পৃথিবীতে সবকিছু আমাদের জন্য বানানো হয়েছে — বাকারাহ ২৯

2_29

তিনি পৃথিবীতে যা আছে, তার সব কিছু সৃষ্টি করেছেন তোমাদের জন্যই। তারপর তিনি নির্দেশ করেছিলেন আকাশের প্রতি এবং তাদেরকে সাতটি/অনেক আকাশে গঠন করেছেন। আর একমাত্র তিনিই সবকিছুর ব্যাপারে সব জানেন। [বাকারাহ ২৯]

নাস্তিকরা প্রশ্ন করে: পৃথিবী যদি সত্যিই মানুষের জন্য বানানো হতো, তাহলে পৃথিবীতে তেলাপোকা, মশা-মাছি, সাপ, বাঘ, কুমির এতো সব ভয়ংকর প্রাণী কেন? পৃথিবীর ৭০% ভাগ জায়গা সমুদ্রের পানি, তাও আবার পান করা যায় না এমন নোনা পানি কেন? পৃথিবীতে অল্প যা ভুমি আছে, তার আবার ২৭% বসবাসের অযোগ্য পাহাড়-পর্বত কেন? আমাদের থাকার জন্য পুরো পৃথিবী সমতল ভুমি হলো না কেন? সত্যিই যদি কোনো করুণাময় সৃষ্টিকর্তা থাকে, তাহলে প্রতি বছর ভুমিকম্প হয় কেন? পৃথিবী দেখে তো মনে হয় না এটা আসলে মানুষের জন্য বানানো হয়েছে। বরং মনে হয় মানুষ কোনোভাবে সংগ্রাম করে পৃথিবীতে টিকে আছে।

এখানে আল্লাহ تعالى বলছেন: তিনি পৃথিবীর সব কিছু বানিয়েছেন মানুষের জন্য, আমাদের সবার জন্য। কোনো বিশেষ জাতি, দেশের জন্য নয়, পৃথিবীর সব মানুষের জন্য। আর তিনি জানেন মানুষ এই ধরনের প্রশ্ন করবে এবং তার জবাব তিনি দিয়ে দিয়েছেন: তিনি সবকিছুর ব্যাপারে সব জানেন, আমরা তাঁর তুলনায় কিছুই জানি না।

আসুন দেখি কীভাবে পৃথিবীর সবকিছু মানুষের জন্য বানানো হয়েছে। বিশেষ করে পৃথিবী গ্রহটি কী অসাধারণ ভাবে মানুষের প্রাণের বিকাশের জন্য বিশেষ ভাবে উপযুক্ত করে বানানো হয়েছে, তা দেখি। এগুলো না জানার কারণে মানুষ এধরনের অবান্তর প্রশ্ন করে, আল্লাহর تعالى কাজ যে কত নিখুঁত, তা নিয়ে সন্দেহ পোষণ করে।

এত সব কুৎসিত প্রাণীর কী দরকার ছিল?

cockroach3আপনার মনে হতে পারে, তেলাপোকার কী দরকার ছিল? এরকম একটা কুৎসিত প্রাণী না বানালে হতো না?

প্রফেসর শ্রীনি, ইউনিভার্সিটি অফ টেক্সাসের বায়োলজি বিভাগের চেয়ারম্যান, একজন বিশ্বখ্যাত তেলাপোকা বিশেষজ্ঞ (হ্যাঁ, এধরনের বিশেষজ্ঞও আছে পৃথিবীতে), তিনি বের করেছেন যে, বেশিরভাগ তেলাপোকা পচন ধরা জিনিসপত্র খায়, যা নাইট্রোজেন আটকিয়ে রাখে। যদি তেলাপোকা এগুলো না খেয়ে তাদের মলের সাথে মাটিতে নাইট্রোজেন ছেড়ে না দিত, তাহলে পৃথিবীর নাইট্রোজেন চক্রে বিপুল পরিমাণ নাইট্রোজেনের প্রবাহ ব্যাহত হতো, যা বনের গাছপালার জন্য বিরাট ক্ষতির কারণ হতো।[1] তেলাপোকা আছে দেখেই আজকে বন-জঙ্গলে এত গাছপালা বেঁচে আছে, আমরা বুক ভরে শ্বাস নিতে পারছি। আমাদের বেঁচে থাকার জন্য যেমন অক্সিজেন দরকার, সেরকম নাইট্রোজেনও দরকার, কারণ নাইট্রোজেন প্রোটিন তৈরির জন্য একটি অত্যাবশ্যকীয় উপাদান। প্রোটিন না হলে কোনো প্রাণ বেঁচে থাকতে পারবে না। শুধু তাই না, তেলাপোকা এমন কিছু নেই যা খায় না—আঠা, চর্বি, সাবান, চামড়া, চুল ইত্যাদি। আল্লাহ تعالى আমাদেরকে ২০০ মিলিয়ন বছর আগে থেকে, সেই ডাইনোসরদের আমল থেকে, তেলাপোকার মতো একটি অত্যন্ত টেকসই প্রাণী দিয়ে রেখেছেন, প্রতিদিন প্রকৃতি থেকে বিপুল পরিমাণে ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার করার জন্য, প্রকৃতিতে প্রাণের জন্য অত্যাবশ্যকীয় নাইট্রোজেন চক্র ঠিক রাখার জন্য, গাছপালা টিকে থাকার জন্য।[4]

তাহলে সাপ, কেঁচো, বিছা—এইসব বিকট, নোংরা প্রাণীর কী দরকার ছিল?

পৃথিবীর প্রতিটি প্রাণী এক বা একাধিক প্রাণী এবং গাছপালার উপর নির্ভর করে বেঁচে থাকে। কোনো একটি প্রজাতির প্রাণী যদি না থাকত, তাহলে তার উপর নির্ভরশীল প্রাণীগুলো বেঁচে থাকত না। যেমন, নিচের চিত্রটি কিছু প্রাণীর পারস্পরিক নির্ভরশীলতা দেখায়—

FoodChain

যদি ফাঙ্গাস, ব্যাকটেরিয়া, নানা ধরনের ছোট পোকা না থাকত, তাহলে বন জঙ্গলগুলো মৃত গাছপালা এবং মৃত পশুপাখি দিয়ে ভরে যেত—যেগুলো কোনোদিন না পঁচে লক্ষ লক্ষ বছর ধরে জমতে জমতে বন জঙ্গল ভরে যেত। এছাড়াও সেগুলো পঁচে মাটিতে এবং বায়ুমণ্ডলে নাইট্রোজেন সহ অনেক প্রয়োজনীয় জৈব পদার্থ ছেড়ে দিত না। একসময় নতুন গাছ পালা জন্মাবার জন্য প্রয়োজনীয় জৈব পুষ্টি শেষ হয়ে যেত। একইভাবে, যদি বিছা না থাকত, তাহলে ফাঙ্গাস আর ব্যাকটেরিয়া দিয়ে পৃথিবী ভরে যেত এবং একসময় তারা শুধু মৃত প্রাণী খেয়েই শেষ করে ফেলত না, জীবিত প্রাণীও খাওয়া শুরু করত। যদি বিছা খাবার মতো পাখি না থাকত, তাহলে বিছা দিয়ে সারা পৃথিবী কিলবিল করত। যদি সেই পাখিকে খাবার মতো বড় পাখি, ঈগল, শিয়াল ইত্যাদি না থাকত, তাহলে সেই সব ছোট পাখি দিয়ে পৃথিবী ভরে যেত, প্রাণী জগতের ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যেত। প্রতি বছর এক ব্রিটেনেই যদি মানুষ ৩০ লক্ষ গবাদি পশু, ১৩০ লক্ষ শুকর, ১৯০ লক্ষ ভেড়া ও ছাগল, ৭ কোটি মাছ, ৮০ কোটি হাঁস-মুরগি-পাখি খেয়ে না ফেলত, তাহলে ব্রিটেনের পরিবেশের ভারসাম্য কি হতো তা সহজেই অনুমান করা যায়।[8]

এতো প্রাণীর কী দরকার, অল্প কিছু প্রাণী থাকলে হতো না?

কেউ কেউ প্রশ্ন করে, পৃথিবীতে এতো লক্ষ প্রজাতির প্রাণীর কী দরকার? মানুষের খাওয়ার জন্য হাজার খানেক কিছু প্রজাতির প্রাণী থাকলে হতো না? পৃথিবী যদি সত্যিই মানুষের জন্যই বানানো হতো, তাহলে পৃথিবীতে শুধু নিরীহ কিছু গরু, ছাগল, হাস-মুরগি থাকত। এতো সব ‘অপ্রয়োজনীয়’ প্রজাতির প্রাণীর কী দরকার?

বিজ্ঞানীরা সম্প্রতি বের করেছেন: পৃথিবীতে স্থলে ৬৫ লক্ষ প্রজাতি এবং জলে ২২ লক্ষ প্রজাতির প্রাণী বাস করে। ধারণা করা হয় এর মধ্যে ৮৬% স্থলের প্রাণী এবং ৯১% জলের প্রাণী এখনও আবিস্কার হয়নি।[2] এর মানে দাঁড়ায়, আমরা প্রাণী জগত সম্পর্কে এখনও বলতে গেলে কিছুই জানি না। যেই ব্যাপার নিয়ে আমাদের জ্ঞান খুব অল্প, তা নিয়ে চ্যালেঞ্জ করাটা বোকামি।

phytoplankton_1প্রকৃতিতে প্রতিটি প্রাণী কোনো না কোনো গুরুপূর্ণ দায়িত্ব পালন করে। যেমন, সমুদ্রের উপরের স্তরে এক ধরনের অতিখুদ্র প্রাণী থাকে, যাদেরকে ফাইটোপ্লাঙ্কটন বলা হয়। এরা সমুদ্রের হাজার হাজার প্রজাতির প্রাণীর মূল খাদ্য। এরা না থাকলে সমুদ্র ফাঁকা হয়ে যেত। শুধু তাই না, এরাই বায়ুমণ্ডলে অর্ধেক অক্সিজেন সরবরাহ করে, বাকি অর্ধেক অক্সিজেন আসে গাছপালা থেকে। এছাড়াও এরাই সমুদ্র থেকে বেশিরভাগ কার্বন-ডাই-অক্সাইড সরিয়ে ফেলে।[23] এদের সংখ্যা যদি উল্লেখযোগ্য হারে কমে যায়, তাহলে বায়ুমণ্ডলের ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যাবে, পৃথিবীর অধিকাংশ উন্নত প্রাণ বিলুপ্ত হয়ে যাবে। এখন এদের বেঁচে থাকার জন্য দরকার বিপুল পরিমাণের সমুদ্রের পানিতে দ্রবণীয় আয়রন। প্রশ্ন হলো, এই বিপুল পরিমাণ আয়রন আসে কোথা থেকে?

সমুদ্রের এই অতি খুদ্র প্রাণীর সেবায় রয়েছে প্রাণী জগতের সবচেয়ে বড় প্রাণী—তিমি। বিজ্ঞানীরা গুণে দেখেছেন, দক্ষিণ মহাসাগরগুলোতে ঘুরে বেড়ানো ১২,০০০ তিমি তাদের মল দিয়ে প্রতি বছর সমুদ্রে ৫৫ টন দ্রবণীয় আয়রন সরবরাহ দেয়।[5] এই আয়রন ব্যাবহার করে ফাইটোপ্লাঙ্কটন সালোক সংশ্লেষণের মাধ্যমে প্রতি বছর বায়ুমণ্ডল থেকে ৪৪০,০০০ টন কার্বন সরিয়ে ফেলে। গত কয়েক দশকে অবিচারে তিমি শিকার করার কারণে ফাইটপ্লাঙ্কটনের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে কমে গেছে, যার ফলে সমুদ্রের উপরে এবং গভীরে ছোট মাছ, বিশাল স্কুইডের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে কমে গেছে। আর এর ফলে প্রতি বছর বায়ুমণ্ডলে ২২ লখ টন বেশি কার্বন থেকে যাচ্ছে। একদিকে আমরা লাগামহীনভাবে জ্বালানী পুড়িয়ে বায়ুমণ্ডলে কার্বনের পরিমাণ বাড়িয়ে দিয়ে প্রাকৃতিক ভারসাম্য নষ্ট করছি, অন্যদিকে আমরা অবিচারে তিমি মেরে সেই বাড়তি কার্বন সরিয়ে ফেলার প্রাকৃতিক ব্যবস্থা ধ্বংস করে দিচ্ছি।[3] আল্লাহ تعالى আমাদেরকে তিমি দিয়েছেন যাতে করে আমরা লাগামহীনভাবে জ্বালানি পুড়িয়ে বায়ুমণ্ডলের সর্বনাশ করার পরেও, পৃথিবীতে অনেক যুগ পর্যন্ত শ্বাস নেবার যোগ্য বায়ুমণ্ডল থাকে।

man-whale-swiming-14

এতো বিশাল সমুদ্রের কি দরকার ছিল? সমুদ্রের পানি পানের যোগ্য না কেন?

নাস্তিকদের আরেকটি অভিযোগ হলো: যদি সত্যিই পৃথিবী মানুষের বসবাসের জন্য বানানো হতো, তাহলে সমুদ্রের পানি পানের যোগ্য হতো। পৃথিবীর বেশিরভাগ পানি পানের অযোগ্য নোনা থাকত না। আমাদের চারপাশে এত বিশাল সব সমুদ্র ভর্তি পানি, কিন্তু আমরা তার কিছুই পান করতে পারি না—কীভাবে তাহলে পৃথিবী মানুষের জন্য বানানো হলো?

প্রথমত, পানের যোগ্য পানি ঘুরে ফিরে বেশিরভাগই আসে সমুদ্র থেকে। সমুদ্রের পানি বাষ্প হয়ে মেঘ হয়, তারপর সেই মেঘের বিশুদ্ধ পানি একসময় বৃষ্টি হয়ে নদী, খাল, বিলের মাধ্যমে আমাদের কাছে আসে।

hydro

দ্বিতীয়ত, বিশাল সমুদ্রের পানির কাজ হচ্ছে পৃথিবীর তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা। পানির একটি বড় গুণ হচ্ছে: পানি অনেক তাপ শোষণ করতে পারে এবং অনেকক্ষণ তাপ ধরে রাখতে পারে। একারণেই গাড়ির ইঞ্জিন ঠাণ্ডা রাখার জন্য পানি ব্যবহার করা হয়। সমুদ্রের পানি পৃথিবীর বিষুবরেখার কাছাকাছি অঞ্চলগুলোতে, যেখানে প্রখর রোদ পড়ে, সেখান থেকে বিপুল পরিমাণের তাপ শুষে নিয়ে সেখানকার তাপমাত্রা মাত্রাতিরিক্ত বেশি হওয়া থেকে রক্ষা করে। পৃথিবী সবসময় ঘোরার কারণে এই গরম পানির স্রোত উত্তর এবং দক্ষিণ মেরুর দিকে প্রবাহিত হয় এবং বিষুব রেখার কাছাকাছি জায়গাগুলো থেকে ক্রমাগত তাপ সরিয়ে নিয়ে সেসব জায়গার তাপমাত্রা সহনীয় রাখে। একই সাথে সেই গরম পানির স্রোতগুলো উত্তর-দক্ষিণের অত্যন্ত ঠাণ্ডা অঞ্চলগুলোতে তাপ সরবরাহ করে, তাপমাত্রা বেশি নিচে নেমে যাওয়া থেকে রক্ষা করে। এছাড়াও পানি যেহেতু মাটি থেকে বেশি তাপ ধরে রাখতে পারে, এটি ঠাণ্ডা অঞ্চলগুলোতে সূর্যের তাপ প্রতিফলন হয়ে হারিয়ে যাওয়া থেকে রক্ষা করে এবং মাটি থেকে অনেক বেশি তাপ ধরে রাখে।[6]

তৃতীয়ত, সমুদ্রের নোনা পানিতে শুধু লবণই নয়, অনেক ধরনের রাসায়নিক পদার্থ রয়েছে। একারণে সমুদ্রের পানিতে বিপুল পরিমাণে কার্বন-ডাই-অক্সাইড দ্রবীভূত হয়ে বায়ুমণ্ডল থেকে কার্বন-ডাই-অক্সাইড সরিয়ে ফেলে। আমরা জ্বালানী পুড়িয়ে যে ক্ষতিকর কার্বন-ডাই-অক্সাইড তৈরি করি, তার একটা বিরাট অংশ সমুদ্রের পানিতে দ্রবীভূত হয়ে যায়। এছাড়াও সমুদ্রের পানি বিশেষভাবে তৈরি করা হয়েছে সমুদ্রের লক্ষ লক্ষ প্রজাতির প্রাণীর বেঁচে থাকার জন্য, যারা শেষ পর্যন্ত আমাদেরই বেঁচে থাকার জন্য অত্যাবশ্যকীয়।[7]

co2-2

আল্লাহ تعالى আমাদেরকে বিশাল সমুদ্র এবং তাতে নোনা পানি দিয়েছেন যেন সমুদ্রগুলো পৃথিবীর তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে, জলের প্রাণীর বসবাসের ব্যবস্থা করে এবং স্থলের প্রাণীদেরকে পানের যোগ্য পানি সরবরাহ করে। এত সব বিশাল সমুদ্র যদি না থাকত, এর পানি যদি নোনা না হতো, সমুদ্রে যদি লক্ষ প্রজাতির প্রাণী না থাকত, তাহলে আজকে পৃথিবীতে ৬০০ কোটি মানুষ থাকত না।

এছাড়াও আল্লাহ تعالى আমাদেরকে ২০,০০০ প্রজাতির বেশি গাছপালা, শস্য দিয়েছেন খাবার জন্য।[9] সমুদ্রে এখন পর্যন্ত ২৭,৩০০ প্রজাতির মাছ আবিষ্কার হয়েছে, যা আমরা খেতে পারি।[10] আপনি প্রতিদিন একটা নতুন প্রজাতির মাছ খেলেও ৮০ বছর ধরে প্রতিদিন নতুন মাছ খেয়ে যেতে পারবেন। শুধু তাই না, এখন পর্যন্ত ১৯০০ প্রজাতির পোকা পাওয়া গেছে, যা খাওয়া যায়। এগুলো প্রোটিন এবং ভিটামিনে ভরপুর। গরিব দেশগুলোতে যেখানে মাছ, মাংস খাবার সামর্থ্য মানুষের কম, তারা সহজেই এই সব পোকা রান্না করে খেয়ে ভিটামিনের অভাব মেটাতে পারেন। আজকে পৃথিবীতে প্রায় ২০০ কোটি মানুষ তাদের দৈনন্দিন খাবারে বিভিন্ন ধরনের পোকা খেয়ে বহাল তবিয়তে আছে।[২০] আল্লাহ تعالى গরিব মানুষদের জন্য প্রকৃতিতে প্রায় বিনামূল্যে বিপুল পরিমাণের প্রোটিন এবং ভিটামিনের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন।

এত পাহাড়, পর্বতের কী দরকার ছিল? পৃথিবী পুরোটা সমতল ভূমি হলে মানুষের জন্য ভালো হতো না?

পৃথিবীর মোট স্থলভাগের প্রায় ২৭% জুড়ে আছে পাহাড়-পর্বত।[11] বেশিরভাগ নদীর উৎপত্তি হয় পাহাড়-পর্বতে। সমুদ্রের পানি বাষ্প হয়ে মেঘ হয়, তারপর তা পাহাড়ের গায়ে লেগে পানির ধারা শুরু হয়, যা বড় হতে হতে একসময় নদী হয়ে যায়। পাহাড় না থাকলে নদী থাকত না, নদী না থাকলে এত মাছ থাকত না, সেচের ব্যবস্থা থাকত না, থাকত না মাল পরিবহন, দূরে যাতায়াতের এত সহজ ব্যবস্থা। পাহাড়গুলো শীতকালে বরফ হিসেবে পানি জমিয়ে রাখে এবং গ্রীষ্ম, বসন্তকালে সেই বরফ গলে পানির ধারা নেমে আসে। যদি পাহাড় শীতকালে এভাবে বরফ জমিয়ে না রাখত, তাহলে অন্য ঋতুতে নদী-নালাগুলো শুকিয়ে যেত, শস্যক্ষেত, বনজঙ্গল শুকিয়ে মরুভূমি হয়ে যেত।[12]

Mountain-River-Papua-New-Guinea

হিমালয়ের মতো বিশাল উঁচু পর্বতগুলো মেঘ আটকিয়ে রেখে বিশেষ আবহাওয়া তৈরি করে, যার কারণে উপমহাদেশে মৌসুমি বৃষ্টি হয়। মৌসুমি বৃষ্টি উপমহাদেশের কৃষি এবং মাছের ব্যাপক প্রাচুর্যের জন্য অত্যাবশ্যকীয়; যা না থাকলে উপমহাদেশে এত জনসংখ্যা কোনোদিন হতো না, বহু আগেই মানুষ না খেয়ে মারা যেত, অভাবে বছরের পর বছর দুর্ভিক্ষ লেগে থাকত।[13]

himalayas1

পৃথিবীতে একসময় মানুষের মতো জটিল প্রাণের বিকাশের জন্য প্রয়োজনীয় অক্সিজেন ছিল না। বায়ুমণ্ডলে ব্যাপক পরিমাণে অক্সিজেন ছাড়ার জন্য যেসব ব্যাকটেরিয়া দরকার, তাদের জন্য যথেষ্ট পরিমাণে মলিবডেনাম ছিল না। যখন বড় বড় পর্বতগুলো তৈরি হলো, বিশেষ করে ৭৫০০ ফুটের বেশি উঁচু পর্বতগুলো, তখন সেই পর্বতগুলোর পৃষ্ঠ ক্ষয় থেকে যথেষ্ট পরিমাণে মলিবডেনাম বেরিয়ে এল এবং তা ব্যবহার করে ব্যাকটেরিয়াগুলো বিপুল পরিমাণে অক্সিজেন তৈরি করে বায়ুমণ্ডলে ২০% পর্যন্ত অক্সিজেন সরবরাহ করল। এরপর থেকেই সম্ভব হলো জটিল বহুকোষী প্রাণের বিকাশ। যদি উঁচু পর্বত না থাকত, তাহলে বায়ুমণ্ডলে ২০% অক্সিজেন হতো না, কোনোদিন পৃথিবীতে মানুষ আসত না।[14]

আল্লাহ تعالى পৃথিবীতে উঁচু পর্বত দিয়েছেন যেন বায়ুমণ্ডলে ২০% পর্যন্ত অক্সিজেন তৈরি হয়, যার ফলে পৃথিবীতে উন্নত প্রাণের বিকাশ ঘটতে পারে।

কিন্তু এই পর্বতগুলোর জন্যই তো যত ভূমিকম্প হয়, মানুষ মারা যায়…

প্রতিবছর ৮ রিখটার স্কেলের বেশি ভুমিকম্প হয় গড়ে একটি। এর ফলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি এবং প্রাণনাশ হয় এমন সব ঘনবসতি পূর্ণ অঞ্চলগুলোতে, যেখানে অপরিকল্পতি ভাবে দালান কোঠা তৈরি হয়েছে। শহরগুলোতে মাত্রাতিরিক্ত ঘনবসতি এবং ঘিঞ্জি বাড়িঘর তৈরির কারণে বিপুল পরিমাণে দালান ধসে গিয়ে হাজার হাজার প্রাণ হারিয়ে যায়।

ভুমিকম্প হয় পৃথিবীর পৃষ্ঠের স্তরগুলোর নড়াচড়ার কারণে। পৃথিবীর উপরের পৃষ্ঠটি একটি পাতলা খোলসের মতো, যা অনেকগুলো টুকরোতে ভাগ করা। এই টুকরোগুলোকে বলা হয় ‘টেক্টনিক প্লেট’। এই প্লেটগুলো ক্রমাগত নড়াচড়া করে, সম্প্রসারিত হয়, একটা প্লেট অন্য প্লেটের নীচে আটকিয়ে যায় এবং একসময় হঠাৎ করে ছুটে যায়, আর তখন ভুমিকম্প হয়।

Convection

কী দরকার ছিল এই টেক্টনিক প্লেটগুলোর? পুরো পৃথিবীর উপরের স্তরটা একটা অবিচ্ছিন্ন স্তর হলে সমস্যা কী ছিল?

পৃথিবীতে প্রাণ টিকে থাকার জন্য হাইড্রোজেন, অক্সিজেন, নাইট্রোজেন, ফসফরাস এবং সালফারের ক্রমাগত সরবরাহ দরকার। পৃথিবীর ভেতর থেকে এই প্রয়োজনীয় পদার্থগুলো বেরিয়ে আসে এই প্লেটগুলোর নড়াচড়ার কারণে।[18] অনেক আগে আদি প্রাণীগুলোর বেঁচে থাকার জন্য যে পুষ্টির দরকার ছিল, তা সবরাহ করেছিল এই প্লেট টেক্টনিক্স—প্লেটগুলোর ক্রমাগত সম্প্রসারণ, নড়াচড়া এবং ভুমিকম্প।

পৃথিবীর চারপাশে একটি ম্যাগনেটিক ফিল্ড রয়েছে, যা সূর্য থেকে আসা ক্ষতিকারক রেডিয়েশন থেকে পৃথিবীর প্রাণকে রক্ষা করে। প্লেট টেক্টনিক্স পৃথিবীর এই ম্যাগনেটিক ফিল্ড ঠিক রাখতে সাহায্য করে। যদি প্লেট টেক্টনিক্স বন্ধ হয়ে যায়, তাহলে এই ম্যাগনেটিক ফিল্ড দুর্বল হয়ে সূর্যের রেডিয়েশনে পৃথিবী থেকে প্রাণ বিলুপ্ত হয়ে যাবে।[18]

Coronal-Mass-Ejection-adj

প্লেট টেক্টনিক্স পৃথিবীতে কার্বন রিসাইকেল করে। বিপুল পরিমাণের কার্বন ব্যাকটেরিয়ার মাধ্যমে মাটিতে চলে যায়, যা প্লেট টেক্টনিক্সের কারণে সৃষ্ট অগ্ন্যুৎপাতের মাধ্যমে আবার ফিরে আসে। যদি তা না আসত, তা হলে বায়ুমণ্ডলের তাপমাত্রা কমে পৃথিবী বরফে ঢেকে যেত এবং বেশিরভাগ প্রাণ বিলুপ্ত হয়ে যেত।[19] একারণেই এস্ট্রো-বায়লজিস্টরা এখন দাবি করছেন যে, মহাকাশের কোনো গ্রহে প্রাণ টিকে থাকতে হলে সেটাতে শুধু যথেষ্ট পানি এবং অক্সিজেন থাকলেই হবে না, যদি প্লেট টেক্টনিক্স না থাকে, তাহলে সেখানে প্রাণ টিকে থাকতে পারবে না। আর প্লেট টেক্টনিক্স হতে হলে কোনো গ্রহের উপরের স্তর দুর্বল হতে হবে, যার জন্য দরকার বিপুল পরিমাণের পানি, বিশাল সব সমুদ্র।

আল্লাহ تعالى সমুদ্র দিয়ে পৃথিবীর উপরের স্তর দুর্বল করে, তারপর স্তরটিকে কয়েকটি অংশে ভাগ করে আমাদেরকে প্লেট টেক্টনিক্স দিয়েছেন, যেন পৃথিবীতে প্রাণের জন্য প্রয়োজনীয় রাসায়নিক পদার্থের সরবরাহের শেষ না হয়, কার্বন সাইকেল ঠিক থাকে, পৃথিবীর তাপমাত্রা একটি নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে থাকে এবং পৃথিবীর ম্যাগনেটিক ফিল্ড যথেষ্ট শক্তিশালী থেকে সূর্য এবং মহাকাশের ক্ষতিকর রেডিয়েশন থেকে আমাদেরকে রক্ষা করে।

সবশেষে, এই প্লেট টেক্টনিক্সের কারণে আজকে পৃথিবীতে এত বড় স্থলভাগ তৈরি হয়েছে। কয়েকশ মিলিয়ন বছর আগে পৃথিবীতে মাত্র একটি জায়গায় স্থল ভাগ ছিল। তারপর তা প্লেট টেক্টনিক্সের কারণে ছড়িয়ে গিয়ে এতগুলো মহাদেশ তৈরি হয়েছে।

A08

আল্লাহ تعالى পৃথিবীর সবকিছু মানুষের জন্য যে তৈরি করেছেন শুধু তাই নয়, তিনি পৃথিবীকে একদম শুরু থেকে ধাপে ধাপে গঠন করেছেন যেন একদিন পৃথিবীতে মানুষ থাকতে পারে। পৃথিবীর বিলিয়ন বছরের ইতিহাস দেখলে পরিষ্কার প্রমাণ পাওয়া যায় যে, একদম শুরু থেকেই এই গ্রহটি প্রস্তুতি নিচ্ছিল যে এখানে একদিন মানুষ থাকবে।

সাতটি আকাশ

আয়াতটির পরের অংশে আল্লাহ تعالى বলছেন—

2_29-1

তারপর তিনি নির্দেশ করেছিলেন আকাশের প্রতি এবং তাদেরকে সাতটি/অনেক আকাশে গঠন করেছেন।

নাস্তিকরা এই আয়াতটি দেখিয়ে বলে, “দেখ! তোমাদের কু’রআনে ভুল আছে? কু’রআন বলে আকাশ সৃষ্টি হয়েছে পৃথিবী সৃষ্টির পরে!”

এই আয়াতটি বলে না যে, আকাশ সৃষ্টি হয়েছে পৃথিবী সৃষ্টির পরে, এটি বলে যে, আগে যে আকাশ ছিল তাকে সাতটি আকাশে গঠন করা হয়েছে।[৪] পৃথিবীর ইতিহাস দেখলে দেখা যায়, প্রথমে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল পুরোটা জুড়ে ছিল শুধুই হাইড্রোজেন এবং হিলিয়াম, কোনো স্তর ছিল না। তারপর কয়েক বিলিয়ন বছরের প্রক্রিয়ায় বায়ুমণ্ডলের স্তরগুলো তৈরি হয়েছে, বিশেষ করে অক্সিজেন এসেছে ব্যাকটেরিয়া আসার পরে, অনেক উঁচু পর্বত তৈরি হবার পর।[22]

