তুমি উপদেশ দিতে থাকো, এতে লাভ হোক আর না হোক — আল-আ়লা ৬-১৯ পর্ব ৩

অচিরেই আমি তোমাকে দিয়ে পড়াবো, তারপর তুমি আর ভুলবে না। তবে আল্লাহ যা ইচ্ছা করেন তা ছাড়া। তিনি প্রকাশ্য এবং যা গোপন  করা হয়,তা অবশ্যই জানেন। আর আমি তোমার জন্য সহজকে পাওয়া সহজ করে দেবো। তাই তুমি উপদেশ দিতে থাকো, এতে লাভ হোক আর না হোক। যার অন্তরে ভয় আছে সে তা গ্রহণ করবে। আর চরম হতভাগা তা পাশ কাটিয়ে যাবে। সে ভয়ংকর আগুনে পুড়বে। তারপর সেখানে সে না মরবে, না বাঁচবে। যে নিজেকে পরিশুদ্ধ করে, সে-ই তো সাফল্য লাভ করে। আর যে তার প্রতিপালকের নাম স্মরণ করে নামাজ পড়ে।

অচিরেই আমি তোমাকে দিয়ে পড়াবো, তারপর তুমি আর ভুলবে না। তবে আল্লাহ যা ইচ্ছা করেন তা ছাড়া। তিনি প্রকাশ্য এবং যা গোপন করা হয় তা অবশ্যই জানেন।

ধরুন, একদিন এক অতি উন্নত মহাজাগতিক প্রাণী, একজন মানুষের সাথে যোগাযোগ করে বলল যে, পুরো মানবজাতির

অস্তিত্ব এখন হুমকির মুখে। তোমাকে আমি এমন কিছু তথ্য দেব, যার মধ্যে মানবজাতি ধ্বংস হয়ে যাওয়া থেকে বাঁচার উপায় দেওয়া আছে। তুমি প্রথমে নিজে মুখস্ত করবে, তারপর মানুষের কাছে তা পৌঁছে দেবে। আর সাবধান, এই তথ্য এসেছে আমার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ, স্বয়ং মহাবিশ্বের স্রস্টার কাছ থেকে। মানুষ যদি তার কথা না শোনে, তাহলে তিনি তোমার জাতিকে নিশ্চিহ্ন করে দেবেন।

—এরকম ভয়ংকর দায়িত্ব কাউকে দিলে স্বাভাবিকভাবেই তার ভেতরে আতংক তৈরি হবে। যদি সে ভুলে যায়? যদি সে নিজে ভুল বুঝে অন্যকে ভুল শেখায়? যদি সে ঠিকমত পুরো তথ্য মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে না পারে? তখন কী হবে? মানবজাতিকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করার দায়িত্ব তার একার ঘাড়ে এখন? কি সর্বনাশ!  (আর্টিকেলের বাকিটুকু পড়ুন)

যিনি পরিমাপ নির্ধারণ করে দিয়ে পথ দেখিয়েছেন —আল-আ়লা ১-৫ পর্ব ২

তোমার রবের মহত্ত্ব ঘোষণা করো। যিনি সৃষ্টি করে তাকে সুসামঞ্জস্যপূর্ণ করেছেন। যিনি পরিমাপ নির্ধারণ করে দিয়ে পথ দেখিয়েছেন। যিনি তৃণাদি বের করে এনে ঘন-কালো সবুজে পরিণত করেন।—আল-আ়লা ১-৫

আল্লাহ تعالى প্রতিটি সৃষ্টির ক্বদর অর্থাৎ পরিমাণ নির্ধারণ করে দিয়েছেন এবং তারপর তিনি তাকে হুদা অর্থাৎ পথ দেখিয়েছেন। মহাবিশ্বের প্রতিটি পরমাণুর মধ্যে ইলেকট্রন এবং প্রোটনের চার্জ সমান এবং বিপরীত করে দিয়েছেন, যেন ইলেকট্রন পরমাণু ছেড়ে চলে না যায়। আবার এরা যেন একে অন্যকে আকর্ষণ করে একসাথে লেগে ধ্বংস হয়ে না যায়, সেজন্য তিনি এদের মধ্যে নিখুঁত পরিমাণে বিকর্ষণ বল দিয়েছেন, যা এদেরকে একে অন্যের থেকে দূরে রাখে।

চিত্র: পরমাণুর ভেতরে প্রোটন এবং ইলেকট্রন (কাল্পনিক)

প্রতিটি কোষ নিখুঁতভাবে তিনি تعالى তৈরি করেছেন, যেন তা থেকে একটি পূর্ণ উদ্ভিদ বা প্রাণী তৈরি হতে পারে। একটু পুরো মানুষ তৈরি করার ডিজাইন সংরক্ষণ করা আছে মানুষের একটি কোষের মধ্যে। মহাবিশ্বের সবচেয়ে জটিল যন্ত্র ‘মানব মস্তিষ্ক’ তৈরি করার অকল্পনীয় জটিল ব্লু-প্রিন্ট রাখা আছে খালি চোখে দেখা যায় না এমন ক্ষুদ্র কোষের ডিএনএ-তে।  (আর্টিকেলের বাকিটুকু পড়ুন)

যিনি সৃষ্টি করে তাকে সুসামঞ্জস্যপূর্ণ করেছেন — আল-আ়লা ১-৫ পর্ব ১

তোমার রবের মহত্ত্ব ঘোষণা করো। যিনি সৃষ্টি করে তাকে সুসামঞ্জস্যপূর্ণ করেছেন। যিনি পরিমাপ নির্ধারণ করে দিয়ে পথ দেখিয়েছেন। যিনি তৃণাদি বের করে এনে ঘন-কালো সবুজে পরিণত করেন। —আল-আ়লা ১-৫

সুরাহ আল-আ়লা’য় আমরা বহু ধরনের স্রষ্টা বিদ্বেষীদের প্রশ্নের উত্তর পাবো। আজকে যদি আমরা চারিদিকে তাকিয়ে দেখি কত ধরনের মানুষ স্রষ্টাকে অস্বীকার করে নানা ধরনের প্রশ্ন, তর্ক, প্রমাণ নিয়ে হাজির হয়েছে, তাহলে আমরা তাদেরকে কয়েকটি দলে ভাগ করতে পারবো—

উঠতি নাস্তিক: আল্লাহ ﷻ যদি সবকিছু সৃষ্টি করে থাকে, তাহলে তাকে সৃষ্টি করলো কে?

হতাশাগ্রস্থ নাস্তিক: সত্যিই যদি আল্লাহ ﷻ থাকে, তাহলে পৃথিবীতে এত দুঃখ, কষ্ট, মুসলিমদের উপর এত অত্যাচার, এত প্রাকৃতিক দুর্যোগ, মহামারি হয় কেন? আল্লাহ ﷻ এগুলো হতে দেয় কেন?

বুদ্ধি প্রতিবন্ধী নাস্তিক: আল্লাহ ﷻ বলে কেউ আছে —এর পক্ষে কোনো প্রমাণ নেই। এখন পর্যন্ত কোনো বিজ্ঞান সম্মত প্রমাণ পাওয়া যায়নি যে, সৃষ্টিজগৎ কোনো অতিবুদ্ধিমান সত্তা বানিয়েছে। সুতরাং আল্লাহ ﷻ বলে কেউ নেই।

আঁতেল নাস্তিক: আল্লাহ ﷻ ধারণাটা আসলে মানুষের কল্পনা প্রসূত। মানুষ যখন কোনো প্রাকৃতিক ঘটনা ব্যাখ্যা করতে পারত না, তখন তারা মনে করত: নিশ্চয়ই কোনো অতিপ্রাকৃত সত্তা রয়েছে, যে এসব ঘটাচ্ছে। একারণে মানুষ এমন কোনো সত্তাকে কল্পনা করে নেয়, যার কোনো দুর্বলতা নেই। যেমন: তার ক্ষুধা, ঘুম পায় না; সে মারা যায় না; কেউ তাকে জন্ম দেয় না; তার কোনো শরীর নেই যেখানে সে আবদ্ধ; তার কোনো আকার নেই, যা তাকে দুর্বল করে দেবে। এরকম নিরাকার, অবিনশ্বর, অসীম ক্ষমতা ইত্যাদি যত সব কল্পনাতীত গুণ মানুষ চিন্তা করে বের করতে পেরেছে, তার সবকিছু ব্যবহার করে সে এক স্রষ্টা সৃষ্টি করেছে। এর মানে তো এই না যে, স্রষ্টা বলে আসলেই কেউ আছে? এগুলো সবই মানুষের ধারণা।

ঘৃণাস্তিক: ধর্মের নামে যে পরিমাণ মানুষ হত্যা হয়েছে, আর অন্য কোনোভাবে এত মানুষ মারা যায়নি। ধর্মের কারণে মানুষে মানুষে ঝগড়া, ঘৃণা, মারামারি, দলাদলি, এক জাতি আরেক জাতিকে মেরে শেষ করে ফেলা —এমন কোনো খারাপ কাজ নেই যা হয় না। পৃথিবীতে যদি কোনো ধর্ম না থাকতো, তাহলে মানুষে-মানুষে এত ভেদাভেদ, এত রক্তারক্তি কিছুই হতো না। যদি আল্লাহ বলে আসলেই কেউ থাকে, তাহলে ধর্মের নামে এত হত্যা কেন হয়? ধার্মিকরা এত অসাধু হয় কেন? যতসব চোর, লম্পট, প্রতারকরা দেখা যায় দাঁড়ি-টুপি পড়ে মসজিদে নামাজ ঠিকই পড়ে।

—এগুলো হলো বিজ্ঞানে যারা অ-জ্ঞান, তাদের উর্বর মস্তিষ্ক থেকে বের হওয়া যুক্তি, তর্ক। আবার, বিজ্ঞানী মহলে যারা স্রষ্টা বিদ্বেষী রয়েছেন, তাদের বক্তব্যগুলোও একই রকমের অবাস্তব, বৈজ্ঞানিক পরিভাষার জালে লুকোনো ধোঁকাবাজি—  (আর্টিকেলের বাকিটুকু পড়ুন)