কুরআনের কথা

মানুষের মাঝে এমন লোক আছে, জীবন সম্পর্কে যার দৃষ্টিভঙ্গি শুনলে তুমি মুগ্ধ হবে — আল-বাক্বারাহ ২০৪-২০৬

আগামী নির্বাচনের একজন প্রতিদ্বন্দ্বী আলহাজ্ব চৌধুরী সাহেব মসজিদে জুমুআহ’য় মাইক নিয়ে দাঁড়িয়েছেন। নির্বাচনে দেওয়া কিছু প্রতিশ্রুতির ব্যাপারে তিনি কথা বলবেন, “ভাই সব, আমি আপনাদের এলাকারই সন্তান। এই এলাকার আলো, মাটি, বাতাস খেয়ে আমি বড় হয়েছি। আমি এই বছর হজ্জে গিয়ে আল্লাহর কাছে অনেক কান্নাকাটি করেছি, আমাকে তিনি যেন এলাকার খেদমত করার সম্মান দেন। আপনারা যদি আমাকে সুযোগ দেন, তাহলে আমি এই এলাকার চেহারা পালটিয়ে দেবো ইন-শাআ-আল্লাহ। এলাকায় এতিমখানা হবে, মাদ্রাসা হবে, এই মসজিদের উপরে দুই তলা হবে সবার আগে। এলাকায় আমি নষ্ট সংস্কৃতি মোটেও ঢুকতে দেবো না। এলাকার ক্যাবল অপারেটরদের সব হিন্দি চ্যানেল বন্ধ করে দিতে বলবো। আমি আল্লাহর تعالى শপথ করে বলছি, আমাদের এই এলাকা দুই বছরের মধ্যে হয়ে যাবে পবিত্র মদিনা শহরের এক প্রতিচ্ছবি।” —বিপুল করতালি এবং ‘আল্লাহু আকবার’ এর মধ্য দিয়ে তার ভাষণ শেষ হয়।

মানুষের মাঝে এমন লোক আছে, জীবন সম্পর্কে যার দৃষ্টিভঙ্গি শুনলে তুমি মুগ্ধ হবে। সে আল্লাহর تعالى শপথ নিয়ে বলে তার মনে কী আছে। অথচ দেখা যায় সে একজন চরম ঝগড়াটে প্রতিদ্বন্দ্বী। যখন সে কাজে ফিরে যায়, সে দ্রুত চেষ্টা করে যেন অনিষ্ট করতে পারে, যেন ধ্বংস করতে পারে শস্য ফলন এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে। আল্লাহ تعالى কোনো ধরনের অনিষ্ট করা পছন্দ করেন না। [আল-বাক্বারাহ ২০৪-২০৫]

নির্বাচন শেষ। চৌধুরী সাহেব জয়ী হয়েছেন। তার আলিশান ড্রয়িং রুমে তিনি তার ‘সোনার ছেলেদের’কে রাতের পার্টির আয়োজনের ব্যাপারে জিজ্ঞেস করছেন, “রাতে ফাইভ স্টার হোটেলের সব ব্যবস্থা ঠিক আছে? মন্ত্রী সাহেব আসবেন ঠিক আটটায়। বিদেশি গায়িকারা যেন আগে থেকেই গান শুরু করে না দেয়। কাস্টমস থেকে রঙিন পানি ছাড়িয়ে নিয়ে এসেছিস তো? স্যার কিন্তু বিদেশি ব্র্যান্ড ছাড়া কিছু পান করেন না। আর এলাকার ডেভেলপারদেরকে আগামীকাল ডাক। এলাকায় যত কাজ হচ্ছে, তার সবগুলোর তালিকা চাই। কে আমাকে কত দিবে, তার উপর নির্ভর করবে, কে কাজ চালিয়ে যেতে পারবে। আর আমার প্রতিদ্বন্দ্বীর ড্রাইভারটা গত কালকে আমাকে দেখে সালাম দেয়নি। ওর একটা পা ভেঙ্গে দিয়ে আয়।”

এক বছর পর এলাকার মুরব্বিরা আর সহ্য করতে না পেরে তার সাথে দেখা করতে আসেন। তাকে অনেক বোঝানোর চেষ্টা করেন যে, তাদের এলাকাটা একেবারে শেষ হয়ে যাচ্ছে। এলাকায় অপসংস্কৃতি ছেয়ে গেছে। ছেলেমেয়েরা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। আইন-শৃঙ্খলা ধ্বসে গেছে। ক্যাডাররা পুলিশের মুখের সামনে যা খুশি করে বেড়াচ্ছে। এলাকার উন্নয়ন কিছুই হচ্ছে না। কত অফিস আদালত মেরামত বন্ধ হয়ে গেছে। তারা সবাই মিলে চৌধুরী সাহেবকে অনেক অনুরোধ করলেন, “ভাই, আপনি না কথা দিয়েছিলেন এলাকায় মসজিদ, মাদ্রাসা, এতিমখানা করবেন? আমাদের এলাকাকে মদিনার প্রতিচ্ছবি বানিয়ে দেবেন। এলাকা তো উল্টো নষ্ট হয়ে যাচ্ছে ভাই।” চৌধুরী সাহেব রেগে গিয়ে তাদের সাথে ঝগড়া শুরু করলেন, “এসব করতে টাকা লাগে না? টাকা আসবে কোত্থেকে? আপনারা দেবেন? টাকা জোগাড় করতে গেলে তো একটু অন্যায় করতে হবেই। আর আপনারা বসে বসে গাজর না কেটে নিজেরা কিছু করতে পারেন না?” মুরব্বিরা শেষ চেষ্টা করেন, “ভাই, আপনি হাজ্জি মানুষ। আপনি আল্লাহকে تعالى কী জবাব দেবেন? আপনার কী জাহান্নামের আগুনের প্রতি একটুও ভয় নাই?” —চৌধুরী সাহেব মোবাইল নিয়ে তার সোনার ছেলেদের ফোন দিলেন, “আজ রাতে এলাকার মন্দিরে আগুন জ্বালিয়ে দিয়ে এসে, আগুনের সরঞ্জাম মসজিদের পেছনে গুদামে রেখে আসবি। পত্রিকায় জানিয়ে দিবি যেন সাংবাদিকরা সময় মতো মসজিদে খুঁজতে যায়।”

যখন তাকে বলা হয়, ‘আল্লাহর تعالى ব্যাপারে সাবধান!’ —তখন বরং তার ঔদ্ধত্য তাকে পাপের ধারাবিহাকতায় ডুবিয়ে দেয়। তার জন্য জাহান্নামই যথেষ্ট —সে এক ভয়ঙ্কর বীভৎস বিলাসের জায়গা। [আল-বাক্বারাহ ২০৬]

উপরের এই আয়াতগুলোর কিছু উল্লেখযোগ্য অংশ বিস্তারিত দেখি—

সে দ্রুত চেষ্টা করে যেন অনিষ্ট করতে পারে

আল্লাহ تعالى বলছেন, এই ধরনের মানুষরা চেষ্টাই করে فسد ‘ফাসাদ’ অর্থাৎ অনিষ্ট করতে। অনিষ্ট করতে এদের আগ্রহের কোনো অভাব নেই। তিনি تعالى এর জন্য سعى ‘সা-আ’ শব্দটি ব্যবহার করেছেন। আমরা হাজ্জে গিয়ে যেভাবে সাঈ করি, দ্রুত হাঁটি, দৌড়ে যাই, ঠিক সে রকমভাবে এই সব মানুষরা অনিষ্ট করার জন্য ছোটাছুটি করতে থাকে। সারাদিন এদের মাথায় কিলবিল করে: কাকে ধরব, কাকে মারবো, কার সম্পত্তি খাবো, কাকে ফাঁসিয়ে দেবো, কাকে ঘুষ দেবো, কোন প্রজেক্ট হাতাবো, কোথায় টাকা সরাবো ইত্যাদি।
ফাসাদ একটি গুরুত্বপূর্ণ শব্দ। কু’রআনে ৫০ বার এই শব্দটি বিভিন্ন রূপে এসেছে। এর অর্থ ব্যাপক—

এক কথায় ফাসাদ হলো, যে কোনো কাজের বা বস্তুর স্বাভাবিকতা নষ্ট করা। ফাসাদের ব্যাপারে আল্লাহর تعالى কঠোর নিষেধাজ্ঞার কারণ হলো, ফাসাদ যেখানে ঢুকে, সেটার স্বাভাবিকতা নষ্ট করে দেয়। শিক্ষাখাতে ফাসাদ ঢুকলে সেখান থেকে মুর্খরা ‘শিক্ষিতের’ তকমা লাগিয়ে বের হয়। বিচারখাতে ফাসাদ ঢুকলে নিরাপরাধরা উল্টো অপরাধী হয়ে যায়, আর অপরাধীরা হাসি মুখে রাস্তায় ঘুরে বেড়ায়। নিরাপত্তাবাহিনীতে ফাসাদ ঢুকলে নিরাপত্তা কর্মীরাই উল্টো আমাদের জান-মালের উপর হুমকি হয়ে যায়। মিডিয়ায় ফাসাদ ঢুকলে তা জনগণের মেধা-মনন নষ্ট করে দেয়, দেশের মানুষ গণ মগজ ধোলাইয়ের শিকার হয়।

‘ফাসাদ’-এর অনেকরকম উদাহরণ দেখার জন্য একটি আদর্শ জায়গা হচ্ছে উপমহাদেশ। কু’রআনে যত ধরণের ফাসাদ করতে মানা করা হয়েছে, তার প্রায় সবগুলো নিজের চোখে দেখতে আমাদের বেশি দূরে যাওয়ার দরকার নেই। আজকাল দৈনিক সংবাদপত্রগুলো এক একটা ‘দৈনিক ফাসাদপত্র’ হয়ে গেছে।

যেন ধ্বংস করতে পারে শস্য ফলন এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে

আল্লাহ تعالى এখানে বিশেষভাবে বলছেন যে, কোন দুটি ক্ষতি তারা বেশি করে করে। এরা  وَيُهْلِكَ ٱلْحَرْثَ وَٱلنَّسْلَ — এরা শস্য ফলন এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে ধ্বংস করে। এরা দুর্নীতি করে খাদ্যের দাম বাড়িয়ে দেয়। ফলন ধ্বংস করে সরবরাহে কৃত্রিম ঘাটতি তৈরি করে, যেন বেশি দামে অল্প সামগ্রী বিক্রি করে বেশি লাভ করতে পারে। নদীতে অপরিকল্পিত বাঁধ দিয়ে স্বাভাবিক পানির সরবরাহ নষ্ট করে, যেন শস্য ফলন কমে গিয়ে জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যায়। কারখানার বর্জ্য নদী, নালা, সাগরে ফেলে প্রকৃতি দূষিত করে ফেলে। যার ফলে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যায়, খরা, অতি বন্যায় শস্য ফলন ধ্বংস হয়ে যায়। দেশ তখন খাদ্য আমদানি করতে বাধ্য হয়। সেই আমদানি থেকে তারা বিপুল পরিমাণের অর্থ হাতিয়ে নেয়। তাদের দুর্নীতি এমন পর্যায়ে চলে যায় যে, জনগণের ট্যাক্সের একশ কোটি টাকা খরচ করে গম আমদামি করে নব্বুই কোটি টাকা যায় কনট্রাক্টরদের হাতে, বাকি দশ কোটি টাকার গম মানুষের কাছে বিক্রি হয় দেড় শ কোটি টাকায়।

একইসাথে এরা ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে নৈতিকভাবে ধ্বংস করে দেয়। অর্থের লোভে দেশে অপসংস্কৃতি ঢুকতে দেয়। হোটেলের পর হোটেল গজিয়ে উঠতে থাকে, অথচ সাধারণ মানুষের খাওয়া জোগাড় হয় না। দেশে অসুস্থ বিনোদনের অত্যাধুনিক সব ব্যবস্থা করতে থাকে, অথচ শিক্ষা, প্রযুক্তি, গবেষণার জন্য বিনিয়োগ করে না। মাদকের অবাধ প্রবেশ এবং বিক্রি শুরু হয়। কিশোর-তরুণরা বাবা-মার কষ্টের টাকা নষ্ট করে পার্টি করে, মাদক কেনে, দামি গাড়ি, ফোন, কম্পিউটার কেনে। এভাবে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে মগজ ধোলাই করে, তাদের অনিয়ন্ত্রিত লোভ এবং অপরিপক্ব মানসিকতার সুযোগ নিয়ে, তাদের হাত দিয়ে তাদেরই বাবা-মার সম্পত্তি লুটেপুটে খায়।

তখন বরং তার ঔদ্ধত্য তাকে পাপের ধারাবাহিকতায় ডুবিয়ে দেয়

এখানে আল্লাহ تعالى বলছেন,  তার عِزَّة ইজ্জাহ অর্থাৎ অহংকার, ঔদ্ধত্য তাকে إِثْم ইছম অর্থাৎ পাপে ডুবিয়ে দেয়। ইজ্জাহ হচ্ছে এমন ঔদ্ধত্য হওয়া যে, সে নিজেকে ধরাছোঁয়ার বাইরে মনে করে।[১৬] এই ধরনের মানুষরা মনে করে, সে টাকা দিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কিনে রেখেছে। সরকারের উচ্চ পদস্থ কর্মচারীদেরকে সে হাত করে রেখেছে। তাকে ধরবে এমন বুকের পাটা আছে কার?

এই ধরনের ঔদ্ধত্য তাকে পাপের ধারাবাহিকতায় ডুবিয়ে দেয়। কু’রআনে পাপের জন্য অনেকগুলো শব্দ ব্যবহার হয়েছে— ذَنْۢ, خَطَا, حِنْث, حُوْب, جُرْم, جَنَاح, لَمَمْ اِثْم। আল্লাহ تعالى এই আয়াতে পাপ বোঝাতে বিশেষভাবে اِثْم ব্যবহার করেছেন। اِثْم -কে যদিও বাংলায় ‘পাপ’, ‘অন্যায়’ অনুবাদ করা হয়, কিন্তু ইছম হচ্ছে এমন সব পাপ যা মানুষের নীতিবোধকে দুর্বল করে দেয়, যা মানুষকে ভালো কাজ করা থেকে দূরে রাখে, খারাপ কাজ করতে উৎসাহ দেয় এবং এক সময় মানুষ পাপের ধারাবাহিকতায় ডুবে যায়।[১৬]

যেমন, চৌধুরী সাহেব বিশাল পরিমাণের ঘুষ দিয়ে একটা সরকারি প্রজেক্টের কন্ট্রাক্ট হাতালেন। এর জন্য তিনি মন্ত্রীকে গুলশানে দুইটা ফ্ল্যাট কিনে দেওয়ার নিশ্চয়তা দিলেন। তারপর ব্যাংকের লোন নিয়ে জোগাড় করা সেই বিশাল অংকের ঘুষ, সুদ সহ শোধ করতে গিয়ে, এবং মন্ত্রীকে কথা দেওয়া দুইটা ফ্ল্যাটের টাকা উঠানোর জন্য শেষ পর্যন্ত তাকে প্রজেক্টের অনেক টাকা এদিক ওদিক সরিয়ে ফেলতে হলো। দুই নম্বর সস্তা কাঁচামাল সরবরাহ করতে হলো। যোগ্য কনট্রাক্টরদের কাজ না দিয়ে অযোগ্য, সস্তা কনট্রাক্টরদের কাজ দিতে হলো। এরপর একদিন তার প্রজেক্ট ধ্বসে পড়ল। তার নামে ব্যাপক কেলেঙ্কারি হয়ে মামলা হয়ে গেলো। মামলায় উকিলের টাকা জোগাড় করতে তাকে আরও বিভিন্ন উপায়ে টাকা চুরি শুরু করতে হলো। তারপর কয়েকদিন পর পর তাকে পুলিশ ধরতে আসে, আর তিনি পুলিশের উপরের তলার লোকদের ঘুষ খাইয়ে পুলিশকে হাত করে ফেলেন। প্রজেক্টে দুর্নীতির কারণে ভুক্তভুগি মানুষদের হাত থেকে বাঁচার জন্য তাকে অনেক টাকা খরচ করে কিছু ‘সোনার ছেলে’ পালতে হয়। তারা মাঝে মাঝেই খুন, ধর্ষণ করে, হোটেলে থেকে … করে এসে বিরাট বিল ধরিয়ে দেয়। তারপর তাদেরকে যখন পুলিশ ধরতে আসে, তিনি পুলিশকে টাকা খাইয়ে তাদেরকে রক্ষা করেন। এত দুশ্চিন্তার মধ্যে তিনি রাতে ঘুমাতে পারেন না। দুশ্চিন্তা ভুলে থাকার জন্য তাকে নিয়মিত মদ খাওয়া ধরতে হয়। এভাবে একটার পর একটা পাপে তিনি জড়িয়ে পড়তে থাকেন। পাপের ধারাবাহিকতা তার জীবনটাকে ঘিরে ফেলে।

তার জন্য জাহান্নামই যথেষ্ট —সে এক বীভৎস বিলাসের জায়গা

এই সব লোকদেরকে আল্লাহ تعالى দুনিয়াতে কয়েকটা দিন ছেড়ে দেন, কত পাপ করবে করুক। তারপর একদিন তিনি تعالى তাদেরকে পাকড়াও করেন। এদের উদাহরণ হচ্ছে গলায় দড়ি বাঁধা অবাধ্য কুকুরের মতো, যে বার বার চেষ্টা করছে দড়ি ছুটে পালিয়ে যাওয়ার। তখন আপনি তার গলায় একটা লম্বা দড়ি বেঁধে খুঁটির সাথে আটকে দিলেন। কুকুরটা দড়ি টেনে দেখল যে, সে কোনো বাঁধা পাচ্ছে না। সাথে সাথে সে মনের আনন্দে দৌড় দেওয়া শুরু করলো। সে দৌড়াচ্ছে আর দৌড়াচ্ছে, এদিকে মাটিতে পড়ে থাকা দড়ির পাক একটা একটা করে কমছে। স্বাধীনতার খুশিতে কুকুরটা জিভ বের করে যত জোরে পারে দৌড়াচ্ছে। আর এদিকে দড়ির পাক কমতে কমতে একসময় সব পাক শেষ হয়ে দড়িটা টান টান হয়ে গেল, আর খ্যাঁক!

আমরা যেন মনে না করি যে, আমরা দুনিয়াতে যে পরিমাণ অন্যায় করেছি, মানুষকে যে পরিমাণ কষ্ট দিয়েছি, তার জন্য যথেষ্ট শাস্তি হয়তো আমরা পাবো না। সাবধান! আল্লাহ تعالى বলছেন: পাপীদের জন্য জাহান্নামই যথেষ্ট। আল্লাহ تعالى এই সব লোকদেরকে ব্যঙ্গ করে বলছেন যে, এদের জন্য জাহান্নামে বিলাস বহুল আয়োজন অপেক্ষা করছে। মিহাদ مِهَاد হচ্ছে বিলাসের জায়গা, বিশ্রামের জন্য নরম জায়গা, বিছানা।[১৬] দুনিয়াতে এরা ফাইভ স্টার হোটেলে আরাম আয়েশ করেছে, সেরকম জাহান্নামে গিয়েও তারা ফাইভ স্টার খাতির পাবে। কিন্তু সেই খাতির হবে বি’সা بِئْسَ অর্থাৎ বীভৎস, জঘন্য। শুধু বি’সা নয়, لَبِئْسَ লাবি’সা — ভয়ঙ্কর বীভৎস, প্রচণ্ড কুৎসিত। আর মিহাদ-এর আরেকটি অর্থ হচ্ছে: মা যেমন বাচ্চাদেরকে জড়িয়ে ধরে। জাহান্নামও এদেরকে মায়ের মতো জড়িয়ে চেপে ধরবে। পালিয়ে যাবে কোথায়?

সূত্র:

নতুন আর্টিকেল বের হলে জানতে চাইলে কু’রআনের কথা ফেইসবুক পেইজে লাইক করে রাখুন—

Exit mobile version