প্রমাণ দেখাও, যদি সত্যি বলে থাকো — আল-বাক্বারাহ ১১১-১১২

আজকাল সুধীবৃন্দরা দাবি করেন, “তোমাদের ইসলাম একটা অসহনশীল, বর্বর ধর্ম। তোমরা দাবি করো যে, ইসলাম হচ্ছে একমাত্র সঠিক ধর্ম, আর অন্য সব ধর্ম সব ভুল। আর তোমরা অন্য ধর্মের মানুষদের সন্মান করো না, তাদের অধিকার দাও না, তাদেরকে কাফির গালি দিয়ে হত্যা করার কথা বলো। এরচেয়ে অমুক ধর্ম অনেক সহনশীল, সুন্দর। ”
—এর উত্তর খুব সহজ: প্রথমত, হ্যা, ইসলাম দাবি করে যে, ইসলাম হচ্ছে একমাত্র সঠিক ধর্ম এবং বাকি সব ধর্ম তার আসল রূপ থেকে বিকৃত হয়ে গেছে, যার কারণে সেগুলো আর মানা যাবে না। দ্বিতীয়ত, খ্রিস্টান এবং ইহুদি ধর্মও সেটাই দাবি করে, এমনকি হিন্দু ধর্মও একই দাবি করে, যেখানে খোদ কৃষ্ণই সেই কথা বলেছেন ভগবৎ গীতায়। তৃতীয়ত, যদি কোনো ধর্ম না দাবি করে যে, সে একমাত্র সঠিক ধর্ম, কারণ বাকি সব ধর্ম বিকৃত হয়ে গেছে, তার মানে দাঁড়ায়: সৃষ্টিকর্তা সেই নতুন ধর্ম পাঠিয়েছেন এমনিতেই সময় কাটানোর জন্য। তিনি বসে বসে বিরক্ত হয়ে যাচ্ছিলেন, তাই তিনি নতুন একটা কিছু করার জন্য প্রচুর কাঠখড় পুড়িয়ে, বিপুল পরিমাণ মানুষের সময় খরচ করে, অনেক মানুষের ত্যাগের বিনিময়ে এমন একটা নতুন ধর্ম পাঠালেন, যেটা না মানলেও কোনো সমস্যা নেই, কারণ আগের ধর্মগুলো তো ঠিকই আছে। অন্য ধর্মের লোকরা সব সৎ পথেই আছে এবং স্বর্গেও যাবে। তাই এই নতুন ধর্মটা যদি কেউ মানে তো ভালো, না মানলেও কোনো সমস্যা নেই।

আজকাল এইসব সুধীবৃন্দরা যা দাবি করছেন, তা হচ্ছে অনেকটা এরকম: ইসলাম বা অন্য ধর্মগুলোতে, যেখানে সৃষ্টিকর্তা ঘোষণা দিয়েছেন যে, সেটাই একমাত্র সঠিক ধর্ম কারণ অন্য ধর্মগুলো বিকৃত হয়ে গেছে, সেখানে আসলে স্রস্টার বলা উচিত ছিল, “হে আমার বান্দারা, আজকে আমি তোমাদেরকে একটা ধর্ম দিলাম। এটা অন্য সব ধর্ম থেকে বেশি ঠিক, তা আমি দাবি করবো না। আমার ভুল ত্রুটি হতেই পারে। আর এটা তোমরা মানতেও পারো, নাও পারো। সমস্যা নেই, একটা ধর্ম মানলেই হলো। বেশি দুষ্টামি না করলে তোমরা স্বর্গে যাবেই।”

এই পর্বে ধর্ম নিয়ে দুটো ব্যাপারে আলোচনা করা হবে: ১) Religious Exclusivity বা ধর্মীয় স্বতন্ত্রতা, ২) Religious Intolerance বা ধর্মীয় অসহিষ্ণুতা। আমরা দেখব হিন্দু, খ্রিস্টান, ইহুদি, ইসলাম — এই ধর্মগুলোর মধ্যে কোনটা আসলেই সহিষ্ণুতা প্রচার করে।

quran-and-bible

  (আর্টিকেলের বাকিটুকু পড়ুন)

ওরা চায় না তোমাদের ভালো কিছু হোক — আল-বাক্বারাহ ১০৫

কু’রআনে কিছু আয়াত রয়েছে যেগুলো অমুসলিম সমালোচকরা এবং ইসলামকে যারা আক্রমণ করার জন্য সবসময় ওতপেতে থাকেন, তারা পড়লে বড়ই খুশি হন, কারণ তারা ইসলামকে একটি “মধ্যযুগীয় বর্বর ধর্ম” হিসেবে প্রচার করার জন্য এই আয়াতগুলো থেকে অস্ত্র পেয়ে যান। আবার এই একই আয়াতগুলো একদল চরমপন্থী মুসলিমরা পড়লে বড়ই খুশি হন, কারণ তারা এই আয়াতগুলো থেকে অমসুলিমদের বিরুদ্ধে মারামারি, খুনাখুনি করার জন্য অনুপ্রেরণা এবং আদেশ খুঁজে পান। এই দুই ধরনের মানুষরা গত হাজার বছর ধরে ইসলামের একই ক্ষতি করে গেছেন: ইসলামকে সাধারণ মানুষের মাঝে একটি অসহনশীল, কট্টর, আগ্রাসী ধর্ম হিসেবে কুখ্যাত করে দিয়ে গেছেন। এরকম একটি আয়াত হলো—

2_105

আল্লাহর সাথে যারা শিরক করে এবং আহলে কিতাবের (ইহুদি এবং খ্রিস্টান) মধ্যে থেকে যারা সত্যকে অস্বীকার (কুফরি) করেছে, তারা কখনই চায় না যে, তোমাদের প্রভুর কাছ থেকে একটুও ভালো কিছু আসুক তোমাদের উপর। কিন্তু আল্লাহ যাকে ইচ্ছা তাঁর অনুগ্রহের জন্য মনোনীত করেন। আল্লাহ অপরিসীম অনুগ্রহের অধিকারী। [আল-বাক্বারাহ ২:১০৫]

এই আয়াত পড়ে অমুসলিমরা বলে, “তোমাদের কাছে আমরা সবাই কাফির? তোমরা না বল ইসলাম হচ্ছে শান্তি, সহমর্মিতার ধর্ম? এই হচ্ছে তার নমুনা?” আর অন্যদিকে একদল মুসলিমরা, যারা রক্তের গন্ধের জন্য পাগল হয়ে আছেন, তারা এইধরনের আয়াত পড়ে চোখ লাল করে চিৎকার দিয়ে ওঠেন, “ওরা সব কাফির! ওরা কেউ চায় না আমাদের ভালো কিছু হোক। ভাই সব, অস্ত্র হাতে নিয়ে ইহুদি, খ্রিস্টান, মুশরিকদেরদের বিরুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ুন। আল্লাহু আকবার!”

gaza.si  (আর্টিকেলের বাকিটুকু পড়ুন)