গত কয়েক শতকে উপমহাদেশের মানুষদেরকে কৌশলে কুরআন থেকে দূরে রেখে কয়েকটা প্রজন্ম তৈরী করা হয়েছে, যারা কুরআন সম্পর্কে নুন্যতম জ্ঞানও রাখে না। এরা জানে না কুরআনে পরিষ্কারভাবে কী হালাল, কী হারাম বলা আছে, তাওহীদের শিক্ষা কী? তারা শুধু পড়েছে কিছু গৎবাঁধা বই, যেই বইগুলোর অনেকগুলোতেই নানা ধরনের জাল হাদিস, বিদআতের ছড়াছড়ি।[১১] এভাবে একটি পুরো জাতিকে কুরআনে নিরক্ষর করে রেখে গেছে কিছু ইসলামী নামধারি দল এবং কথিত আলেম নিজেদের ইচ্ছামত ধর্ম ব্যবসা করার জন্য। এদের পরিণাম ভয়ঙ্কর—
আল্লাহ যা পাঠিয়েছেন সেটা যারা গোপন রাখে, আর দুনিয়ায় সামান্য লাভের বিনিময়ে তা বেচে দেয়, ওরা নিজেদের পেটে জাহান্নামের আগুন ছাড়া আর কিছু ভরে না। কিয়ামতের দিন আল্লাহ ওদের সাথে কথা বলবেন না, ওদেরকে পবিত্রও করবেন না। ওদের জন্য রয়েছে প্রচণ্ড কষ্টের শাস্তি। [আল-বাক্বারাহ ১৭৪]
আজকাল অনেক ‘আধুনিক মুসলিম’ কু’রআনের আয়াতগুলোর পরিষ্কার বাণীকে ধামাচাপা দিয়ে, অনেকসময় বিশেষভাবে অনুবাদ করে, ইসলামকে একটি ‘সহজ জীবন ব্যবস্থা’ হিসেবে মানুষের কাছে প্রচার করার চেষ্টা করছেন। তারা দেখছেন যে, পাশ্চাত্যের ‘উন্নত’ জাতিগুলো ধর্ম থেকে দূরে সরে গিয়ে কত আনন্দের জীবন যাপন করছে, জীবনে কত স্বাধীনতা উপভোগ করছে: প্রতিদিন রংবেরঙের মদ পান করছে, বিশাল সব আভিজাত্যের হোটেলে গিয়ে জুয়া খেলছে, সুইমিং পুলে সাঁতার কাটছে; ইচ্ছামত সুন্দর কাপড় পড়ছে, বন্ধু বান্ধব নিয়ে নাচগান করছে—জীবনে কতই না ফুর্তি ওদের।
ওদের এত সুখ, এত আনন্দ দেখে তারা ভিতরে ভিতরে ঈর্ষায় জ্বলে যাচ্ছে। কেন তারা ওদের মতো ফুর্তি করতে পারবে না? কেন তাদেরকে এতটা নিয়ন্ত্রিত জীবন যাপন করতে হবে?— এটা তারা কোনোভাবেই নিজেদেরকে বোঝাতে না পেরে, চেষ্টা করছে কোনোভাবে যদি ইসলামকে একটি ‘আধুনিক’, ‘সহজ’ জীবন ব্যবস্থা হিসেবে মানুষের কাছে প্রচার করা যায়। তখন তারা পশ্চিমাদের মতো ফুর্তি করতে পারবে, আবার মুসলিমদের কাছ থেকে একদম দূরেও সরে যেতে হবে না, সমাজে অপরাধীর মতো লুকিয়ে চলতে হবে না। ‘মুহাম্মাদ’ ‘আব্দুল্লাহ’ নাম নিয়ে একদিকে তারা সপ্তাহে একদিন জুম্মার নামায পড়তে যেতে পারবে, অন্যদিকে বিয়ের অনুষ্ঠানে গিয়ে মেয়েদের সাথে নাচতে পারবে, রবিবারে পার্টিতে বন্ধুদের সাথে একটু রঙিন পানিও টানতে পারবে। এভাবে তারা ‘আল্লাহ যা পাঠিয়েছেন সেটা গোপন রাখে, আর দুনিয়ায় সামান্য লাভের বিনিময়ে তা বেচে দেয়,’—কু’রআনের শিক্ষার পরিপন্থী একটি জীবন যাত্রাকে নিজেদের ফুর্তির জন্য মুসলিমদের কাছে গ্রহণযোগ্য করানোর চেষ্টা করছে। (আর্টিকেলের বাকিটুকু পড়ুন)