তোমরা যেদিকেই মুখ ফেরাও, সেদিকেই আল্লাহকে পাবে — আল-বাক্বারাহ ১১৫

মানুষ ভুলে যায়। অনেক সময় পরিস্থিতির শিকার হয়ে সে মনে রাখতে পারে না: আল্লাহ تعالى তার কাছ থেকে কী আশা করেন, কী করতে নিষেধ করেছেন, কী করতে বার বার বলেছেন। একারণেই মানুষকে দৈনন্দিন জীবনের নির্দেশ, উপদেশগুলো —যেগুলো তার জীবনে বিরাট পরিবর্তন আনতে পারে— সেগুলো একবার, দুইবার দিলে হয় না, বার বার মনে করিয়ে দিতে হয়। তখন তা তার মনের মধ্যে গেঁথে যায়। কঠিন পরিস্থিতিতেও সে নিজেকে মনে করিয়ে দিতে পারে। এরকম একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, দৃষ্টিভঙ্গি পালটিয়ে দেওয়ার মত উপদেশ এসেছে আল-বাক্বারাহ’র এই আয়াতে—

2_115

পূর্ব পশ্চিম সব আল্লাহর। তোমরা যেদিকেই মুখ ফেরাও, সেদিকেই আল্লাহকে تعالى পাবে। আল্লাহ تعالى সবকিছুকেই ঘিরে আছেন, সবকিছুই জানেন।  [আল-বাক্বারাহ ১১৫]

scotland-landscape-photography-1

একটি ঘটনা দেখি—

রাত দুটা। চারিদিকে শুনশান নীরবতা। আপনি কম্পিউটার ছেড়ে ফেইসবুকের দিকে তাকিয়ে আছেন। একজনের শেয়ার করা একটা ভিডিও দেখে আপনার হার্টবিট বেড়ে গেছে। ভিডিওটা দেখার জন্য আপনার প্রাণ আকুপাকু করছে। ক্লিক করতে গিয়েও করছেন না। নিজের সাথে সংগ্রাম করছেন: এরকম একটা বাজে ভিডিও দেখে নিজের ভেতরটা নোংরা করে ফেলবেন?  ঠিক তখনি আপনার মনে পড়ল—

তোমরা যেদিকেই মুখ ফেরাও, সেদিকেই আল্লাহকে تعالى পাবে। আল্লাহ تعالى সবকিছুকেই ঘিরে আছেন, সবকিছুই জানেন।

আপনি সাথে সাথে উপলব্ধি করলেন: আপনি যে এই ভিডিওটার দিকে তাকিয়ে আছেন এবং ভিডিওটা পুরোটা দেখার চিন্তা করছেন, এগুলো সব আল্লাহ تعالى দেখছেন। আপনি লজ্জা পেয়ে গেলেন। ছি! আল্লাহর تعالى সামনে এরকম একটা বাজে কাজ আপনি কীভাবে করতে পারেন! আপনি তাড়াতাড়ি নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করলেন। ফেইসবুক বন্ধ করে ঘুমাতে গেলেন।  (আর্টিকেলের বাকিটুকু পড়ুন)

তার কথা মনোযোগ দিয়ে শোনো — আল-বাক্বারাহ ১০৪

আপনি একটি কনফারেন্সে এসেছেন একজন বিখ্যাত সাইকিয়াট্রিস্টের কথা শুনতে। সেই বক্তার সম্পর্কে আপনি অনেক ভালো কথা শুনেছেন আগে। তাই আপনি বেশ আশা নিয়ে বসে আছেন যে, আজকে একটা ভালো অভিজ্ঞতা হবে, অনেক কিছু জানতে পারবেন। বক্তৃতা শুরু হলো। বক্তা তরুণ সমাজের বেহাল অবস্থা নিয়ে নানা ধরনের বৈজ্ঞানিক মন্তব্য করছেন। তখন আপনার পাশের বন্ধু, যার অবস্থার সাথে বক্তার কথা বেশ মিলে যাচ্ছে, তাড়াতাড়ি বলা শুরু করল, “আরে গাধাটা বলে কি! ও কোথা থেকে এই সব আবোল তাবোল জিনিস শিখে এসেছে?” সাথে সাথে বক্তার উপর আপনার সব শ্রদ্ধা চলে গেল। বাকি সময়টা আপনিও বক্তার কথা পজেটিভলি বোঝার চেষ্টা না করে, উল্টো তার প্রতিটা কথায় দোষ ধরা শুরু করলেন।

ফেইসবুকে একদিন একটা ইসলামের উপর গুরুত্বপূর্ণ আর্টিকেল লক্ষ করলেন, যা দেখে আপনার মনে হলো আর্টিকেলটা পড়া দরকার। পড়ার আগে আপনি একবার অন্যদের মন্তব্যগুলো দেখে নিলেন। কয়েকটা মন্তব্য পড়ে আপনি আর্টিকেলটা পড়তে প্রস্তুত। কিন্তু একটা মন্তব্যে আপনার চোখ আটকে গেল — “এইসব ফালতু গাঁজাখুরি কথাবার্তা কোথায় পান? যতসব গণ্ডমূর্খের দল।” ব্যাস, আপনার পড়ার প্রস্তুতি সব শেষ। আপনি আর্টিকেলটা পড়ার আগ্রহ হারিয়ে ফেললেন।

এই ধরণের অসন্মানজনক তুচ্ছতাচ্ছিল্য করাটা আগে একদল ইহুদির অভ্যাস ছিল। ব্যাপারটা আল্লাহর تعالى কাছে এতটাই জঘন্য যে, তিনি একটি আয়াত নাজিল করে দিয়েছেন তাদের এই জঘন্য অভ্যাসটার ব্যাপারে সাবধান করে দিয়ে—

2_104

তোমরা যারা বিশ্বাস করেছ, নবীকে “রাই’না” (আমাদের কথা শুনো) বলবে না, বরং অনুরোধ করবে “উনযুরনা” (আমাদের জন্য অপেক্ষা করুন) এবং তার কথা মনোযোগ দিয়ে শোনো। যারা তা মানবে না, সেই কাফিরদের জন্য রয়েছে প্রচণ্ড কষ্টের শাস্তি। [আল-বাক্বারাহ ১০৪]

  (আর্টিকেলের বাকিটুকু পড়ুন)