আরবি নিয়ে আগ্রহীদের জন্য একটি উল্লেখযোগ্য ব্যাপার। اِسْتَوَىٰ অর্থ হয় সোজা, সমান, নিয়মিত করা। কিন্তু اِسْتَوَىٰ এর পরে যখন إلى আসে, তখন তার অর্থ হয় ‘মনোনিবেশ করা’, যা আল্লাহর تعالى ক্ষেত্রে ব্যবহার করাটা উচিত হবে না। তাই অনুবাদে ‘নির্দেশ করা’ বলা হয়েছে।[৫] আর আরবিতে سبع ব্যবহার করা হয় সাত বা অনেক—দুই ক্ষেত্রেই।[২]

এখন এই সাতটি আকাশ নিয়ে দুটি প্রতিষ্ঠিত মত রয়েছে। একটি হলো—এখানে আল্লাহ বায়ুমণ্ডলের ৭টি স্তরের কথা বলেছেন বা পৃথিবীর কাছাকাছি যে আকাশ রয়েছে, তাকে সাতটি স্তরে ভাগ করাকে বুঝিয়েছেন।[৪] বায়ুমণ্ডলে কয়টি স্তর রয়েছে, তা নিয়ে মতবিরোধ রয়েছে। অনেকে ‘ওজন স্তর’-কে একটি আলাদা স্তর দাবি করেন, অনেকে করেন না। অনেকে এক্সস্ফিয়ারকে একটি স্তর গোনেন, অনেকে বলেন এটা কোনো স্তর হতে পারে না। তাই এই ধারণা নিয়ে মতবিরোধ রয়েছে। কিন্তু উল্লেখযোগ্য ব্যাপার হলো, আমরা যদি উপরের দিকে যেতে থাকি, তাহলে দেখা যায় বায়ুমণ্ডলের তাপমাত্রা ঠিক সাত বার পরিবর্তন হয়। প্রথমে তাপমাত্রা কমতে থাকে, তারপর প্রায় ৬ মাইল উচ্চতা পর্যন্ত তা মোটামুটি একই থাকে, তারপর তা বাড়তে থাকে, আবার অনেক উচ্চতা পর্যন্ত একই থাকে, আবার কমে। নীচে লাল দাগটি দেখুন, তা ঠিক সাত বার পরিবর্তন হয়—

atmslayers

হয়তো আল্লাহ تعالى বায়ুমণ্ডলের তাপমাত্রার এই সাত বার পরিবর্তনের ফলে সৃষ্ট সাতটি স্তরের কথাই বলেছেন।[21]

আরেকটি মত হলো, প্রথম আকাশটি হচ্ছে আসলে আমাদের দৃশ্যমান মহাবিশ্ব। এরকম আরও ছয়টি মহাবিশ্ব রয়েছে। এর স্বপক্ষে প্রমাণ দেখাতে গিয়ে সূরা ফুসসিলাত-এর ১২ নম্বর আয়াত দেখানো হয়, যেখানে আল্লাহ تعالى বলেছেন:

وَزَيَّنَّا ٱلسَّمَآءَ ٱلدُّنْيَا بِمَصَٰبِيحَ

আমি প্রথম আকাশকে সাজিয়েছি বহু প্রদীপ দিয়ে।

অনেকে বলেন এই প্রদীপ বলতে সূর্য, নক্ষত্র, গ্যালাক্সি—এগুলো বোঝানো হয়েছে। কিন্তু এই মতের বিপক্ষে প্রমাণ দেখাতে গিয়ে অনেকে বলেন, বাকারার আয়াতে ثُمَّ (তারপর) ব্যবহার করা হয়েছে, যার অর্থ পৃথিবী আগে ছিল, ‘তারপর’ বায়ুমণ্ডলকে (আকাশকে) সাতটি স্তরে ভাগ করা হয়েছে। এছাড়াও আব্দেল হালিমের কু’রআনের অনুবাদ অনুসারে ফুসসিলাতের আয়াতটির অর্থ আসলে হবে, “আমি কাছের আকাশটিকে সুন্দরভাবে উজ্জ্বল করেছি”—এখানে প্রদীপের কোনো উল্লেখ নেই।  আরেকটি প্রমাণ হলো, সূরা নুহ ১৫-১৬ আয়াতে বলা হয়েছে —

71_15

71_16

কখনও চিন্তা করে দেখেছো: কীভাবে আল্লাহ সাতটি আকাশ সৃষ্টি করেছেন—একটির উপর আরেকটি ? তিনি চাঁদকে তাদের (আকাশদের) মধ্যে একটি আলো হিসেবে দিয়েছেন এবং সূর্যকে একটি প্রদীপ হিসেবে? [নুহ ১৫-১৬]

এখানে  ১৬ নম্বর আয়াতে فِيهِنَّ  অর্থ “তিন বা তার অধিক আকাশের মধ্যে।” যার মানে দাঁড়ায়, প্রথম আকাশ পুরো মহাবিশ্ব হতে পারে না, কারণ চাদের আলো এই পুরো মহাবিশ্বকে আলোকিত করে না, করবেও না—আরও দুটি মহাবিশ্ব তো দূরের কথা। এই আয়াতের ব্যাখ্যা একটাই হতে পারে—চাঁদ বায়ুমণ্ডলের কমপক্ষে তিনটি স্তরে আলো হিসেবে রয়েছে। ১৫ নম্বর আয়াতে আল্লাহ تعالى আকাশকে সাতটি আকাশে তৈরির কথা বলেছেন এবং ১৬ নম্বর আয়াতে তিনি  فِيهِنَّ  বলতে সম্ভবত সেই সাতটি আকাশকেই বুঝিয়েছেন।

সুতরাং সাত আকাশ বলতে বায়ুমণ্ডলের সাতটি স্তর, যেখানে শেষ স্তরটি হচ্ছে মহাকাশ—এর পক্ষে এখন পর্যন্ত তিনটি যুক্তি রয়েছে।

আরেকটি উল্লেখযোগ্য ব্যাপার হলো, “তারপর” একটি সময়ের ধারণা। আল্লাহর تعالى কাছে সময় এবং আমাদের কাছে সময় ভিন্ন ব্যাপার। তিনি সময়ের উর্ধে। তাই তার কাছে “তারপর” আর আমাদের কাছে “তারপর” এক নয়।[৮] যেমন কু’রআনে বহু জায়গায় আল্লাহ تعالى ভবিষ্যতের ঘটনাগুলো এমনভাবে বলেছেন, যেন তা ইতিপূর্বে ঘটে গেছে। কারণ আমাদের কাছে অতীত, বর্তমান, ভবিষ্যৎ যেরকম, তাঁর কাছে সেরকম নয়। আমাদের ভাষার শব্দভাণ্ডারে অতীত, বর্তমান এবং ভবিষ্যতের বাইরে কোনো শব্দ নেই, কারণ আমরা এর বাইরে কোনো কিছু কল্পনা করতে পারি না। আমাদের সমস্ত চিন্তা, কল্পনা, অভিজ্ঞতা স্থান এবং কালের মধ্যে সীমাবদ্ধ। স্থান এবং কালের বাইরে যা কিছুই আছে, তা আমরা কখনই জানতে পারব না। একারণেই আল্লাহ تعالى বলেছেন—

আর একমাত্র তিনিই সবকিছুর ব্যাপারে সব জানেন। [বাকারাহ ২৯]

earth_wallpaper

তথ্য সুত্রঃ

  • [1] http://www.huffingtonpost.com/2012/06/21/cockroaches-good-environment-nitrogen-cycle_n_1614913.html
  • [2] http://www.sciencedaily.com/releases/2011/08/110823180459.htm
  • [3] http://www.reasons.org/articles/thank-god-for-whales
  • [4] http://insects.about.com/od/roachesandmantids/a/10-Facts-About-Cockroaches.htm
  • [5] http://www.newscientist.com/article/dn18807-whale-poop-is-vital-to-oceans-carbon-cycle.html
  • [6] http://oceanservice.noaa.gov/education/pd/oceans_weather_climate/ocean_basics.html
  • [7] http://www.pmel.noaa.gov/co2/story/Ocean+Carbon+Uptake
  • [8] http://www.hsa.org.uk/Frequently%20Asked%20Questions.htm#Q1
  • [9] http://www.pfaf.org/user/default.aspx
  • [10] http://www.flmnh.ufl.edu/fish/education/questions/questions.html
  • [11] http://www.cbd.int/mountain/importance.shtml
  • [12] http://www.fao.org/docrep/w9300e/w9300e03.htm
  • [13] http://www.yearofscience2009.org/themes_geosciences/2009/10/no-earthquakes.html
  • [14] http://www.reasons.org/articles/majestic-mountain-grandeur
  • [15] http://www.avert.org/worldstats.htm
  • [16] http://www.livescience.com/3780-odds-dying.html
  • [17] http://en.wikipedia.org/wiki/List_of_countries_by_traffic-related_death_rate
  • [18] http://www.astrobio.net/exclusive/3039/
  • [19] http://www.astrobio.net/pressrelease/1310/the-breathable-earth
  • [20] http://www.nature.com/scitable/blog/labcoat-life/why_should_we_eat_insects
  • [21] http://www.physicalgeography.net/fundamentals/7b.html
  • [22] http://scijinks.nasa.gov/_media/en/site/atmosphere-formation/atmosphere1.jpg
  • [23] http://news.nationalgeographic.co.uk/news/2004/06/0607_040607_phytoplankton.html
  • [২] ম্যাসেজ অফ দা কু’রআন – মুহাম্মাদ আসাদ।
  • [৪] মা’রিফুল কু’রআন – মুফতি শাফি উসমানী।
  • [৫] মুহাম্মাদ মোহার আলি – A Word for Word Meaning of The Quran
  • [৮] সৈয়দ কুতব – In the Shade of the Quran

নতুন আর্টিকেল বের হলে জানতে চাইলে কু’রআনের কথা ফেইসবুক পেইজে লাইক করে রাখুন—

3 thoughts on “পৃথিবীতে সবকিছু আমাদের জন্য বানানো হয়েছে — বাকারাহ ২৯”

  1. শুনছিলাম ১৮হাজার মাক্লুকাত আল্লাহ্‌ সৃষ্টি করছেন।তাহলে লক্ষ লক্ষ হল কি করে?

Leave a Reply to ইমরান Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *