সে ভ্রু কুচকালো এবং মুখ ফিরিয়ে নিলো। কারণ তার কাছে অন্ধ লোকটি এসে পড়েছিল। তুমি জানলে কীভাবে, হয়ত সে পরিশুদ্ধ হতো? অথবা হয়ত সে উপদেশ গ্রহণ করতো এবং সেই উপদেশ তার উপকারে আসতো? আর যে কিনা নিজেকে প্রয়োজনমুক্ত মনে করে, তার জন্য তুমি কত চেষ্টা করছিলে। অথচ সে নিজেকে না শোধরালে তোমার কোনোই দায় নেই। আর যে কিনা তোমার কাছে ছুটে আসলো আল্লাহর ভয়ে, তুমি তার ব্যাপারে অনীহা প্রকাশ করলে? —আবাসা ১-১০
আমরা বড় হই কিছু ধারণা নিয়ে— সমাজের ধনী মানুষদেরকে, গরিব মানুষদের থেকে বেশি সুযোগ, সম্মান দিতে হবে। যাদের ডিগ্রি আছে তাদেরকে অশিক্ষিত মানুষদের থেকে বেশি সুযোগ সম্মান দিতে হবে। কেউ যদি উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তা হয়, মন্ত্রী-আমলা হয়, তাহলে তো কথাই নেই। উঠতে বসতে ‘স্যার, স্যার’ করতে হবে। —ছোটবেলা থেকে আমাদেরকে এই ধারণাগুলো দিয়ে বড় করা হয়। আমরা অনেক সময় ভুলে যাই যে— সম্পদ, খ্যাতি, উপাধি, পদ, বংশ ইত্যাদি যেই ব্যাপারগুলো আমরা এত গুরুত্ব দেই, আল্লাহর কাছে এগুলোর সাথে কারো প্রাপ্য-সম্মানের কোনোই সম্পর্ক নেই। তাঁর কাছে কারো সম্মান নির্ভর করে শুধুমাত্র তার তাকওয়ার উপর।
উপরের এই আয়াতগুলো দিয়ে আল্লাহ تعالى আমাদেরকে এমন এক মূল্যবোধ শেখাতে চান, যার নজির ইতিহাসে আর একটিও নেই। একবার, রাসুলল্লাহ عليه السلام আরবদের উচ্চপদস্থ কিছু মানুষকে ইসলামের দাওয়াত দেওয়ার চেষ্টা করছিলেন। অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে তিনি সেই লোকগুলোর সাথে আলোচনা করার সুযোগ পেয়েছিলেন। তিনি আশা করছিলেন এই লোকগুলোকে ইসলামের পথে আনতে পারলে, মক্কাতে ইসলাম প্রচারে যে ব্যাপক বাধার সম্মুখীন তিনি হচ্ছিলেন, তা অনেকাংশে কমে যাবে। যখন তিনি সেই লোকগুলোর সাথে ইসলামের ব্যাপারে আলোচনা করছিলেন, তখন একজন অন্ধ সাহাবি এসে বার বার কুরআনের নতুন কোনো বাণী এসেছে কিনা, সে ব্যাপারে জানতে চেয়ে তার আলোচনায় বাধা তৈরি করতে থাকে। তখন রাসুল কিছুটা বিরক্ত হয়ে ভ্রু কুঁচকে সাহাবিকে উপেক্ষা করে ওই লোকগুলোর দিকে মনোযোগ দেন। —এই ব্যাপারটি আল্লাহর تعالى কাছে গ্রহণযোগ্য ছিল না। আল্লাহ تعالى তখন দশ-দশটি আয়াত নাজিল করে রাসুলকে সংশোধন করে দেন।
(আর্টিকেলের বাকিটুকু পড়ুন)