ইসলাম আসার আগে এবং প্রাচীন ধর্মগুলোতে নারীরা ছিল স্বামীদের সম্পত্তি। নারীদের তারা অনেকটা পোষা প্রাণীর মতো পালত। বিয়ে এবং তালাকের ব্যাপারে নারীদের কোনো অধিকার ছিল না। তাদের বাবা-মা যেখানে তাদের বিয়ে দিত, সেখানেই তারা সংসার করতে বাধ্য ছিল। বিয়ের পরে তারা হয়ে যেত স্বামীর সম্পত্তি। স্বামী যখন ইচ্ছা তাদের তালাক দিত, যখন ইচ্ছা তাদের ফিরিয়ে নিত। স্বামীর সম্পত্তিতে স্ত্রীদের কোনো অধিকার ছিল না। স্ত্রীর সম্পত্তি স্বামী যেভাবে ইচ্ছা খরচ করত। স্বামীর সিদ্ধান্তের উপর প্রশ্ন করার অধিকারও তাদের ছিল না। দাসির মতো মানবেতর জীবনযাপন করে স্ত্রীরা সারাজীবন স্বামীকে খুশি রাখার সবরকম চেষ্টায় যাবতীয় অপমান, অন্যায় মেনে নিয়ে জীবন পার করে দিত। আর প্রার্থনা করত যেন তার কখনো মেয়ে সন্তান জন্ম না হয়।[৪] (আর্টিকেলের বাকিটুকু পড়ুন)
Tag: মাসিক
ওরা তোমাকে মাসিকের ব্যাপারে জিজ্ঞেস করে — আল-বাক্বারাহ ২২২
ওরা তোমাকে মাসিকের ব্যাপারে জিজ্ঞেস করে। বলে দাও, এটা কষ্ট। তাই মাসিকের দিনগুলোতে নিজেদেরকে তাদের থেকে আলাদা রাখো। যতক্ষণ তারা পরিচ্ছন্ন হয়ে না যাচ্ছে, ততক্ষণ তাদের কাছে যাবে না। তারপর যখন তারা নিজেদেরকে পরিচ্ছন্ন করে, তখন তাদের কাছে যাও, যেখানে যেতে আল্লাহ তোমাদেরকে আদেশ দিয়েছেন। আল্লাহ অবশ্যই তাদেরকে ভালোবাসেন, যারা বার বার তাঁর কাছে ক্ষমা চায়। তিনি তাদেরকে ভালোবাসেন যারা নিজেদেরকে সবসময় পরিচ্ছন্ন রাখার চেষ্টা করে। [আল-বাক্বারাহ ২২২]
অন্য ধর্মের মানুষদের মধ্যে মাসিকের ব্যাপারে নানা ধরনের কুসংস্কার এবং নোংরা সব ধারণা ছিল এবং এখনো আছে। নারীদেরকে এই সময়টাতে এক ঘরে করে রাখা হতো। তাদের সাথে এক বিছানায় কেউ শুতে চাইত না। তাদের সাথে একসাথে বসে খাবার পর্যন্ত খেত না, আলাদা করে খেতে বসতে দেওয়া হতো। নারীদেরকে রান্না ঘরে রান্না করতে দেওয়া হতো না, কারণ তাদের রান্না করা খাবার খেলে মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়বে। এধরনের নানা রকমের অন্যায় থেকে শুরু করে এই সময়টাতে নারীদের সাথে নানা ধরনের নোংরা কাজও করা হতো।[১২] দুঃখের ব্যাপার হলো এই কষ্টের সময়টাতে পুরুষরা নারীদের সাথে অন্যায় তো করতোই, এমনকি পরিবারের অন্য নারীরাও মাসিকে থাকা মেয়েদের সাথে দুর্ব্যবহার করতো।
ইসলাম মাসিক সম্পর্কে যাবতীয় ভুল ধারণা অবসান করেছে, নারীদের সাথে অন্যায় করা বন্ধ করেছে, নারীদের এই স্বাভাবিক প্রাকৃতিক ব্যাপারটাকে মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য করেছে। যেই সব নারীবাদীরা অপপ্রচার করে বেড়ায় যে, ইসলাম নারীদেরকে হেয় করে, তারা ইতিহাস পড়ে দেখুক ইসলাম আসার আগে নারীদের জীবন কী ভয়ঙ্কর কষ্টের এবং অপমানের ছিল। ইসলাম আসার আগে প্রত্যেক মাসে এক সপ্তাহ নারীরা যে পরিমাণের অন্যায়, দুর্ব্যবহার এবং অপমান সহ্য করতো, আর ইসলাম আসার পরে নারীদের অবস্থা কীভাবে আমূল বদলে গেল, সেটাই নারীবাদীদের চোখ খুলে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট। দুঃখজনকভাবে উপমহাদেশের মুসলিমরা হিন্দু ধর্ম দিয়ে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত। হিন্দুদের নানা কুসংস্কার, অশুচির ধারণা মুসলিমদের মধ্যেও ঢুকে গেছে। যার ফলে মাসিক সম্পর্কে ইসলাম যা শিখিয়েছে, সেটা মুসলিমরা হিন্দুদের সংস্কৃতি, বিশ্বাস, কুসংস্কার দিয়ে গুলিয়ে ফেলেছে। এখনো গ্রামে-গঞ্জে এই সময়টাতে নারীদের সাথে ব্যাপক অন্যায় আচরণ হতে দেখা যায়।
আল্লাহ تعالى মানুষকে সর্বশ্রেষ্ঠ ডিজাইনে তৈরি করেছেন। মাসিক আল্লাহর تعالى সর্বশ্রেষ্ঠ ডিজাইনের একটি অংশ। মাসিকের ব্যাপারটাকে খারাপভাবে দেখার সময় আমাদেরকে চিন্তা করতে হবে: আমরা কি আল্লাহর تعالى সর্বশ্রেষ্ঠ ডিজাইনকে খারাপভাবে দেখছি? আমরা কি আল্লাহর تعالى ডিজাইনের কোনো একটি ব্যাপারকে ঘৃণা করছি? আল্লাহ تعالى কু’রআনে গর্ব করে বলেছেন যে, তিনি মানুষকে সবচেয়ে সুন্দর গঠনে সৃষ্টি করেছেন [সূরা আত-ত্বিন ৯৫:৪]। আমরা কি তাহলে মানুষের গঠনের কোনো একটি দিকের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে প্রশ্ন করার মতো ধৃষ্টতা দেখাচ্ছি?
মাসিক কেন হয়? (আর্টিকেলের বাকিটুকু পড়ুন)