হিজরতের পর প্রথম দিকে মুসলিমরা আল-আক্বসাকে কিবলা হিসেবে অনুসরণ করত। রাসূলের عليه السلام বড় ইচ্ছা ছিল যে, আল্লাহ تعالى যেন কা’বাকে কিবলা করে দেন। তার عليه السلام মনের বাসনা আল্লাহ تعالى পূরণ করলেন, কা’বাকে কিবলা করে দিলেন, কু’রআনের আয়াত নাজিল হলো। কিন্তু রাসূল عليه السلام যখন কিবলা পরিবর্তনের আয়াত মানুষকে তিলাওয়াত করে শোনালেন, তখন নানা ধরনের সমস্যা শুরু হলো। কিছু মানুষ মনে করা শুরু করলো, “একি! এতো দেখি রাসূল যা চায় সেটাই কয়েকদিন পর কুরআনের আয়াত হয়ে নাজিল হয়? আসলেই কু’রআনের আয়াতগুলো আল্লাহর تعالى কাছ থেকে আসে তো? নাকি সব রাসূলের عليه السلام বানানো কথা?”[১]
আবার অনেক মুসলিম, যারা আগে ইহুদি, খ্রিস্টান ছিলেন, তারা এত দিন ধরে আল-আক্বসাকে কিবলা মেনে এসেছিলেন। তাদের আত্মীয়স্বজন, পাড়া-প্রতিবেশী ইহুদি, খ্রিস্টানরা সবাই তখনো আল-আক্বসাকে কিবলা অনুসরণ করছে। তখন সে যদি সবাইকে অপমান করে কা’বাকে কিবলা অনুসরণ করা শুরু করে, তাহলে ব্যাপারটা কেমন দেখাবে? “লোকে কী বলবে” এই ভয়ে অনেকে একাকী প্রার্থনা করার সময়, বা তাদের ইহুদি, খ্রিস্টান আত্মীয়দের সাথে চলাফেরা করার সময় কা’বার দিকে ঘুরে দাঁড়াতো না।[১]
আল্লাহ تعالى কিবলা পরিবর্তনের নির্দেশ দিয়ে পর পর তিনটি আয়াত নাজিল করলেন। এরকম অভূতপূর্ব ঘটনা কু’রআনে বিরল, যেখানে একই নির্দেশ পর পর তিনবার পুনরাবৃত্তি করা হয়েছে। এ থেকেই বোঝা যায়, কিবলা পরিবর্তনের ব্যাপারটি কতটা বিতর্কিত ছিল, এবং তখনকার মুসলিমদের অনেকেরই এটা মেনে নিতে যথেষ্ট কষ্ট হয়েছিল।[৬]—
তুমি যেখান থেকেই শুরু করে থাকো না কেন, মাসজিদুল-হারামের দিকে ঘুরে দাঁড়াও। এটা তোমার প্রভুর কাছ থেকে আসা সত্য বাণী। তোমরা কী করছ, সে ব্যাপারে আল্লাহ বিন্দুমাত্র বেখেয়াল নন। [আল-বাক্বারাহ ১৪৯]
যারা সন্দেহ করেছিল যে, রাসূল عليه السلام হয়তো বানিয়ে আয়াত বলছেন, তাদেরকে আল্লাহ تعالى সাবধান করে দিলেন, “এটা তোমার প্রভুর কাছ থেকে আসা সত্য বাণী।” আর যারা ‘লোকে কী বলবে’ এই ভয়ে, প্রার্থনা করার সময় আল-আক্বসার দিকে মুখ করে থাকতো, তাদের জন্য আল্লাহর تعالى সাবধান বাণী: “তোমরা কী করছ, সে ব্যাপারে আল্লাহ বিন্দুমাত্র বেখেয়াল নন।” (আর্টিকেলের বাকিটুকু পড়ুন)