কুরআনের কথা

আমরা

Quran-and-Scienceআমাদের অনেকেরই কু’রআন এবং কু’রআনের তাফসীর পড়ার সময় মনে প্রশ্ন আসে, “এই আয়াতে আমার শেখার কী আছে?”, “এর সাথে আজকের যুগের সম্পর্ক কী?”, “কু’রআনে আধুনিক মানুষের জীবনের সমস্যাগুলোর কোনো উত্তর আছে কি?” ইত্যাদি। অনেকেই কু’রআন পড়ে বুঝতে পারেন না: কু’রআনের আয়াতগুলোগুলো কীভাবে তার জীবনে কাজে লাগবে।

আধুনিক মানুষ ইসলামকে নিয়ে যে সব দ্বিধা-দ্বন্দ্বে ভোগেন এবং অমুসলিম মিডিয়ার ব্যাপক অপপ্রভাবের কারণে ইসলামকে মনে প্রাণে মেনে নিতে পারেন না, তাদের কাছে ইসলামের সঠিক ভাবমূর্তি এবং কু’রআনের অসাধারণ বাণী পৌঁছে দেওয়াটাই ‘কু’রআনের কথা’র উদ্দেশ্য।

কু’রআনের আয়াতগুলোর সরাসরি বাংলা অনুবাদ পড়ে আয়াতের বাণীর খুব কমই বোঝা যায়, কারণ আরবি থেকে বাংলা অনুবাদ করার সময় অনেক আরবি শব্দের প্রকৃত অর্থ, অর্থের ব্যাপকতা এবং প্রেক্ষাপট হারিয়ে যায়। অন্যদিকে তাফসীরগুলো হচ্ছে চরম পর্যায়ের ভাব সম্প্রসারণ, যা পড়ার ধৈর্য অনেকেরই হয় না।

একারণে আমাদের দরকার মাঝামাঝি এমন একটা কিছু, যেটা কু’রআনের সরাসরি অনুবাদের মতো সংক্ষিপ্ত, অপর্যাপ্ত নয় এবং একই সাথে তাফসীরের মতো এত দীর্ঘ এবং খুঁটিনাটিতে ভরা নয়। এমন কিছু, যা কু’রআনের প্রতিটি আয়াতের বাণীকে অল্প কথায়, যুগোপযোগী উদাহরণ দিয়ে, বৈজ্ঞানিক যুক্তি এবং প্রমাণ দিয়ে, বিজাতীয় শব্দ ব্যবহার না করে যথাসম্ভব আধুনিক বাংলায় তুলে ধরে, যা পড়ে আধুনিক যুগের মানুষ তাদের জীবনের ঘটনার সাথে মিলাতে পারবেন। ‘কু’রআনের কথা’ কোনো তাফসীর নয়, বরং প্রসিদ্ধ তাফসীরগুলো থেকে উল্লেখযোগ্য এবং আজকের যুগের জন্য প্রাসঙ্গিক আলোচনার সংকলন।

‘কু’রআনের কথা’ লেখার সময় আমি সবসময় খেয়াল রেখেছি, যেন কোনো বিশেষ গোত্রের কোনো মতবাদ দিলে সেটা আপনাদেরকে পরিষ্কারভাবে জানিয়ে দেই। এখানে আপনি আহলে সুন্নাহ ওয়া আল-জামাহ অনুসারীদের মতের সংখ্যাধিক্য দেখতে পারেন। কিন্তু আমি যথাসম্ভব চেষ্টা করেছি, যেসব মত নিয়ে বিভিন্ন গোত্রের অনুসারীদের মধ্যে কোনো দ্বিমত নেই, শুধুই সেগুলো তুলে ধরার। কোনো মতের অনুসারীদের পক্ষেই সব ব্যাপারে ১০০% সঠিক হওয়া সম্ভব নয়, সেটা হানাফি, সালাফি, শাফাঈ, সূফী ইত্যাদি যাই হোক না কেন —এটা আমি সমসময় মাথায় রেখেছি।

কু’রআনের আয়াতগুলোর উপরে আলোচনার সময় যথাসাধ্য ব্যক্তিগত মতামত দেওয়া থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করা হয়েছে। কু’রআনের আয়াতের অনুবাদগুলো একাধিক প্রসিদ্ধ অনুবাদ, তাফসীর এবং কু’রআনের উপর বিভিন্ন আলেমের লেকচার থেকে নেওয়া হয়েছে। বৈজ্ঞানিক, দার্শনিক তথ্য এবং যুক্তিগুলো যে সব জায়গা থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে, তার যথাযথ রেফারেন্স যথেষ্ট যাচাই করে প্রতিটি আর্টিকেলের শেষে দেওয়া হয়েছে। আর্টিকেলগুলোর কোনোটাই আমার অনবদ্য কৃতিত্ব নয়, বরং প্রতিটি আর্টিকেলের সব তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে বিভিন্ন ইসলামিক জার্নাল, বই, তাফসীর এবং লেকচার থেকে। একইভাবে বৈজ্ঞানিক তথ্য এবং গবেষণাগুলো সবই অন্যদের কৃতিত্ব।

কু’রআনের কথা লেখার সময় নিচের তাফসীরগুলো ব্যবহার করা হয়েছে—

[১] নওমান আলি খানের সূরা আল-বাকারাহ এর উপর লেকচার এবং বাইয়িনাহ এর কু’রআনের তাফসীর।
[২] ম্যাসেজ অফ দা কু’রআন — মুহাম্মাদ আসাদ।
[৩] তাফহিমুল কু’রআন — মাওলানা মাওদুদি।
[৪] মা’রিফুল কু’রআন — মুফতি শাফি উসমানী।
[৫] মুহাম্মাদ মোহার আলি — A Word for Word Meaning of The Quran
[৬] সৈয়দ কুতব — In the Shade of the Quran
[৭] তাদাব্বুরে কু’রআন – আমিন আহসান ইসলাহি।
[৮] তাফসিরে তাওযীহুল কু’রআন — মুফতি তাক্বি উসমানী।
[৯] বায়ান আল কু’রআন — ড: ইসরার আহমেদ।
[১০] তাফসীর উল কু’রআন — মাওলানা আব্দুল মাজিদ দারিয়াবাদি
[১১] কু’রআন তাফসীর — আব্দুর রাহিম আস-সারানবি
[১২] আত-তাবারি-এর তাফসীরের অনুবাদ।
[১৩] তাফসির ইবন আব্বাস।
[১৪] তাফসির আল কুরতুবি।
[১৫] তাফসির আল জালালাইন।

‘কু’রআনের কথা’র বিভিন্ন আয়াত লেখার সময় যারা তাদের মূল্যবান মতামত দিয়ে সহযোগিতা করেছেন —

শাওন মুহাম্মাদ শাহরিয়ার, মালয়েশিয়া।
মাসুদ শরীফ, বাংলাদেশ।
শিবলী মেহেদী, বাংলাদেশ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বোন, আমেরিকা থেকে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বোন, লন্ডন থেকে।
সিফাত মাহজাবীন, ব্রাসেলস্।
আবু মুয়ায, বাংলাদেশ।
শরিফ আবু হায়াত, বাংলাদেশ।
জাহিদ আলম, বাংলাদেশ।
নিয়াজ মোর্শেদ, বাংলাদেশ।
আদনান ফয়সাল, কানাডা।

লেখক:
ওমর আল জাবির, লন্ডন।

নতুন আর্টিকেল বের হলে জানতে চাইলে কু’রআনের কথা ফেইসবুক পেইজে লাইক করে রাখুন—

Exit mobile version