখন জেনেছি মোহরের কিছু অংশ বিয়ের সময়ই পরিশোধ করতে হয়(যা আজকাল অলংকার বাবদ দেওয়া হয়) বাকি অংশ পরে যেকোনো সময়ই পরিশোধ করা যায়। স্ত্রী কিছু অংশ ছেড়ে দিলে ভিন্ন কথা, কিন্ত মোহর কখনও মাফ হয় না। এমনকি কোনও মুসলিম পুরুষ মারা গেলে তার স্ত্রীর দেনমোহর যদি কিছু বাকি থাকে সেই বাকি পরিশোধ করার পর তার সম্পত্তির ভাগ বাটোয়ারা শুরু করতে হবে ।কিন্ত দেনমোহর কিছু পরিমান বাকি থাকলেও বিয়ে বৈ্ধই হবে না, এমন কথা কারো কারো মুখে দুই একবার শুনলেও পড়িনি কিন্ত কখনই । আসলে এক্ষেত্রে সঠিক ফতোয়া কী?

    1. এখানে দেনমোহরের যে উদাহরণটি দেওয়া হয়েছে, সেটি হলো মানুষের লোকদেখানো মাত্রাতিরিক্ত দেনমোহর ঠিক করা, তারপর সেটা আর পরিশোধ না করা, বা করার কোনো ইচ্ছাই না রাখা। দেনমোহর অনেকের কাছে একটা লোক দেখানো ব্যাপার। তাদের ভেতরে শক্ত নিয়ত থাকে না যে, সে দেনমোহরটি বিয়ের সাথে সাথে বা কোনো এক নির্দিষ্ট সময় পর স্ত্রীকে দিবেই।

      দেনমোহরের ব্যাপারে কিছু ফতোয়া দেখুন:
      http://islamqa.info/en/131069
      http://islamqa.info/en/32716
      http://islamqa.info/en/12572

      ব্যাপারটি তুলে ধরার জন্য ধন্যবাদ। লেখাটিকে আরেকটু পরিষ্কার করা হলো।

Leave a Reply to ওমর আল জাবির Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *