তুমি কি তাদেরকে দেখনি যারা মৃত্যুর ভয়ে হাজারে হাজারে বাড়ি ছেড়ে বেড়িয়ে গিয়েছিলো? তখন আল্লাহ تعالى তাদেরকে বললেন, “মরো”। তারপরে একদিন তিনি তাদেরকে জীবিত করলেন। আল্লাহ تعالى মানুষের অনেক কল্যাণ করেন, কিন্তু বেশিরভাগ মানুষ কৃতজ্ঞতা দেখায় না। [আল-বাক্বারাহ ২৪৩]
আর আল্লাহর تعالى পথে যুদ্ধ (ক্বিতাল) করো। জেনে রেখো, আল্লাহ تعالى সব শুনছেন, সব জানেন। [আল-বাক্বারাহ ২৪৪]
এই আয়াতের প্রেক্ষাপট নিয়ে দুটো ঘটনার বর্ণনা রয়েছে। একটি ঘটনা হলো: একদল মানুষ একবার মহামারি আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর ভয়ে সেখান থেকে পালিয়ে গিয়েছিল। কিন্তু আল্লাহ تعالى তাদেরকে শাস্তি হিসেবে মৃত্যু দেন এটা শেখানোর জন্য যে, মানুষ কখনো মৃত্যু থেকে পালাতে পারবে না। যাদের জন্য মৃত্যু নির্দিষ্ট, সেদিন সে মারা যাবেই। মানুষের ক্ষমতা নেই তার জন্য নির্ধারিত মৃত্যু থেকে পালিয়ে যাওয়ার। [৬][৮][৯][১০][১২][১৪][১৭][১৮]
আরেকটি ঘটনা, যার সাথে কু’রআনের আয়াতগুলোর সাথে সঙ্গতি মেলে, তা হলো: বনু ইসরাইলদেরকে যখন তাদের প্রতি অন্যায়ের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে আদেশ করা হয়েছিল নবীর মাধ্যমে, তখন হাজার খানেক মানুষ জানের ভয়ে যুদ্ধ করা থেকে পালিয়ে যায়। তাদেরকে আল্লাহ تعالى অবাধ্যতার শাস্তি হিসেবে মৃত্যু দেন। এভাবে তিনি মানুষকে শেখান যে, আল্লাহর تعالى পথে যুদ্ধ করা থেকে পালিয়ে গিয়ে কোনো লাভ নেই। যার মারা যাওয়ার কথা, সে মারা যাবেই। যার জন্য আল্লাহ تعالى হায়াত লিখে রেখেছেন, সে একটার পর একটা যুদ্ধে অংশ নিলেও মরবে না, জীবিত অবস্থায় ফিরে আসবেই। আর যার জন্য আল্লাহ تعالى মৃত্যু লিখে রেখেছেন, সে যুদ্ধ থেকে পালিয়ে গুহায় গিয়ে বসে থাকলেও মারা যাবেই। শুধুই পার্থক্য হলো, যুদ্ধে গেলে মৃত্যু হবে একটা বিরাট অর্জন, আর পালিয়ে গেলে মৃত্যু হবে অর্থহীন, অপমানকর এক সমাপ্তি।[১২][১৪][৪][৬][১৭][১৮][১৩]
জিহাদ এবং ক্বিতালের মধ্যে পার্থক্য
আজকে জিহাদ এবং ক্বিতাল শব্দদুটোর ব্যাপক অপব্যবহার করা হচ্ছে। একদল সংগঠন কু’রআনের আয়াতগুলোতে জিহাদ এবং ক্বিতালের মধ্যে পার্থক্য না করে, জিহাদের জায়গায় ক্বিতাল করার প্রচারণা চালাচ্ছে। আরেকদল সংগঠন ক্বিতালের আয়াতগুলোকে সাধারণ জিহাদ অনুবাদ করে স্পষ্ট প্রতিরোধ এবং যুদ্ধের জায়গায় চুপচাপ বসে অপেক্ষা করা এবং অন্যায়ের সাথে আপোষ করে চলার জন্য প্রচারণা করছে।
এই দুই পক্ষই দাবি করে যে, যেহেতু জিহাদ এবং ক্বিতাল সমার্থক শব্দ, তাই এই শব্দ দুটোকে একে অপরের জায়গায় বদল করা যায়। লক্ষ্য করলে দেখা যায় যে, এরা আয়াতগুলোতে জিহাদের জায়গায় ক্বিতাল এবং ক্বিতালের জায়গায় জিহাদ সুবিধামত বসিয়ে, তাদের ইচ্ছেমত অনুবাদ এবং ব্যাখ্যা করে, যেন তারা তাদের উদ্দেশ্য সফল করতে পারে। একারণে যখনই যুদ্ধ, সংগ্রাম, হত্যা ইত্যাদি সম্পর্কে কোনো আয়াত বা হাদিস পাবেন, প্রথমেই দেখে নেবেন আরবিতে শব্দটা কি জিহাদ নাকি ক্বিতাল। (আর্টিকেলের বাকিটুকু পড়ুন)