তাদেরকে যেখানে পাও সেখানেই হত্যা করো — আল-বাক্বারাহ ১৯০-১৯৪

“তোমরা তাদেরকে যেখানে পাও সেখানেই হত্যা করো”, “যতক্ষণ পর্যন্ত আল্লাহর বিধান প্রতিষ্ঠা না হয়, ততক্ষণ পর্যন্ত লড়াই করে যাও” — কুর’আনে এরকম কিছু আয়াত রয়েছে, যা দেখলে কিছু অমুসলিমদের খুশিতে দাঁত বের হয়ে যায়। তারা এই আয়াতগুলো পড়ে ভাবে, “এই তো পেয়েছি! এইবার মুসলিমরা যাবে কই?” এই ধরনের আয়াতগুলোর আগে-পিছে কিছু না পড়েই, আয়াতগুলোকে কাটছাঁট করে ব্যাপক প্রচার করে, যেন তারা মানুষকে দেখাতে পারে যে, ইসলাম একটি অসহনীয়, আগ্রাসী, অশান্তির ধর্ম, আর তারা নিজেরা কত সাধু।

আসুন দেখি, তারা কী প্রচার করে, আর কুর’আনে আসলে কী বলা আছে—

2_190_193

১৯০ যারা তোমাদের বিরুদ্ধে লড়াই করে, তাদের বিরুদ্ধে আল্লাহর পথে লড়াই করো, কিন্তু সীমা অতিক্রম করবে না। যারা সীমা অতিক্রম করে, তাদেরকে আল্লাহ কখনোই ভালোবাসেন না। ১৯১ তাদেরকে যেখানে পাও সেখানেই হত্যা করো। আর সেখান থেকে বের করে দাও, যেখান থেকে ওরা তোমাদেরকে একদিন বের করে দিয়েছিল। অন্যায় বাঁধা, নির্যাতন (ফিতনা) হত্যার চেয়েও খারাপ। তবে মসজিদুল হারাম-এর কাছে ওদের সাথে লড়াই করবে না, যদি না তারা সেখানে তোমাদের সাথে লড়াই শুরু না করে। আর যদি তারা সেখানে লড়াই করেই, তাহলে তাদেরকে হত্যা করো — অবিশ্বাসীদের এটাই উচিত প্রাপ্য। ১৯২ কিন্তু ওরা যদি বন্ধ করে, তবে অবশ্যই, আল্লাহ অনেক ক্ষমা করেন, তিনি নিরন্তর দয়ালু। ১৯৩ যতক্ষণ পর্যন্ত অন্যায় বাঁধা, নির্যাতনের (ফিতনা) অবসান না হয় এবং আল্লাহর দ্বীন প্রতিষ্ঠা না হয়, ততক্ষণ পর্যন্ত লড়াই করে যাও। কিন্তু ওরা যদি বন্ধ করে, তাহলে কোনো বিরোধ থাকা যাবে না, শুধু মাত্র অন্যায়কারীদের বিরুদ্ধে ছাড়া। [আল-বাক্বারাহ]

2_190_title

কুর’আনে যত জায়গায় আল্লাহ تعالى কিতাল (যুদ্ধ, লড়াই) এর আদেশ দিয়েছেন, তার প্রত্যেকটির পেছনে কোনো না কোনো প্রেক্ষাপট রয়েছে। এমন কোনো আয়াত পাওয়া যাবে না, যেখানে আল্লাহ تعالى মুসলিমদেরকে কোনো কারণ ছাড়াই নিজে থেকেই গিয়ে মারামারি করতে বলেছেন, মানুষকে জোর করে মুসলিম বানানোর জন্য বা নিজেদের আধিপত্য প্রসার করার জন্য। যেমন, আল-বাক্বারাহ’র এই আয়াতগুলোতে মুসলিমদের লড়াই করার নির্দেশ তখনি দেওয়া হয়েছে, যখন মানুষ তাদের বিরুদ্ধে লড়াই শুরু করে। যুদ্ধ, লড়াই এর ব্যাপারে কুর’আনে সবসময় শর্ত হচ্ছে: আত্মরক্ষা বা ইসলাম মেনে চলতে বাঁধা দেওয়া।[২][৪][১১]

আজকাল কিছু অমুসলিম কু’রআনে এই ধরনের আয়াতগুলো নিয়ে লেখালেখি করে দেখাতে চায় যে, ইসলাম একটি অসহনীয় ধর্ম। এই ধর্ম কিছু হলেই মারামারি করতে বলে। অথচ অন্য ধর্মগুলো কত শান্তির। সেই সব ধর্ম মানুষকে সবসময় মিলে-মিশে থাকতে বলে, যত সম্ভব অহিংসার পথ অবলম্বন করতে বলে। কিন্তু ইসলাম একরোখা ধর্ম, এটি মানুষকে অন্যায়ের প্রতি সহনশীল হতে বলে না, নিজেদের প্রতিপত্তি বাড়ানোর জন্য যুদ্ধ করতে বলে ইত্যাদি। তাদের বক্তব্য পড়লে মনে হয় কু’রআনে উচিত ছিল এরকম কিছু আয়াত থাকা, “যারা তোমাদের বিরুদ্ধে লড়াই করে, তাদের বিরুদ্ধে লড়াই করো না। চুপচাপ মার খেয়ে যাও। যারা অন্যায়ের প্রতিবাদ করে না, তাদেরকে আল্লাহ বড়ই ভালবাসেন। আর তাদেরকে সেখান থেকে বের করে দিও না, যেখান থেকে ওরা তোমাদেরকে একদিন বের করে দিয়েছিল। অন্যায় বাঁধা, নির্যাতন (ফিতনা) ধৈর্য ধরে সহ্য করে যাও, যুদ্ধ করার থেকে অন্যায় মুখ বুখে সহ্য করা উত্তম।”

জিহাদ সম্পর্কে মুসলিমদের অবস্থান

ডঃ ইউসুফ আল-কারাদাউয়ী’র বিখ্যাত বই ‘ফিকহুল জিহাদ’-এ জিহাদ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা রয়েছে। সেখানে তিনি আত্মরক্ষায় জিহাদ (জিহাদ আদ-দাফ’), আক্রমণাত্মক জিহাদ (জিহাদ আত-তালাব) —এই দুই ধরনের জিহাদ সম্পর্কে প্রাচীন আলেমরা, যেমন ইবন তাইমিয়াহ, আস-সুয়ুতি, ইবনুল কাইয়্যিম, ইমাম আবু হানিফা, ইমাম মালিক, ইমাম আহমাদ, ইমাম শাফিই সহ শত ইমাম, ক্বাদি, মুহাদ্দিস, ফাকিহদের জিহাদ সম্পর্কে লেখা বই, মতবাদ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন। সেখানে তিনি দেখিয়েছেন যে, মুসলিমদের মধ্যে জিহাদ সম্পর্কে মূলত দুটো মত রয়েছে[৩৩৩]

১) একদল মনে করে জিহাদ শুধুমাত্র আত্মরক্ষা এবং ইসলাম মানতে বাঁধা দূর করতে করা যাবে। জিহাদে শুধুমাত্র যারা আক্রমণ করছে, তাদেরকে পালটা আক্রমণ করা যাবে। আক্রমণ করছে না বা আক্রমণে প্রত্যক্ষভাবে সাহায্য করছে না, এরকম কাউকে আক্রমণ করা যাবে না।

২) আরেকদল মনে করে শুধুমাত্র কুফরি, অর্থাৎ ইসলামে বিশ্বাস না করার কারণে, যে কোনো মানুষ, জাতি, দেশকে আক্রমণ করা যাবে, তারা মুসলিমদের ক্ষতি না করলেও যাবে। তাদেরকে ইসলামের দাওয়াত দিলে তারা যদি ইসলাম মেনে না নেয়, তাহলেই তারা কাফির হয়ে যাবে, এবং কুফরি করার কারণে তাদেরকে আক্রমণ করা যাবে, অথবা তাদের কাছ থেকে জিযিয়া (কর) নেওয়া যাবে।

লেখক তার ১৪০০ পৃষ্ঠার বিশাল বইয়ে উভয় পক্ষের বহু দলিল উপস্থাপন করে দেখিয়েছেন যে, প্রথম অবস্থানের পক্ষে ইসলামের শুরু থেকে আজ পর্যন্ত সিংহভাগ ইমাম, ক্বাদি, ফাকিহদের সমর্থন রয়েছে। এদের মধ্যে রয়েছেন ইবন তাইমিয়াহ, আস-সুয়ুতি, ইবনুল কাইয়্যিম, ইমাম আবু হানিফা, ইমাম মালিক, ইমাম আহমাদ সহ শত শত আলেম। দ্বিতীয় অবস্থানের পক্ষে ইমাম শাফিই এবং সংখ্যালঘু কিছু আলেমের সমর্থন রয়েছে। দ্বিতীয় অবস্থানের পক্ষে যে সমস্ত দলিল দেখানো হয়, সেগুলো পরিষ্কারভাবে কু’রআনের বহু আয়াতের বিরুদ্ধে যায়। যে কারণে দ্বিতীয় অবস্থানের পক্ষের আলেমরা কু’রআনের সেই সব আয়াতকে মানসুখ অর্থাৎ বাতিল ঘোষণা করে তাদের অবস্থান সমর্থন করার চেষ্টা করেছেন, যা প্রথম পক্ষের আলেমরা যথেষ্ট দলিল দিয়ে ভুল প্রমাণ করেছেন।[৩৩৩]

অন্যায় বাঁধা, নির্যাতন (ফিতনা) হত্যার চেয়েও খারাপ

ইসলাম অন্যায় সহ্য করে না। মুসলিমদের উপর অন্যায় নির্যাতন, নিপীড়ন হচ্ছে, আর মুসলিমরা অন্যায় মুখ বুজে সহ্য করে থাকবে, এটা ইসলামের শিক্ষা নয়। কারণ এভাবে অন্যায়কে প্রশ্রয় দিলে অন্যায় বাড়তেই থাকবে। একটা সময় গিয়ে অন্যায়কারীরা এতটাই শক্তিশালী এবং বেপরোয়া হয়ে যাবে যে, তারা আইনের পরোয়া না করে প্রকাশ্যে অন্যায় করতে থাকবে। কেউ আর তখন প্রতিরোধ করতে সাহস করে এগিয়ে আসবে না। একারণে অন্যায়কে যদি ছোট থাকতেই নিয়ন্ত্রণ করা না হয়, তখন তা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। অন্যায় প্রতিহত করতে তখন অনেক রক্তপাত ঘটাতে হয়।

মানুষকে হত্যা করা অবশ্যই জঘন্য কাজ। কিন্তু মুসলিমদেরকে আল্লাহর تعالى ইবাদত করতে বাঁধা দেওয়া, শুধুই মুসলিম হওয়ার জন্য তাদের উপর অত্যাচার করাটা তাদেরকে হত্যা করার থেকেও খারাপ। হত্যা করলে বরং সেই মুসলিমরা শহীদ হয়ে তাদের প্রভুর কাছে ফিরে যেতে পারে। কিন্তু হত্যা না করে তাদেরকে জীবিত রেখে নির্যাতন করাটা তাদের জন্য বরং আরও বেশি কষ্টের।

কিন্তু সীমা অতিক্রম করবে না

অন্যায় প্রতিহত করতে গিয়ে যখন মুসলিমরা লড়াই করবে, যুদ্ধ করবে, তখন তাদেরকে অনেক শর্ত মেনে চলতে হয়। যেমন, শুধুমাত্র তাদের সাথেই যুদ্ধ করা যাবে, যারা মুসলিমদেরকে আক্রমণ করে, বা আক্রমণে সহযোগিতা করে। কোনো নিরীহ নারী, শিশু, বৃদ্ধ, ধর্মযাজক, সন্ন্যাসী — এদেরকে আক্রমণ করা যাবে না।[৪][১৪] এটাই আল্লাহ تعالى বার বার বলেছেন, “যারা তোমাদের বিরুদ্ধে লড়াই করে, তাদের বিরুদ্ধে আল্লাহর পথে লড়াই করো, কিন্তু সীমা অতিক্রম করবে না। যারা সীমা অতিক্রম করে, তাদেরকে আল্লাহ কখনোই ভালোবাসেন না।

লড়াই করার শর্তগুলো হলো, লড়াই করতে হবে ফি-সাবিলিল্লাহ অর্থাৎ ‘আল্লাহর পথে’। লাগামহীন মারামারি, খুনাখুনি, ক্ষমতা দখল, আধিপত্য বাড়ানো, সম্মান কুড়ানো, জোর-জবরদস্তি, সম্পত্তি দখল, এলাকা বাড়ানো —এসব কোনো কারণে লড়াই করা যাবে না। মুসলিমদের আল্লাহর تعالى পথে চলতে কেউ বাঁধা দিলে, সেই বাঁধা প্রতিহত করতে যুদ্ধ করা যাবে।[৬] আল্লাহর تعالى উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে লড়াই করতে গিয়েও খেয়াল রাখতে হবে যেন সীমা অতিক্রম হয়ে না যায়। কোনো ধরনের সীমা অতিক্রম যেন না হয়, সেটা আল্লাহ تعالى পর পর দুই বার বলে সাবধান করে দিয়েছেন, যেন মাথায় প্রথমবার না ঢুকলে দ্বিতীয় বার সাবধান বাণীটা ঢোকে।

একই সাথে আলেমরা বলেছেন, এই আয়াতে সীমা অতিক্রম করা বলতে যুদ্ধের নিয়ম ভাঙ্গা, মৃত দেহ বিকৃত করা, প্রতিপক্ষের সম্পত্তি চুরি বা ধ্বংস করা —এগুলো সব অন্যায়। মুসলিমরা যুদ্ধ করে ন্যায় প্রতিষ্ঠা করার জন্য। ন্যায় প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে কোনো অন্যায় কাজ করা হচ্ছে সীমা অতিক্রম করা। যখনি কোনো রক্তপাত হবে, সেটা হতে হবে মুসলিমদের আত্মরক্ষায়। একমাত্র আত্মরক্ষার প্রয়োজনে মুসলিমদেরকে রক্তপাত, যুদ্ধ করতে অনুমতি দেওয়া হয়েছে।[২][৪][৬]

সরাসরি আত্মরক্ষার প্রয়োজন ছাড়া অন্য কোনো রাজনৈতিক কারণে জিহাদ, কিতাল তখনি সম্ভব, যখন একটি ইসলামিক আইন শাসিত রাষ্ট্র রয়েছে। শুধুমাত্র সেই রাষ্ট্রের শাসকের আদেশেই মুসলিমদের হাতে অস্ত্র তুলে নেওয়ার অনুমতি রয়েছে। সেই খালিফা তার শূরা কাউন্সিলের সাথে আলোচনা করে মুসলিমদেরকে নির্দেশ দিবেন ঠিক কী কারণে, কাদের সাথে, কখন, কোথায় যুদ্ধ করতে হবে। যুদ্ধের সময় কী করা যাবে, কী করা যাবে না —এই মূলনীতিগুলোও তিনি দিয়ে দেবেন। এর বাইরে যে কোনো কিছুই হচ্ছে সীমা অতিক্রম করা, আল্লাহর تعالى অবাধ্য হয়ে যাওয়া।[১১]

ইন শাআ আল্লাহ تعالى এটাই এই আয়াতের সঠিক শিক্ষা। সুতরাং এরপর আপনি যখনি দেখবেন ইসলামের শত্রুরা বা মুসলিম পরিচয়ধারীরা ভিন্ন কিছু প্রচার করছে, কু’রআনের আয়াত কাটছাঁট করে দলিল দেখাচ্ছে, আপনি নিশ্চিত হবেন যে, এটা তাদের ষড়যন্ত্র ছাড়া আর কিছু নয়। কিছু মুসলিম দল জিহাদ ঘোষণা দিয়ে আত্মরক্ষার প্রয়োজন ছাড়াই আক্রমণ করছে, কিন্তু তার মানে এই না যে, তারা ঠিক কাজ করছে। হতে পারে তারা সততা, নিষ্ঠার সাথেই কাজটা করছে, কিন্তু তার মানে এই নয় যে, তাদের কাজটা সঠিক। একারণে কিছু মুসলিমের বেপরোয়া আচরণের জন্য ইসলামকে, কু’রআনকে এবং পুরো মুসলিম জাতিকে দোষ দিলে হবে না।[১১]

সাধারণ পরিস্থিতিতে জিহাদের একমাত্র গ্রহণযোগ্য প্রেক্ষাপট হচ্ছে: মুসলিমদের আত্মরক্ষা এবং মুসলিমদের ইসলাম মেনে চলতে যারা বাঁধা দেয়, তাদের প্রতিহত করা। তারপরেও সেই সব জিহাদে কী করা যাবে, কী করা যাবে না, তার অনেক নিয়মকানুন রয়েছে।[২][৬][১১] সবচেয়ে পরিষ্কার নিয়ম হচ্ছে: যে আক্রমণ করছে না, তার কোনো ক্ষতি করা যাবে না।[৪] যে সমস্ত লোক মুসলিমদেরকে আক্রমণ করছে না, যেমন নারী, শিশু, বৃদ্ধ, প্রতিবন্ধী, পাদ্রী, সন্ন্যাসী, অন্য ধর্মের নিবেদিত অনুসারীরা, যারা কাফিরদের প্রতিষ্ঠানে জীবিকার প্রয়োজনে কাজ করে —এদের কারো বিরুদ্ধে অস্ত্র ধরা যাবে না।[৪] এই মূলনীতি যদি আমরা লক্ষ্য করি, তাহলে আমরা দেখবো যে, আজকাল অনেক মুসলিম বেপরোয়াভাবে জিহাদের নামে আক্রমণ করে যেভাবে অনেক নিরীহ মানুষের ক্ষতি করছে, প্রাণহানি করছে, তা জিহাদের এই মূল শর্তকেই ভেঙ্গে দিচ্ছে। শুধুমাত্র যারা মুসলিমদের আক্রমণ করছে, মুসলিমদের ইসলাম মেনে চলতে বাঁধা দিচ্ছে, তাদের বাইরে যে কোনো নিরীহ মানুষকে মারা সীমালঙ্ঘন।[৪]

যতক্ষণ পর্যন্ত অন্যায় বাঁধা, নির্যাতনের (ফিতনা) অবসান না হয় এবং আল্লাহর দ্বীন প্রতিষ্ঠা না হয়, ততক্ষণ পর্যন্ত লড়াই করে যাও

অনেক অমুসলিমরা এই আয়াত দেখিয়ে বলে যে, “দেখেছ? কু’রআন মুসলিমদের বলে যুদ্ধ করতে, যতক্ষণ না তারা সব দেশের মানুষকে মুসলিম বানিয়ে ছাড়ে। সাধে কী আর আমরা বলি যে, ইসলাম প্রসার হয়েছে তলোয়ারের জোরে?”

যারা এই দাবি করেন, তাদের জন্য এই পরিসংখ্যানটি কাজে লাগবে—

১৫০ হিজরিতে (৭৬৭ খ্রিস্টাব্দ) ইরাক ও এর সংলগ্ন এলাকায় বসবাসরত মুসলিমদের সংখ্যা ছিলো সেখানকার মোট জনসংখ্যার আনুমানিক ১৫%-২০%। ২৫০ হিজরিতে (৮৬৪ খ্রিস্টাব্দ) সেখানকার মোট জনসংখ্যার ৩৫%-৪০% ছিলো মুসলিম। প্রথমবারের মতো সেখানকার জনসংখ্যার ৫০%-এর অধিক মুসলিম ছিলো ৩০০ হিজরির কাছাকাছি সময়ে। আর ৩৫০ হিজরির দিকে (৯৬১ খ্রিস্টাব্দ) স্থানীয় মোট জনসংখ্যার আনুমানিক ৭৫% ছিলো মুসলিম [Dr. Sherman Jackson]।[৩৩৪]

আজকালকার বেশিরভাগ মুসলিমই সেই সময়ের এই চমকপ্রদ পরিসংখ্যানের সাথে পরিচিত নন। এই পরিসংখ্যানই দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বলে দিচ্ছে যে, তলোয়ারের মাধ্যমে ইসলাম ধর্মের প্রসার ঘটেনি। ইসলামী সাম্রাজ্যের রাজধানী ও এর সংলগ্ন এলাকার অবস্থাই যদি এমন হয়ে থাকে, তাহলে গোটা সাম্রাজ্যের বাদবাকী অঞ্চলের অবস্থা কেমন ছিলো, তা অনুমান করতে আমাদের খুব বেশি কষ্ট হওয়ার কথা নয়।

এই আয়াতে আল্লাহ تعالى বলেছেন, যতক্ষণ ফিতনা বন্ধ না হচ্ছে, ততক্ষণ লড়াই করে যেতে হবে। ফিতনা শব্দটি বিভিন্ন অর্থে কু’রআনে ব্যবহার হয়েছে: কঠিন পরীক্ষা, নির্যাতন, অন্যায় বাঁধা, মতবিরোধ, আগুনে পোড়া, কামনার হাতছানি ইত্যাদি।[৫] ইসলাম মেনে চলতে মুসলিমদের যত বাঁধা, সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়, সেগুলোই ফিতনা। যা কিছুই মানুষকে ইসলাম থেকে দূরে নিয়ে যায়, সেটাই ফিতনা। সেটা আজকের যুগে চারিদিকে ব্যাপক হারে ছড়িয়ে পড়া অশ্লীলতা, অপসংস্কৃতি থেকে শুরু করে সিরিয়াতে মুসলিমদের উপর নির্যাতন, গাজায় ইসরাইলের আক্রমণ, উপমহাদেশে মুসলিমদের উপর সরকারের ব্যাপক অন্যায় আচরণ —এই সব কিছুই ফিতনা।

মক্কার মুশরিকরা মুসলিমদেরকে ইসলাম ত্যাগ করানোর জন্য নানা নির্যাতন করতো। তাদেরকে নামাজ পড়তে দেখলে আক্রমণ করতো। ইসলাম গ্রহণ করেছে শুনলে মরুভূমির প্রখর রোদে তপ্ত বালুতে ফেলে মারধোর করতো। খেতে দিত না। ব্যবসা করতে দিত না, যেন তারা আয় রোজগার শূন্য হয়ে ফকির হয়ে যায়। বাড়ি থেকে বের করে দিত। যতভাবে সম্ভব তারা চেষ্টা করেছে মুসলিমদেরকে ইসলাম ত্যাগ করানোর। এসব ছিল মুসলিমদের জন্য ফিতনা। এই আয়াতে আল্লাহ تعالى বলছেন: এই সব ফিতনা দূর না হওয়া পর্যন্ত যুদ্ধ করে যেতে হবে। যতক্ষণ পর্যন্ত না মুসলিমরা বিনা বাঁধায় আল্লাহর تعالى দ্বীন অনুসরণ করতে না পারছে, ততক্ষণ পর্যন্ত সংগ্রাম করে যেতে হবে।[৪][৬][১১]

দ্বীন অর্থ হচ্ছে আল্লাহর تعالى প্রতি আনুগত্য থেকে গড়ে ওঠা জীবন ব্যবস্থা। ফিতনা মানুষকে দ্বীন অনুসরণ করা থেকে দূরে নিয়ে যেতে চায়, বাঁধা দেয়। একারণে ফিতনা দূর না হওয়া পর্যন্ত মুসলিমরা ঠিকমতো দ্বীন অনুসরণ করতে পারে না। যতক্ষণ পর্যন্ত মুসলিমদের আল্লাহর تعالى দ্বীন মানতে বাঁধাগুলো দূর না হচ্ছে, যাতে করে মুসলিমরা নির্বিঘ্নে দ্বীন পালন করতে পারে, ততক্ষণ পর্যন্ত যুদ্ধ করে যেতে বলা হয়েছে। কিন্তু এটা শুধুই প্রত্যক্ষ বাঁধার বেলায় প্রযোজ্য।[৩]

ইসলাম ধর্মীয় স্বাধীনতা নিশ্চিত করে। আল্লাহর تعالى দ্বীন প্রতিষ্ঠা মানে এই নয় যে, সব অবিশ্বাসীদের জোর করে ইসলাম গ্রহণ করানো।[৩] কু’রআনে পরিষ্কার বলা হয়েছে—

ধর্মের ব্যাপারে কোনো জবরদস্তি নেই। সত্য পথ মিথ্যা থেকে স্পষ্ট হয়ে গেছে।… [আল-বাক্বারাহ ২:২৫৬]
যদি তোমার প্রভু চাইতেন, তাহলে পৃথিবীতে সবাই অবশ্যই বিশ্বাস করত। তাহলে তুমি কি মানুষকে জোর জবরদস্তি করবে বিশ্বাস না করা পর্যন্ত? [ইউনুস ১০:৯৯]
আহলে কিতাবের মানুষদের সাথে সুন্দরভাবে ছাড়া যুক্তিতর্ক করবে না। তবে যারা অন্যায় করে, তাদের কথা আলাদা। বল, “আমরা বিশ্বাস করি যা আমাদের উপর অবতীর্ণ হয়েছে, এবং যা তোমাদের উপর অবতীর্ণ হয়েছে; আমাদের এবং তোমাদের উপাস্য প্রভু একই সত্তা, আমরা তাঁরই প্রতি নিজেদেরকে সমর্পণ করি।” [আল-আনকাবুত ২৯:৪৬]
কোনো মুশরিক (মূর্তি পূজারি, যারা শিরক করে) যদি তোমাদের কাছ নিরাপত্তা চায়, তাহলে তাকে তা দেবে, যেন সে আল্লাহর বাণী শোনার সুযোগ পায়। তারপর তাকে একটা নিরাপদ জায়গায় নিয়ে যাবে। আসলে তারা এমন একটা জাতি, যাদের জ্ঞান নেই। [আত-তাওবাহ ৯:৬]

ইসলাম অন্য সকল ধর্মের মানুষদেরকে নিশ্চয়তা দেয়, যেন তারা তাদের ধর্ম পালন করতে পারে। মুসলিমদের উপর আদেশ হলো বিধর্মীদেরকে ভালো করে বোঝানো, তাদের সাথে সুন্দর ভাষায় যুক্তিতর্ক করা, ইসলামের সৌন্দর্য তাদের কাছে কথা, কাজ, আচরণের মাধ্যমে তুলে ধরা, যেন বিধর্মীরা ইসলামের সৌন্দর্য উপলব্ধি করে ইসলাম সম্পর্কে জানতে আগ্রহী হয়।[৩]

জোর করে ইসলাম গ্রহণ করানো ইসলাম এবং মুসলিম এই দুটো শব্দের সংজ্ঞারই পরিপন্থী। মুসলিম শব্দের অর্থ: যে নিজের ইচ্ছাকে আল্লাহর تعالى ইচ্ছার কাছে সমর্পণ করেছে। কাউকে ইচ্ছার বিরুদ্ধে তার ইচ্ছাকে আল্লাহর تعالى কাছে সমর্পণ করানো যায় না —এটা স্ববিরোধী, অযৌক্তিক কথা। একইভাবে অন্য ধর্মের লোকেরা যেন তাদের ধ্যান, ধারণা, বিশ্বাস, সংস্কৃতি জোর করে মুসলিমদের উপর চাপিয়ে না দেয়। যদি দেয়, সেটা ফিতনা হবে, এবং সেই ফিতনা দূর করতে মুসলিমরা সংগ্রাম করতে পারবে। তবে শর্ত হলো—[৩]

কিন্তু ওরা যদি বন্ধ করে, তাহলে কোনো বিরোধ থাকা যাবে না, শুধু মাত্র অন্যায়কারীদের বিরুদ্ধে ছাড়া

কল্পনা করুন, আপনি একজন হিন্দু, ভারতের এক গ্রামে থাকেন, যেখানে মাত্র গুটি কয়েকজন মুসলিম হয়েছে। একদিন আপনি ইসলামের সত্য শিক্ষা খুঁজে পেয়ে নিজে মুসলিম হয়ে গেলেন। গ্রামের মোড়লরা জানতে পারলো যে, আপনি মুসলিম হয়ে গেছেন। ব্যাস, শুরু হলো আপনার উপর অত্যাচার। প্রথমে তারা আপনাকে রাস্তায় দেখলে গালি দিত, ঢিল ছুঁড়ে মারত। তারপরও আপনাকে টলাতে না পেরে, রাস্তায় একদিন আপনাকে একা পেয়ে ব্যাপক মার দিলো। তারপর আপনাকে একদিন মাঠে নামাজ পড়তে দেখে আপনার উপর চড়াও হয়ে আপনাকে টেনে হিঁচড়ে বাজারে নিয়ে গেল, লোকজনদের সামনে আপনাকে চরম অপমান করলো। শেষ পর্যন্ত একদিন রাতের অন্ধকারে কয়েকজন লুকিয়ে এসে আপনার বাড়ি আগুন জ্বালিয়ে পুড়িয়ে দিলো। আপনাকে পরিবার সহ বাড়ি ছেড়ে অন্য এক মুসলিমের বাসায় গিয়ে আশ্রয় নিতে হলো। এভাবে বছরের পর বছর ধরে আপনার উপর তারা অত্যাচার করতে থাকলো।

এদিকে গ্রামে মুসলিমদের সংখ্যা বাড়তে বাড়তে এমন একটা পর্যায়ে পৌঁছুল যে, মুসলিমরা সঙ্ঘবদ্ধ হয়ে তাদের উপর অত্যাচার প্রতিহত করা শুরু করলো। তাদেরকে গ্রামের হিন্দুরা আক্রমণ করলে, তারাও আত্মরক্ষায় উচিত জবাব দেওয়া করা শুরু করলো। এভাবে একসময় মুসলিমরা বেশ শক্তিশালী হয়ে গেল। একটা পর্যায় গিয়ে মুসলিমরা গ্রামের সবচেয়ে শক্তিশালী বাহিনী হয়ে গেল। তারা এখন ইচ্ছা করলেই গ্রামের হিন্দুদের উপর চড়াও হয়ে বছরের পর বছর ধরে চলা অত্যাচারের প্রতিশোধ নিতে পারে, সব হিন্দুকে গ্রাম ছাড়া করে ছাড়তে পারে। কিন্তু এখন আর হিন্দুরা তাদেরকে আক্রমণ করছে না, ইসলাম মেনে চলতে মুসলিমদেরকে কোনো বাঁধা দিচ্ছে না। তারা মুসলিমদের ধর্মীয় স্বাধীনতা মেনে নিয়েছে। সেই অবস্থায় মুসলিমরা ইচ্ছে করলেও প্রতিশোধ নিতে পারবে না, কারণ আল্লাহ تعالى নিষেধ করে দিয়েছেন। প্রতিশোধ নেওয়া তো দূরের কথা, তাদের সাথে কোনো বিরোধ রাখা, কঠোর হওয়া পর্যন্ত যাবে না। শুধুমাত্র যেই হিন্দুরা তখনো অন্যায় করে যাবে, শুধুমাত্র তাদের বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নিতে পারবে। এতদিন ধরে যারা মুসলিমদেরকে এত কষ্ট দিয়েছে, এত অন্যায় করেছে, তাদেরকে আল্লাহ تعالى ছেড়ে দিলেন, শুধুমাত্র এই কারণে যে, তারা এখন আর মুসলিমদেরকে বাঁধা দিচ্ছে না। শুধু তাই না, তাদের জন্য আল্লাহর تعالى বাণী—

কিন্তু ওরা যদি থামে, তবে অবশ্যই, আল্লাহ অনেক ক্ষমা করেন, তিনি নিরন্তর দয়ালু।

তাদের এত অন্যায়ের পরেও আল্লাহ تعالى তাদেরকে ক্ষমা করতে রাজি আছেন। ওদিকে আপনি প্রতিদিন বাইরে গেলে দেখতে পান আপনার ওই প্রতিবেশীকে, যে আপনাকে প্রচন্ড মার দিয়েছিল। বাজারে গেলে দেখেন ওই লোকগুলোকে, যারা আপনাকে বাঁচাতে এগিয়ে তো আসেইনি, বরং আপনাকে অত্যাচার করার সময় উল্টো হাসাহাসি করেছিল। মাঠে গেলে দেখেন সেই সব হিন্দু মোড়লদের, যারা আপনার বাড়িতে আগুন জ্বালিয়ে আপনাকে পথে বসিয়ে দিয়েছিল। প্রতিদিন আপনাকে সেই সব অত্যাচারী হিন্দুদের দেখে হাসি মুখে কথা বলতে হয়। আপনার ভেতরে যতই প্রতিশোধের আগুন জ্বলুক না কেন, আল্লাহ تعالى তাদেরকে ক্ষমা করে দিতে পারেন। তিনি تعالى কঠিন আদেশ দিয়েছেন যেন, আপনি তাদেরকে কিছুই না করেন, তাদের সাথে সবসময় ভালো ব্যবহার করেন।

এই হচ্ছে কু’রআনের শিক্ষা। এরপরও কেউ যদি ইসলামকে শান্তি এবং দয়ার ধর্ম না বলে, তাহলে সমস্যা ইসলামের নয়, সমস্যা তার অন্ধ চোখে, বধির কানে এবং পাথর হয়ে যাওয়া অন্তরে।

2_194

পবিত্র মাসের বদলে পবিত্র মাস, পবিত্র মাসের অবমাননার বিনিময়ে সমান প্রতিশোধ। তাই কেউ যদি তোমাদের বিরুদ্ধে আগ্রাসন চালায়, তাহলে তার বিরুদ্ধে ঠিক একইভাবে আগ্রাসন চালাবে, যেভাবে সে তোমাদের উপর চালিয়েছে। আল্লাহর প্রতি সাবধান থেকো। জেনে রেখো, যারা তাঁর প্রতি সবসময় সাবধান থাকে, তিনি তাদের সাথে আছেন। [আল-বাক্বারাহ ১৯৪]

আল্লাহর تعالى কাছে মুসলিমদের রক্ত মসজিদুল হারামের থেকেও বেশি দামি, যে কোনো পবিত্র মাসের থেকেও বেশি গুরুত্ব রাখে। কেউ যদি মুসলিমদেরকে এই সব পবিত্র জায়গায়, পবিত্র মাসে আক্রমণ করে, তাহলে তাকেও পালটা আক্রমণ করে প্রতিহত করতে হবে। সেটা রমজান মাস হোক, আর কা’বার পাশেই হোক না কেন। দুঃখজনকভাবে আজকাল দেখা যায় যে, একটা মসজিদ ভাঙলে মুসলিমদের রক্ত যত গরম হয়ে যায়, যে ব্যাপক প্রতিবাদ, আন্দোলন দেখা যায়, তার ধারে কাছে কিছু দেখা যায় না, যখন কোনো দেশে মুসলিমদের গণহারে মেরে শেষ করে ফেলা হয়। যেখানে আল্লাহর تعالى কাছে মুসলিমদের জীবনের মূল্য যেকোনো মসজিদ, এমনকি কা’বার থেকেও বেশি, সেখানে আজকে মুসলিম জাতি তার মুসলিম ভাই-বোনদের রক্তের থেকে মসজিদ ভাঙ্গা, ব্যাঙ্গাত্নক কার্টুনের প্রতি বেশি দরদী হয়ে গেছে।

সূত্র:

  • [১] নওমান আলি খানের সূরা আল-বাকারাহ এর উপর লেকচার এবং বাইয়িনাহ এর কু’রআনের তাফসীর।
  • [২] ম্যাসেজ অফ দা কু’রআন — মুহাম্মাদ আসাদ।
  • [৩] তাফহিমুল কু’রআন — মাওলানা মাওদুদি।
  • [৪] মা’রিফুল কু’রআন — মুফতি শাফি উসমানী।
  • [৫] মুহাম্মাদ মোহার আলি — A Word for Word Meaning of The Quran
  • [৬] সৈয়দ কুতব — In the Shade of the Quran
  • [৭] তাদাব্বুরে কু’রআন – আমিন আহসান ইসলাহি।
  • [৮] তাফসিরে তাওযীহুল কু’রআন — মুফতি তাক্বি উসমানী।
  • [৯] বায়ান আল কু’রআন — ড: ইসরার আহমেদ।
  • [১০] তাফসীর উল কু’রআন — মাওলানা আব্দুল মাজিদ দারিয়াবাদি
  • [১১] কু’রআন তাফসীর — আব্দুর রাহিম আস-সারানবি
  • [১২] আত-তাবারি-এর তাফসীরের অনুবাদ।
  • [১৩] তাফসির ইবন আব্বাস।
  • [১৪] তাফসির আল কুরতুবি।
  • [১৫] তাফসির আল জালালাইন।
  • [১৬] লুঘাতুল কুরআন — গুলাম আহমেদ পারভেজ।
  • [৩৩২] Islamqa.info,. (2015). Meanings of the word fitnah in the Qur’aan – islamqa.info. Retrieved 27 September 2015, from http://islamqa.info/en/22899
  • [৩৩৩] Onislam.net,. (2015). Jihad Between Defense and Attack. Retrieved 27 September 2015, from http://www.onislam.net/english/shariah/contemporary-issues/interviews-reviews-and-events/412141-al-qaradawis-fiqh-of-jihad-book-review-411.html?Events=
  • [৩৩৪] Jackson, D. (2015). Muslims as a Marginal Minority in America | ALIM . Alimprogram.org. Retrieved 28 September 2015, from http://www.alimprogram.org/articles/muslims-as-a-marginal-minority/

নতুন আর্টিকেল বের হলে জানতে চাইলে কু’রআনের কথা ফেইসবুক পেইজে লাইক করে রাখুন—

3 thoughts on “তাদেরকে যেখানে পাও সেখানেই হত্যা করো — আল-বাক্বারাহ ১৯০-১৯৪”

  1. “লেখক তার ১৪০০ পৃষ্ঠার বিশাল বইয়ে উভয় পক্ষের বহু দলিল উপস্থাপন করে দেখিয়েছেন যে, প্রথম অবস্থানের পক্ষে ইসলামের শুরু থেকে আজ পর্যন্ত সিংহভাগ ইমাম, ক্বাদি, ফাকিহদের সমর্থন রয়েছে। এদের মধ্যে রয়েছেন ইবন তাইমিয়াহ, আস-সুয়ুতি, ইবনুল কাইয়্যিম, ইমাম আবু হানিফা, ইমাম মালিক, ইমাম আহমাদ সহ শত শত আলেম। দ্বিতীয় অবস্থানের পক্ষে ইমাম শাফিই এবং সংখ্যালঘু কিছু আলেমের সমর্থন রয়েছে। দ্বিতীয় অবস্থানের পক্ষে যে সমস্ত দলিল দেখানো হয়, সেগুলো পরিষ্কারভাবে কু’রআনের বহু আয়াতের বিরুদ্ধে যায়। যে কারণে দ্বিতীয় অবস্থানের পক্ষের আলেমরা কু’রআনের সেই সব আয়াতকে মানসুখ অর্থাৎ বাতিল ঘোষণা করে তাদের অবস্থান সমর্থন করার চেষ্টা করেছেন, যা প্রথম পক্ষের আলেমরা যথেষ্ট দলিল দিয়ে ভুল প্রমাণ করেছেন।[৩৩৩]”

    ভাইয়া এখানে আপনার লেখা তে বুঝা গেল ইমাম শাফিই ও কু’রআনের সেই সব আয়াতকে মানসুখ অর্থাৎ বাতিল ঘোষণা করে তাদের অবস্থান সমর্থন করার চেষ্টা করেছেন, যা প্রথম পক্ষের আলেমরা যথেষ্ট দলিল দিয়ে ভুল প্রমাণ করেছেন। ৩৩৩ নাম্বার এ এরকম উক্তি আমি খুজে পেলাম না। অথবা যদি থেকেও থাকে ইমাম শাফিই রঃ এর প্রতি একটা অপবাদ মনে হচ্ছে। কারন ৪ বিশিষ্ঠ ইমাম এর একজন। কুরআন এর আয়াত কে মানসুখ অথবা বাতিল করেছেন এত বড় একজন প্রসিদ্ধ ইমাম! যদি করেও থাকে তার প্রমান রেফারেন্স সহ কারে উল্লেখ করা উচিত নয় কি?

    1. ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য। আর্টিকেলে লেখা আছে—
      Conversely, the scholars of the second party, that is, the “hard-line scholars,” claim that all these verses are abrogated by a verse, or a part of a verse, mentioned in Surat At-Tawbah, called the “verse of the sword.” (Fiqh of Jihad, vol. 1, pp.243-245)

      এখানে অপবাদ দেওয়ার কিছু নেই। যা করা হয়েছে, সেটাই বলা হয়েছে। তারা সবাই নিষ্ঠার সাথেই তাদের নিজ নিজ অবস্থানে ছিলেন। কু’রআনের কিছু আয়াতকে সব মাযহাবই বিভিন্ন প্রেক্ষাপটে বাতিল ঘোষণা করেছে।

  2. Does the attack in Gulshan in June 2016 have any type of correctness according to Islam and Shariah if following statements are satisfied?
    1. If the attackers are truly ISIS members / motivated by ISIS
    2. ISIS has a declered state / caliphate and an Amir
    3. Amir asks to attack people of darul harb like Italy, Japan, USA, India whose army and in some cases general public are involved in destroying Islam and Muslims, attack them in anywhere in world
    4. If females killings is considered as mistake(3-4 female also butchered including one Indian) or in some cases females in India are involved in killing Muslim females and family members for cow butchering.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *